ডেস্ক: কনকনে ঠাণ্ডায় নাকাল রংপুরের নিম্ন আয়ের মানুষ। বিপাকে দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর সময় দগ্ধ হয়ে হতাহত হচ্ছেন অনেকেই। আগুন পোহাতে গিয়ে রংপুরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত তিন দিনে তিনজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহতরা হলেন- লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার রাজিয়া বেগম (২৭), একই জেলার আদিতমারীর মোমেনা বেগম (৩২), দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর স্বপ্না রানী (৩৪)। আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ১১ জন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। হাসপাতালের ৬, ১৬ ও ১৮নং ওর্য়াডে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
রংপুর অঞ্চলে গত এক সপ্তাহ তাপমাত্রা ৭ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে বাতাসের বেগ শীতের তীব্রতাকে বৃদ্ধি করেছে কয়েকগুণ।
শুক্রবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ঘুরে দেখা গেছে, বেড সংকুলান না হওয়ায় সার্জিকাল ওয়ার্ডের বারান্দায় রাখা হয়েছে রোগীদের। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার অগ্নিদগ্ধ লাবণ্য বেগম জানান, ‘তীব্র শীতে উপশম পেতে ধানের খড় দিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতা বশতঃ শরীরে আগুন লেগে যায়। পুড়ে যায় কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত। একই অভিজ্ঞতা জানালেন অনেকেই।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহকারী অধ্যাপক ডা. মরুফুল ইসলাম জানান, ‘শীতের কবল থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহানোর সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে গত বছর ১২ জন মারা যান। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছেন। ওয়ার্ডে মোট বেড সংখ্যা ২৬টি থাকায় অধিকাংশ রোগীদের অনেকটা বাধ্য হয়ে ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে।’