ডেস্ক: অজ্ঞাত রোগে ২০ দিনের ব্যবধানে ঠাকুরগাঁওয়ে একই পরিবারের পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের একজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের রোগের কারণ জানা যায়নি। এছাড়া জীবিত সন্দেহাভাজন রোগীর রক্তে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
রোববার (৩ মার্চ) ররোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত রোগে ঠাকুরগাঁওয়ে একই পরিবারের পাঁচ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনার রোগের কারণ অনুসন্ধানে আইইডিসিআর থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের একটি আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশন টিম পাঠানো হয়। পরবর্তীতে আরও চার সদস্যের আরেকটি টিম ওই টিমের সঙ্গে যোগদান করেন।
তদন্ত টিম ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তথ্য উপাত্ত ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করে।
রোগের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত ব্যক্তিদের সকলের জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি ও মস্তিষ্কে ইনফেকশনের (এনসেফালাইটিস) উপসর্গ ছিল। এদের মধ্য থেকে একজনের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। এ নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। অন্যান্য সকল জীবিত সন্দেহাভাজন রোগীর রক্তে নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নিপাহ ভাইরাস সাধারণত বাদুর সংক্রমিত খেঁজুরের কাঁচা রস পান করার মাধ্যমে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়ায়। আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশনে প্রথম মৃত ব্যক্তির নমুনা থেকে খেঁজুরের কাঁচা রস পান করার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস না পাওয়া গেলেও অন্যান্য মৃত ব্যক্তিদের প্রথম মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিল বলে আইইডিসিআর ধারণা করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আইইডিসিআর’র দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সর্বসাধারণকে খেঁজুরের কাঁচা রস পানে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (মাস্ক ও গ্লাভস) পরিধান করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবা করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর হাত সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এ রকম রোগের ক্ষেত্রে রোগীদের সম্পূর্ণ পৃথক স্থানে রাখা ও পৃথক স্থানে সেবা প্রদান করতে হবে। রোগীর মৃত্যু হলে তার দাফন-কাফনেও সতর্কতা অলম্বন করতে হবে।