আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ মার্চ ২০২৪ ● ৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরের আলু যাচ্ছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে       গ্রাহকের ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও পোস্টমাস্টার!       চার ঘণ্টা পর উত্তরবঙ্গের সাথে ঢাকার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক       ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন       রংপুরে মিস্টি ও সেমাই কারখানায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা      

 width=
 

জঙ্গি ব্রেন্টনের ইশতেহারে কী আছে?

শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০১৯, রাত ১১:১৩

ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় দুই মসজিদে অস্ট্রেলীয় জঙ্গি ব্রেন্টন ট্যারান্টের হামলায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ৪৯ জন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন বাংলাদেশিও রয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শুরু হওয়ার কিছু পরেই কালো কাপড় ও হেলমেট পরা এক বন্দুকধারী আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে শুরু করে। তারপর জানা যায়, শহরের আরো একটি মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিন পুরুষ ও এক নারীকে আটক করেছে নিউজিল্যান্ড পুলিশ। এর মধ্যে অনলাইনে সরাসরি হামলার ভিডিওচিত্র সম্প্রচারকারী এক বন্দুকধারীর নাম ব্রেন্টন ট্যারান্ট। তার মাথায় ক্যামেরা লাগানো ছিল। ব্রেন্টন জন্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সে দেশটির উত্তরাঞ্চলের গ্রাফটন শহরের বাসিন্দা। হামলার আগে অনলাইনে পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার এক ইশতেহারে সে হামলার কারণ বর্ণনা করেছে। সেখানে ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূ-খণ্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘আমাদের ভূখণ্ড আমাদের, যতক্ষণ পর্যন্ত একজন শ্বেতাঙ্গও বেঁচে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা আমাদের ভূমি জয় করতে পারবে না, এবং আমাদের হটাতে পারবে না; লিখেন ব্রেন্টন। এরপরেই পয়েন্ট আকারে হামলার বেশ কতগুলো কারণ উল্লেখ করা হয়। সেগুলো হলো- ১. ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ইউরোপীয় ভূ-খণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের ফলে হাজার হাজার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে। ২. অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের ফলে লক্ষ লক্ষ ইউরোপবাসীর কাজ হারানোর প্রতিশোধ নিতে। ৩. ইউরোপীয় ভূ-খণ্ডে সন্ত্রাসী হামলায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে। ৪. এবা আকেরলান্ডের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে। (২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল উজবেক এক জঙ্গির হামলায় সুইডেনের স্টকহোম শহরে লড়ি চাপায় পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিল এবা আকেরলান্ড নামে এক শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়ে। স্কুল থেকে ফেরার পথে মায়ের সঙ্গেই লড়ির নিচে চাপা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়) ৫. ভয় দেখিয়ে ও সশরীরে হটিয়ে দিয়ে ইউরোপীয় ভূ-খণ্ডে অনুপ্রবেশকারীদের অভিবাসন হার কমাতে ৬. শত্রুপক্ষকে উত্তেজিত করে প্রত্যক্ষ লড়াইয়ে নামানো, যাতে করে তারা অনিবার্য নেতিবাচক পরিণতির মুখোমুখি হয়। ৭. ভূমি দখলকারী অনুপ্রবেশকারী আর ইউরোপবাসীর মধ্যে সহিংসতা, প্রতিশোধস্পৃহা আর বিভাজনকে জাগিয়ে তুলতে। ৮. আমার মানুষকে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে। যারা এ কাজ করতে চায় তাদের চলার পথ আলোকিত করতে। তাদের জন্য যারা পূর্ব-পুরুষের ভূখণ্ডকে অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে চায়। আর তাদের জন্য বাতিঘর হতে যারা একটা স্থিতিশীল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখতে চায়, তাদের জানাতে যে, তারা একা নয়। ৯. আতঙ্ক আর পরিবর্তনের একটা পরিবেশ তৈরি করতে, যাতে বিধংসী, বিপ্লবী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। ১০. ইতিহাসের গতিতে বিশেষ আন্দোলন তৈরির মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করতে; নাস্তিবাদী, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী, ভোগবাদী, উন্মাদ চিন্তা যার দখল নিয়েছে। ১১. তুরস্ক বাদে ন্যাটোভুক্ত অন্য দেশগুলোর মাধ্যমে সম্মিলিত ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গঠন করে তুরস্ককে আরো একবার বিদেশি শত্রুপক্ষ হিসেবে তার সত্যিকারের অবস্থান ফিরিয়ে দেওয়া। এ ছাড়া ৭৩ পৃষ্ঠার ওই ইশতেহারে আরো নানামুখী আদর্শ ও কারণের কথা উল্লেখ করা হয়। এ হামলা ও ইশতেহারের সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘ব্ল্যাক সান’ জড়িত বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রেন্টন টারান্ট কুখ্যাত ব্ল্যাক সানের সদস্য। তার প্রকাশিত ইশতেহারে ব্ল্যাক সানের লোগোও দেখা যায়। এ ঘটনার পর ‘ব্ল্যাক সান’ নিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈচৈ শুরু হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ব্ল্যাক সান সংগঠনটিকে নব্য নাৎসিবাদীদের সংগঠন হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে। এই সংগঠন কবে কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা জানা যায় না।

মন্তব্য করুন


 

Link copied