বিশেষ প্রতিনিধি ১৮ ফেব্রুয়ারি॥ নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি সরকারি কলেজটি। অধ্যক্ষ সহ শিক্ষক ও কর্মচারী সংকট প্রকট। প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কার্যক্রমও থমকে গেছে। বিশেষ করে অধ্যক্ষ না থাকায় চার মাস ধরে বেতন তুলতে পারছেন না প্রদর্শকসহ অন্যান্য কর্মচারীরা।
সরকারিভাবে কলেজটির ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বহুতল বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন সহ সীমানা প্রাচীর, আবাসিক হল রয়েছে। সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে কলেজে।
চিলাহাটি সরকারি কলেজটি ডোমার উপজেলা হতে ১৮ কিলোমিটার উত্তরে ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নে চিলাহাটি বন্দরে। চিলাহাটি সীমান্ত বর্তী এলাকা। এখান হতে ঢাকা,রাজশাহী,খুলনা সহ বিভিন্ন স্থানে সরাসরি রেল ও সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। চলছে দুরপাল্লার কোচ ও আন্তঃনগর বিলাশবহুল ট্রেন। এ ছাড়া ভারতের হলদিবাড়ির সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্থাপনের নির্মানের কাজও চলছে।
কলেজ সুত্র জানায় গেল বছরের (২০১৮সালের) ৩ অক্টোবর পর্যন্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন ইদ্রিস মিয়া। তিনি এখান থেকে বদলী হয়ে যান দিনাজপুর সরকারী মহিলা কলেজে। তার স্থলে চিলাহাটি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয় মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর সরকারী কলেজের অধ্যাপক রঞ্জিত কুমার সরকারকে। তিনি আজ সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) বিকাল পর্যন্ত যোগদান করেননি প্রতিষ্ঠানটিতে। কলেজের প্রধান অফিস সহকারী হাফিজুর রহমান বলেন, প্রদর্শকসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ১৪জন কর্মচারীর বেতন বন্ধ রয়েছে অক্টোবর থেকে।
কলেজ সুত্র জানায়, ২৫জন শিক্ষকের স্থলে রয়েছেন ১১জন শিক্ষক আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ২৪জনের স্থলে রয়েছেন ১২জন। এছাড়া একজনও নেই পরিচ্ছন্নতা কর্মী।
অধ্যক্ষ না থাকায় একাডেমিক ভবন স্থাপন প্রক্রিয়া থমকে যাওয়া এবং বতর্মান ভবন মেরামত বাবদ দশ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলেও সেটিও অনিশ্চয়তা পড়েছে। সময়মত এগুলো করতে না পারলে ফেরত যাবে অর্থ।
জানা যায়,বেতন ভাতা উত্তোলনের জন্য অধ্যক্ষের স্বাক্ষর প্রয়োজন কিন্তু অধ্যক্ষ না থাকায় গেল ৪ মাস ধরে আর্থিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে না পারায় শিক্ষা উপকরণ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। যার প্রভাব পড়ছে পাঠদান প্রক্রিয়ায়।
এলাকার অনেকে অভিযোগ করেন একদিকে অধ্যক্ষ নেই অন্যদিকে শিক্ষক সংকট। ফলে কিমতো ক্লাশও হয়না কলেজে। যারা আছেন দারাও যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেনা।
কলেজ নিয়ে অনেক অনেক অভিযোগ রয়েছে। বিগত সময় বিভিন্ন ফান্ডের টাকাও লোপাট করা হয়। কিন্তু তদন্ত হয়না। পার পেয়ে যায় আতœসাৎকারীরা।
চিলাহাটি প্রেসক্লাবের সাধারণ স¤পাদক আশরাফুল হক কাজল জানান, নীলফামারী জেলার সীমান্তবর্তি এলাকায় কলেজটি অবস্থিত। দুর দুরান্ত এখানে কেউ এখানে বদলি হয়ে আসলে থাকতে চান না।জেলার মধ্যে অনেকে অধ্যাপক হিসেবে রয়েছেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে এখানে পদায়ন করা হোক।তাহলে পড়াশোনার মানোন্নয়নসহ উন্নয়ন হবে প্রতিষ্ঠানটির। এখানে শিক্ষক সংক দুর করে স্মাতক(সম্মান) কোর্স চালু করা প্রয়োজন। এই এলাকার অনেক শিক্ষার্থী নীলফামারীতে গিয়ে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে।
কলেজের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা প্রভাষক আখতারুজ্জামান বলেন, আমি ৩৪তম বিসিএসএ যোগদান করেছি শিক্ষক হিসেবে।একটি প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য অনেক অভিজ্ঞতা স¤পন্ন মানুষ প্রয়োজন। আমার সেগুলো কিছুই নেই। অধ্যক্ষ না থাকলে কত যে সমস্যা তা ভেতরে না ঢুকলে কেউ বুঝতে পারেন না।
অতিদ্রুত স্থায়ী অধ্যক্ষ হিসেবে একজনকে পদায়ন করা দরকার। যিনি এই এলাকার হবেন এবং এদিকে থেকেই প্রতিষ্ঠানকে সময় দেবেন।চিলাহাটি কলেজটি এখন একজন সহযোগী অধ্যাপককে দিয়েও চালানো যায়। মন্ত্রনালয়ে কাছে এরকমও বলা হয়েছে।