আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

লালমনিরহাটে দাম নেই বেগুনে, শঙ্কিত চাষি

রবিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৮, দুপুর ০৩:২৮

 নিয়াজ আহমেদ সিপন, লালমনিরনহাট: হাড়ভাঙ্গা কষ্টে উৎপাদিত কৃষকের ক্ষেতে কমে গেছে বেগুনের গুণ। ফলে লাভের খাতা শুন্যের আশংকায় চিন্তায় হাসি নেই লালমনিরহাটের সবজি চাষিদের মুখে। টানা খরার কবলে প্রকৃতিতে বৃষ্টির অভাবে ফলনও হয়েছে গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক কম। খরচ উঠলেও লাভবান হওয়ার কোন পথই খুঁজে পাচ্ছে না বেগুন চাষিরা। বিগত বছরে বন্যার কারনে অন্যান্য সবজি নষ্ট হওয়ায় সারা দেশে সবজি হিসেবে ব্যাপক কদর ছিল বেগুনের। লাভে লাল হয়েছিল এ অঞ্চলের বেগুন চাষিরা। কিন্তু এ বছর বন্যা না থাকায় অন্যান্য সবজিতে বাজার এখন ভরপুর থাকায় চাহিদা কমেছে বেগুনের। ফলে মুনাফাও কম পাচ্ছেন বেগুন চাষিরা। চাষিরা জানান, বন্যাকালিন সময়ে মানুষের সবজির চাহিদা পুরনে জুলাই-আগষ্ট মাসে আষাঢ়ি বেগুন রোপন করেন লালমনিরহাটের উচু এলাকার সবজি চাষিরা। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে বেগুন বাজারে উঠতে শুরু করে। কিন্তু এ বছর বন্যা না হওয়ায় অন্যান্য সবজিতে বাজার ভরে থাকায় বেগুনের চাহিদা অনেকটাই কম। তাই দামও কম। গত বছর অক্টোবর মাসে প্রতিমণ বেগুন বিক্রি হয়েছিল দেড় হাজার টাকা দামে। এ বছর বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ শত টাকা মণ দরে। দিন যতই যাবে অন্যান্য শীতকালিন সবজি এলে আরো কমে যাবে বেগুনের গুণ। ফলে উৎপাদন খরচ নিয়ে দুঃচিন্তায় বেগুন চাষিরা। জেলার সবজি চাষ খ্যাত আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের আব্দুর নুর মাষ্টার গত বছর তিন দোন (২৭ শতাংশে এক দোন) জমিতে বেগুন চাষ করে দেড়/দুই লাখ টাকা আয় করেছেন। এ বছরও ওই জমিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করেছেন। এ বছর বৃষ্টি না থাকায় সেচ খরচ ও কীটনাশক খরচ বেড়ে গেলেও উৎপাদন কম হয়েছে। কমে গেছে বেগুনের বাজার মুল্য। গত বছর প্রতিমণ বেগুন দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হলেও এ বছর বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ শত টাকা দরে। চারদিন পরপর তুলে বেগুন পাচ্ছেন ১৫/১৬ মণ। যার শ্রমিক ও কীটনাশক খরচ যায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। একবার বেগুন তুললে পরদিন দুই হাজার টাকায় কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। একদিন বেগুন তুলতে শ্রমিক খরচ পড়ছে দেড় হাজার টাকা। সব মিলে উৎপাদন খরচ নিয়ে চিন্তিত চাষি আব্দুর নুর। ওই গ্রামের ইদ্রীস মিয়া ৫৪ শতিংশ জমি থেকে লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। তাই এ বছরও ওই জমিতে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করেছেন। এখনও সপ্তাহে প্রায় দুই দিন স্প্রে করছেন আড়াই হাজার টাকা খরচে। আর প্রতি সপ্তাহে দুই কিস্তিতে বেগুন পাচ্ছেন মাত্র ২০ মণ। যার বাজার মুল্য প্রায় ৮ হাজার টাকা। খরচ উঠলেও লাভের খাতা শুন্য হওয়ার আশংকা তার। তিনি বলেন, গত বছর দাম ভাল থাকায় ভালই মুনাফা হয়েছে। এ বছর দাম নেই। তাছাড়া দিন যত যাবে শীতকালিন সবজিতে ভরবে বাজার তখন বেগুনের গুণ আরো কমে যাবে। তাই খরচ তোলে নিয়ে শ্বংসয় তার। শুধু আদিতমারীর কমলাবাড়ি নয়, সারপুকুর, ভেলাবাড়ি, দুর্গাপুর, সাপ্টিবাড়ি, সদর উপজেলার বড়বাড়ি, হারাটি, মহেন্দ্রনগর, মোগলহাট, হাতীবান্ধার ভেলাগুড়ি, গোতামারী, সিংগিমারী, কালীগঞ্জের চন্দ্রপুর, চলবলা প্রভুতি এলাকায় ব্যাপক হারে চাষ হয় বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের সবজি। এসব চাষিদের উৎপাদিত বেগুন প্রতিদিন ট্রাক ভরে চলে ঢাকা, চট্রোগ্রাম ও কুমিল্লাসহ সারা দেশে। এ সময় মৌসুমি সবজি ব্যবসায়ীদেরও আয়ের পথ খুলে যায়। তারা সারা দিন চাষিদের সবজি ক্ষেত থেকে কিনে ট্রাকে ভরে সারা দেশের বড় বড় পাইকারী বাজারে পাঠায়। বছরে ৯ মাস চলে তাদের সবজি ব্যবসা। আদিতমারী উপজেলার মৌসুমী সবজি ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন, নুর হোসেন ও সাইদুর রহমান জানান, তারা চাষিদের সবজি ক্ষেত থেকে কিনে ট্রাকে ভরে পাঠিয়ে দেন দেশের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা পরদিন সকালে এসব টাটকা সবজি বিক্রি করে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন তাদের পন্যের ন্যাজ্ব মুল্য। সবজি চাষকে কেন্দ্র করে এসব অঞ্চলে সারা বছর থাকে কৃষি শ্রমিকের কদর। দৈনিক আড়াই থেকে তিন শত টাকা মজুরীতে শ্রম বিক্রি করেন এ অঞ্চলের শ্রমিকরা। তবে নারী শ্রমিকরা বৈষম্যে শিকার হচ্ছেন। তারা পুরুষদের সমান পরিশ্রম করলেও পারিশ্রমিক মিলে অর্ধেকের কিছু বেশি। শ্রমিক সাইদুল, রমিচা ও জলিল জানান, সবজি চাষের ফলে তাদের শ্রম বিক্রিতে কোন সমস্যা হয় না। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক বিদু ভুষন রায় জানান, সারা দেশে সবজির ব্যাপক চাষাবাদ হওয়ায় বাজারে বেগুনের চাহিদা কিছুটা কমে গেছে। কিছুদিন পরে শীতকালিন নানান সবজিতে বাজার ভরে উঠবে। তখন বেগুনের চাহিদা আরো কমে যেতে পারে। তবে লোকসান নয়, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর মুনাফা কিছুটা কম হবে বেগুন চাষিদের।

মন্তব্য করুন


 

Link copied