আব্দুল করিম সরকার, পীরগঞ্জ রংপুর থেকে: জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে নারীবান্ধব আইন ও নীতি প্রণয়নের ফলে নারী উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে রোল মডেল। তিনি বলেন, দেশের অর্ধেক জনসমষ্টি নারী। এই জনশক্তিকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে পারলেই উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজ সহজ হবে। এসময় তিনি জনগণের সমর্থন নিয়ে দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি শনিবার দুপুরে পীরগঞ্জ মহিলা কারিগরী ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ আয়োজিত মা ও অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ পীরগঞ্জের ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আজ বৈদ্যুতিক আলোয় লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। সমাজের অনগ্রসর অংশের জন্য শিক্ষাউপবৃত্তি, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, ল্যাকটেটিংমাদার সহায়তা, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মানীভাতাসহ অন্যান্যভাতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানো হয়েছে। সমাজিক বিভিন্ন ইস্যুতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে মা ও অভিভাবক সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, সুখী-সুন্দর পরিবার গঠনে মায়ের ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। স্পীকার বলেন, সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় মানসম্মত সমন্বিত স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, সন্তান প্রসব ও প্রসূতি সেবা এবং পুষ্টি সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে প্রায় ১৩৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছেন এবং সেখানে ডাক্তারসহ প্রশিক্ষিত জনবল ও ৩২ প্রকারের ঔষুধ বিনামূল্যে প্রয়োজন অনুযায়ী সরবারহের ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিতে দূরবর্তী স্থানে যেতে হতো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের ফলে নারী ও শিশুদের সেবা গ্রহণ সহজ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে এসেছে আমূল পরিবর্তনÍকমেছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার প্রতিরোধ হয়েছে বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধি। স্পীকার বলেন,এখনই সময় নারী প্রশিক্ষণ ও নারী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নের বিস্তার করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসনিার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশে উন্নীত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে, ২০২৪ সালের মধ্যে পরিপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গঠনে সকলকে ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এ উন্নয়নের সুফল পৌছে দিতে হবে বাংলার ঘরে ঘর। তবেই আসবে অর্থনৈতিক মুক্তি, প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পীরগঞ্জ মহিলা কারিগরী ও বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ এর পরিচালনা পরিষদের পরিচালক সাদিদ জাহান সৈকত। পরে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন েেচৗধুরী বড় ঘোলা জামে মসজিদ পরিদর্শণ করেন এবং পথসভায় অংশ নেন। এসকল অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের যুগ্ম সচিব জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল, সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মাদ মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ছায়াদাত হোসেন বকুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম পিন্টু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোনায়েম সরকার মানু ও পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুল হক রাঙ্গা, পৌর মেয়র এস এম তাজিমুল ইসলাম শামীম, বক্তব্য রাখেন। এদিকে ওই দিন সকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, ৩রা নভেম্বর শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। তিনি বলেন, ইতিহাসের এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, স্তম্ভিত হয়েছিল সমগ্র বিশ্ব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এই চার নেতার অক্লান্ত পরিশ্রম,৩০ লক্ষ বীর শহীদের আত্মত্যাগ ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।এসময় তিনি এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সকলকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান। পরে স্পীকার ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসে শহীদ চার নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এসময় স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।