আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

সৈয়দপুরে গবাধীপশুর খামারের মালিক দম্পতিকে হত্যা॥ আটক ৬

রবিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০১৯, রাত ০৮:০৬

বিশেষ প্রতিনিধি ২৭ জানুয়ারি॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরের গ্রামে লিজ নিয়ে গড়ে তোলা একটি গবাধীপশু পালনের খামারের মালিক স্বামী-স্ত্রী দম্পক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে একদল দূর্বৃত্ত। গতকাল শনিবার(২৬ জানুয়ারী) গভীর রাতে উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া নামক গ্রামে এই জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে। আজ রবিবার(২৭ জানুয়ারী) বেলা ১১টায় জোড়া খুনের শিকার স্বামী স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো: শেখ নজরুল ইসলাম (৬৫) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগম (৫৫)। এ ঘটনায় জমির মালিক সহ সন্দেহভাজন ৬ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। এই দম্পক্তিকে খুনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃস্টি করেছে। খবর পেয়ে আজ রবিবার সকালেই ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জয়নুল বারী, নীলফামারী জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম গোলাম কিবরিয়া, সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পালসহ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ ব্যুরো তদন্ত বিভাগসহ (পিবিআই) প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন এটি খুবই নৃশংস ঘটনা। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার জানান আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি তদন্ত করছি। আশা করছি দ্রুত খুনের রহস্য উম্মুচিত করতে পারবো। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের সোনাপুকুর চাকলা গ্রামের মৃত. রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো: শেখ নজরুল ইসলাম। তিনি পানি উন্নয়ন বোডের কর্মচারী পদে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন। তিনি সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া দারুল উলুম মোড় সংলগ্ন সবুজ সংঘ মাঠ এলাকায় দুই স্ত্রী সহ ৬ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এ সময় নিহত সালমার বেগমের ছেলে শেখ স্বপন আহমেদ (২২) জানায় চারদিন আগে বাবা ও মা ওই খামারে গিয়ে বসবাস করতো। ঘটনার দিন রবিবার সকালে আমার মায়ের মোবাইল থেকে এক ব্যাক্তি আমাকে কল করে জানায় আমার বাবা মা খুন হয়েছে। খবর পেয়ে আমি ও আমার অপর ভাই বোনরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তিনি আরো অভিযোগ করে জানায়, প্রায় দুই বছর আগে সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়ার এলাকায় আসলাম চৌধুরীর নিকট হতে দুই একর জমি ৫ বছরের মেয়াদে লিজ নেন বাবা নজরুল ইসলাম। সেখানে গড়ে তোলে গরু ও ভেড়া পালনের খামার। এ জন্য সেখানে নিযুক্ত করেন জেলার ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে আব্দুল রাজ্জাক(৪০) নামের একজন কেয়ার টেকার। প্রতিদিন তিনি সকালে ওই খামারে গিয়ে দেখা শোনা করে রাতে বাড়ি ফিরে আসতেন। তিনি জানায় সম্প্রতি ওই খামারের জায়গাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য জমির মালিক হাজী আসলাম চৌধুরী ও তার ছেলেরা ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিল। এমনকি হুমকীও দেয়। কিন্তু চ্যুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়ায় এবং খামারের ভবিষ্যত নিয়ে বাবা এই মূহুর্তে লিজকৃত জমি ছেড়ে দেয়া সম্ভব হবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন। এনিয়ে জমির মালিকের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। খামার রক্ষার কারনে বাবা গত চারদিন ধরে আমার মা বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগম সহ ওই খামারে সঙ্গে উঠানো একটি টিনের ঘরে বসবাস শুরু করেন। এ অবস্থায় বাবা মা খুন হলো। শেখ স্বপন বলেন আহত কেয়ার টেয়ারকে বাঁচানো জরুরী। সে বাঁচলে আমার বাবা মার হত্যাকারীকে সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব হবে। ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী জানান এলাকাবাসীর কাছে তিনি খবর পেয়ে পুলিশকে জানিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খামারের কেয়ার টেকার জীবিত দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার হাসপাতালে নেয়। তার অবস্থা গুরুত্ব হওয়ায় তাকে দ্রুত স্থানান্তরিত করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন কেয়ার টেকার তাকে বার বার বলেছে আমাকে বাঁচান। আমি বাঁচলে কারা ঘটনা ঘটিয়েছে আমি সব বলে দিতে পারবো। ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানায় শনিবার রাত ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা এসে এই খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এদিকে পুলিশ জানায় স্বামী স্ত্রীর জোড়া খুনের প্রাথমিক সুরতহালে দেখা যায়, নজরুলের পায়ের রগ, গলা, নাক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী সালমা বেগমের গলা কাটা রয়েছে। অপর দিকে গুরুত্ব আহত খামারের কেয়ার টেকার আব্দুল রাজ্জাককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাক কান গলা বিভাগের ওয়াডে ভর্তি করা হয়েছে। ওই বিভাগের সহকারী রেজিষ্টাড ডাঃ সমির কুমার রায় জানান রোগীর অবস্থা আশংঙ্কাজনক। তার গলার শ্বাসনালী সহ কান নাক ধারালো অস্ত্রে ক্ষত বিক্ষত। ইতো মধ্যে আমরা তার বেশ কিছু অস্ত্রপচার করে নিরির পরিচযায়রেখেছি। ৪৮ ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত এর বেশী কিছু বলা যাবেনা। সৈয়দপুর থানার ওসি শাহজাহান পাশা জানান স্বামী স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলার মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খামারের জমির মালিক হাজী আসলাম, তার দুই ছেলে লেবু ও সজল এবং ওই এলাকার আব্দুর রশিদ,আব্দুল আজিজ ও কাজের মেয়ে রহিমাকে আটক করে সৈয়দপুর থানায় আনা হয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied