আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

তৃণমুল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ঢেলে সাজাতে মন্ত্রী, এমপিরা জেলা, উপজেলায় পদ পাবেন না?

বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০১৯, রাত ০৯:৪০

বিশেষ প্রতিনিধি॥ চলতি বছরের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে এবার সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলটির কাউন্সিল দ্রুত শুরু করা হবে। এবার মন্ত্রী,এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানরা আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটিতে থাকতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এরকম সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এতে এক নতুন আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে বলে অনেকে মনে করছে। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন জেলার মতো নীলফামারী জেলা ও ছয় উপজেলায় কাউন্সিল ঘিরে এখনি তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের সংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা বিএম মোজাম্মেল হকের নিকট পাঠানো এক তথ্যে আজ বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) জানা যায়, নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৬ সালের ১৫ জুলাই। যা অনুমতি পায় ২০১২ সালের পহেলা জানুয়ারী। অপর দিকে জেলা সদর উপজেলার সর্বশেষ সম্মেলন হয়, ২০০৬ সালের ১৫ মে, নীলফামারী পৌর শাখার সম্মেলন হয় ২০০৬ সালের ১৯ মে, জলঢাকা উপজেলায় ২০০৪ সালের ২৩ নবেম্বর,কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর,ডিমলা উপজেলায় ২০১৩ সালের ৭ জুলাই, ডোমার উপজেলায় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই ও সৈয়দপুর উপজেলায় ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারী। এর মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলা, কিশোরীগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি, ডিমলা উপজেলার সাধারন সম্পাদক মৃত্যুবরন করেন। সেখানে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গুলো নামমাত্র চলছে। একাধিক সুত্র বলছে গত সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দল সহ দলের কার্যক্রম অনেককাংশে ঝিমিয়ে পড়েছে। রাজনৈতিভাবে অনেক কর্মসুচি পালন করা না হলেও কোন কোন নেতাদের জন্মদিন আনন্দ উৎসবে পালন করা হয়। যা সামাজিক যোগাযোগের মাধমে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে তৃণমুলের মানুষজন ভাল ভাবে গ্রহন করছেনা। দীর্ঘদিন ধরে নীলফামারীর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন না হওয়ায় গুটি কয়েক নেতার হাতে জিম্মি হয়ে থাকছে দলের কার্যক্রম। তাই সব কিছু কে নতুনভাবে তৈরী করার প্রয়াস নিচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ নিয়ে সারা দেশে জরিপ করা হয়। মন্ত্রী, এমপিরা জেলা, উপজেলায় পদ পাবেন নাঃ-এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটিতে থাকতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এরকম সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এরকম একটি প্রস্তাবনা আগামীকাল শুক্রবারের(৫ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একটি সূত্র ধারনা করছে। সুত্র মতে চলতি বছরের আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কাউন্সিলের আগে, ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম বৈঠকে। ঐ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাস থেকেই স্থানীয় পর্যায়ের সম্মেলন করার কথা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, দলের সভাপতি স্থানীয় পর্যায়ে এমপিদের একজন কর্তৃত্বের অবসান চান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা মনে করেন সাংসদ, ইউনিয়ন উপজেলা এবং জেলা কমিটিতে কর্তৃত্ব করছেন। ফলে ঐ জেলায় তার নিজস্ব বলয় তৈরী হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানরা মিলে মিশে দল করছেন, ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দলের নিবেদিত, আদর্শবান কর্মীরা ভালো জায়গা পাচ্ছে না। সকলের মতামত আওয়ামী লীগ সভাপতি, দল এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আলাদা করতে হবে। একজন এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যানের অনেক সরকারী এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব থাকে। এসব দায়িত্ব পালন করে তার পক্ষে, দলকে সময় দেয়া কঠিন হয়ে যায়। দল চালায় তার অনুগতরা। দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পরে। এরকম অবস্থার অবসান করে আওয়ামী লীগকে তৃণমুল পর্যায়ে রাজনীতি ভাবে চাঙ্গা করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সূত্র মতে, একজন এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান অথবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ঠিক মতো কাজ করছেন কিনা, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন কিনা তা দেখভাল করবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তাছাড়া, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ব্যস্ত থাকার কারণে দলে সময় দিতে পারেন না, ফলে সংগঠন দূর্বল হয়ে পরে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদককে রিপোর্টে দেখা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ অনেকাংশেই মন্ত্রী, এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নির্ভর হয়ে গেছে। এর ফলে দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দলে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটছে না। আগামীকাল শুক্রবার দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সাংগঠনিক স¤পাদককে রিপোর্ট গুলো পর্যালোচনা করা হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবার দলকে শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগী। বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দলের ভেতর মনোমালিন্য বেড়েছে। কোন্দল, গ্রুপিংও তৈরী হয়েছে। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কাউন্সিল দলকে নতুন রূপে সাজাবে। আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা মনে করছেন, অক্টোবরের আওয়ামী কাউন্সিলের আগেই দলের বিভেদ এবং অনৈক্য কেটে যাবে। এক নতুন আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied