কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে মারপিটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার পূত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের নতুন স্টেশন এলাকা থেকে এজারহারভূক্ত জাহেদুল ইসলাম সবুজকে গ্রেফতার করে। পরে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে তুললে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মোঃ জাফর আলীর কনিষ্ঠ পুত্র। তার গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় জেলা জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জনশ্রæতি রয়েছে চেয়ারম্যান পূত্রদ্বয়ের অপতৎপরতায় কুড়িগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগের সুনাম নানা ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পূত্র জাহেদুল ইসলাম সবুজ কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জুলফিকার আলীকে দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে অনৈতিক আবেদনসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল। তার দাবী পুরনে ব্যর্থ অতিষ্ঠ ওই প্রকৌশলী বাধ্য হয়ে বিষয়টি সুরাহার জন্য সবুজের পরিবারকে জানান। এতে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে সদর উপজেলার ত্রিমোহনী এলাকায় অবস্থিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান কার্যালয়ে যায়। এসময় তৃতীয় তলায় অবস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে সে মেজেতে লুটিয়ে পড়ে এবং মারাত্মক আহত হন। অফিসের কর্মচারীরা তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষনিক কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর ঐদিনই ঘটনাটি লিখিতভাবে সমিতির জেনারেল ম্যানেজার স্বদেশ কুমার ঘোষকে জানান এবং তার নিরাপত্তা না থাকায় কুড়িগ্রাম ছেড়ে চলে যান।
নির্বাহী প্রকৌশলীর এই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে সমিতি এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্দেশক্রমে সহকারি জেনারেল ম্যানেজার (প্রশাসন) মোঃ তাহমিদুর রহমান বাদি হয়ে চেয়ারম্যান পূত্রসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১০/১৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহফুজার রহমান জানান, এজাহারটি গত বুধবার মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া এজাহারের এক নম্বর আসামী সবুজকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।
