আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

কালীগঞ্জে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে সড়কের কাজ: ঠিকাদারকে থামাতে পারছে না এলজিইডি

সোমবার, ২২ অক্টোবর ২০১৮, বিকাল ০৬:৪৬

নিয়াজ আহমেদ সিপন, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শ্রীখাতা(সোনামারি)-খোদরপাড়া সড়কটি পাককরণে নিম্নমানের ও ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া ব্যবহার করায় এলজিইডির পক্ষ থেকে সেগুলো অপসারণ করে মানসম্পন্ন ইটের খোয়া ব্যবহারের জন্য দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ভাবেই তা মানছেন না সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এমনকি ১৫ অক্টোবর একাধিক গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সরেজমিন পরিদর্শনেও অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিলেন লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী। এতেও শেষ নয়, ব্যবহৃত খোয়ার নমুনা পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমেও প্রমাণিত হয় নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ। ফলে সেসব সরিয়ে সিডিউল অনুযায়ী মানসম্পন্ন খোয়া ব্যবহারের জন্য তাগাদা দেওয়া হলেও কর্ণপাত করেননি ঠিকাদার। উল্টো এতকিছুর পরেও তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ ব্যবহৃত খোয়া সমান করতে রোলালের পর তিনি এখন সেখানে পানি ছিটাচ্ছেন ইটের ‘রং’ ফিরিয়ে আনতে। অপরদিকে কাজটি তদারকিতে প্রকৌশলীর বদলে এলজিইডির একজন সার্ভেয়ারকে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যার কোনো ডিপ্লোমা ডিগ্রী নেই। আইনুল হক নামের ওই সার্ভেয়ারের সাথেই মূলত যোগসাজশ করে ইচ্ছেমতো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সূত্র মতে, প্রকাশিত খবরের পরপরই সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে লালমনিরহাটে সদ্য যোগদানকারী নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আমিরুজ্জামান অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। ফলে সে ঘটনা উল্লেখসহ চতুর্থ দফায় কালীগঞ্জের উপজেলা প্রকৌশলী গত মঙ্গলবার আরোও একটি চিঠি ঠিকাদার আব্দুল হাকিমকে পাঠিয়েছেন। সূত্র মতে, চিঠিতে একই বিষয়ে তিনটি চিঠি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয় ‘‘সড়কের কাজ বাস্তবায়নকালীন সময়ে সরেজমিন পরিদর্শনে ‘সবিস্তার বিবরণী’ বর্হিভূত নিম্নমানের ইটের খোয়া অপসারণে লিখিতভাবে বলা সত্বেও তা অপসারণ না করে আপনি কাজ চলমান রেখেছেন। গত ১৫ অক্টোবর নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি পরিলক্ষিত হন এবং তিনি মানসম্পন্ন সামগ্রী মজুদসহ অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করার কথা বলা সত্বেও তা উপেক্ষা করে আপনি কাজ চলমান রেখেছেন’। এদিকে অভিযোগ ওঠার পর গত ১৭ অক্টোবর লালমনিরহাট এলজিইডির ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান আব্দুর রাজ্জাক নির্মানাধীন সড়কটি থেকে ডাবিøউবিএমে ব্যবহৃত খোয়ার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষাতেও নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা মিলেছে বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরেজমিন পরিদর্শনের পরেও ডাবিøউবিএমে ব্যবহার করা খোয়া সমতল করতে রোলার দিয়ে সমান করা হয়েছে। আর এরপর থেকে প্রতিদিনই নিম্নমানের খোয়ার রং ফিরিয়ে আনতে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। এলজিইডি সূত্র মতে, যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ তদারকিতে এলজিইডির অন্তত একজন উপসহকারী প্রকৌশলী সংযুক্ত করার কথা। কিন্তু ওই সড়কের জন্য কালীগঞ্জ থেকে সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়া উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান সংযুক্ত করেছেন সেখানে কর্মরত সার্ভেয়ার আইনুল হককে। জানা গেছে, কোনো সার্ভেয়ার তদারকির দায়িত্ব তখনই পাবেন যখন তিনি ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারী হবেন। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার কোনো ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট নেই। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের জ্যেষ্ঠ্য সহকারী প্রকৌশলী মাসুদার রহমান ঠিকাদারকে একাধিক চিঠি দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিঠিগুলোতে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণের কথা বলেছেন। তা মানা না হলে বিল বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’। এ বিষয়ে কথা বলতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আব্দুল হাকিমকে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য ‘গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২’ এর আওতায় সড়কটি নির্মাণে কার্যাদেশ পায় জেলার আদিতমারীর ঠিকাদার আব্দল হাকিম। তবে আব্দুল হাকিমের লাইসেন্সে কাজটি কালীগঞ্জের ইটভাটা ব্যবসায়ী আতাউর রহমাম ওরফে মাঝি করছেন বলে জানা গেছে। আতাউরের কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করেছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। মূলত তার ভাটার গত বছরের ব্যবহার অযোগ্য অবিকৃত ইটের খোয়া-রাবিশ দিয়ে তিনি কাজটি করেছেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied