আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা      

 width=
 

বোরকা নয়, সত্য ন্যায়ে স্বপ্ন আঁকি...

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০১৯, দুপুর ০৪:১৯

জুঁই জেসমিন বেশি ভাগ পরিবারে দেখা যায়, ঘরে নানা, দাদা বা মা বাবা নামাজ পড়লে ঘরের শিশুটিও পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় টুপি বা কাপড় দিয়ে সেজদা দেয়, নামাজ পড়ে। ক্রমশ এভাবেই নিজ নিজ ধর্ম নিজ নিজ পরিবার থেকেই সম্পূর্ণ ধারণা হয়ে যায়। এলাকায় এলাকায় ওয়াজ মাহফিল, ঘরে ঘরে তালিম এসব করার প্রশ্নেই যুক্তিতেই আসে না। কারণ এখন নিরক্ষর মুক্ত সমাজ, প্রযুক্তির নাগর দোলায় জানা অজানার বিশ্বটা এখন হাতের মুঠোই। এখন বলতে পারেন হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর কথা - তিনি ঘরে ঘরে ইসলাম প্রচার করেছেন। অতএব ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা মানে, নবী রাসূলকে অবমাননা করা। হ্যাঁ একদম ঠিক। ভেবে দেখুন তো তখন কি যুগ ছিলো, ক' জন মানুষ অক্ষর জ্ঞান ছিলো? ক'জন জানতো দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কথা , রোজা বা যাকাতের কথা? ধর্ম কী তারা সেটাই জানতো না, মূর্তিপূজা, বৃক্ষ পূজা, দেব-দেবীর পূজা এসবে ছিলো বিশ্বস্ত। তাই প্রিয় নবী দিনেদিনে ধর্ম প্রচার করেন। এখন আপনারাই বলুন- নবীজী ইসলাম প্রচার করেছেন সত্য শান্তি ন্যায়ের ভাষণ দিয়েছেন এতে কি কারো কাছে পয়সা কড়ি বা চাঁদা নিয়েছেন ? নেননি। এখন ঘরে ঘরে চাঁদা তোলা হচ্ছে অমুক বিশিষ্ট মাওলানা ও অমুক বিশিষ্ট সমাজ সেবকের নাম বলে। এই ওয়াজ মাহফিল যে ভাবে মানুষকে পর্দায় মোড়ে নিচ্ছে কালো ঝুলিতে বন্দি করছে গতিশীল শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির তুমুল নিন্দা করে, পাপের ভয় দেখিয়ে, এতে কি হচ্ছে সৃজনশীল সৃষ্টির জগত ধ্বংস হচ্ছে! সক্রিয়তা হারাচ্ছে ছন্দময় এক একটি জীবন। যাহোক একটু ভিন্ন প্রসংগে- দু একটা ঘটে যাওয়া ঘটনা তুলে না ধরলে আমরা কেউই স্পষ্ট হবো না । গেল বছরের ঘটনা, হরিণমারি বাবু বস্তিতে দু'জন হুজুর আসেন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা দানের জন্য। খুব সহজেই নাকি অল্প দিনে তিরিশ পারা কোরআন শিখতে পারবে বয়স্ক থেকে সবাই, এলাকার মহিলা পুরুষ অনেকেই হাজার পনেরশো টাকা দিয়ে ভর্তি হয় কোরাআন পাঠের প্রত্যাশায়। দশ দিন যেতে না যেতেই হুজুরেরা টাকা নিয়ে উধাও। এরকম ঘটনা অসংখ্য গ্রামেই ঘটেছে। এবার তালিমের কথা বলি, তালিমের এক ঝাঁক বোরকা পরা মহিলা ডাঙ্গী পাড়াই এক ধনী পরিবারে ঢুকে বাসার সবাইকে ঘুমের ওষুধ তবারকে মিশিয়ে খাইয়ে দেয়, তারপর টাকা পয়সা সোনা দানা দামী টুকিটাকি সব নিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের হাতে মোজা, পায়ে মোজা, মুখ পুরো ঢাকা - এখন আপনারাই বলুন, তাদের চেনার উপায় বা চেহেরার বিবরণ দেওয়ার উপায় ? কোনো উপায় নেই! ঠিকানাটাও ভুয়া। এই বোরকা হচ্ছে যতসব খারাপ কাজের হাতিয়ার। প্রাইমারী বা -বি, সি, এস পরীক্ষা দিতে গেলে বোরকার ভেতরে কানে হেড ফোন, মোট কথা চোরাকারবার থেকে অসৎ সব উদ্দেশ্যেই বোরকার ব্যবহার। সব হুজুর এমন বা সব বোরকা পরা নারী এমন আমি কিন্তু তা বলছি না। তবে চার ভাগের মধ্যে তিন ভাগেই যে এমন, কোনো সন্দেহ নেই! আচ্ছা বলুন তো সেলোয়ার কামিজ ওড়না , শাড়ী এসব পোষাকের মাঝে অশ্লীলতা কোথায়? বাঙালী নারীর সৌন্দর্য বা প্রকৃত অলংকারই হলো শাড়ী। আর সেই শাড়ীটাকেই বর্জন করতে চলেছি, বোরকা নামে ফ্যাশন পোষাক গায়ে জড়িয়ে। ক'জনের বউ শাড়ী পরে বলুন তো-? ঘরে ঘরে এখন সুন্নতি পোষাক, যেন প্রিন্টের লাউ এক একটা নারী । যাহোক বোরকা পরা খারাপ না তবে তা কতটা ভাল আপনারাই ভেবে দেখুন। -যত সব নষ্টামি ভণ্ডামি শয়তানির কারখানা বোরকার ভেতরে। আজ পর্যন্ত যত রমণী ধর্ষিত হয়েছে তার মধ্যে বেশির ভাগই কিন্তু পর্দানশীন ছিলো। আপনার ঘরে এই মুহূর্তে যদি দু চারজন মুখোসধারী বা বোরকা পরা মানুষ ঢুকে লুটপাট করে নিয়ে যায়, আপনি পুলিশকে কি বলবেন ? তার বিবরণ কিছুই দিতে পারবেন না। কালো বা প্রিন্টের পাহাড়ি লাউ বলা ছাড়া। আজ বোরকা হিজাব নেকাব নিষিদ্ধ করা হোক দেখবেন সমাজ কতটা শান্তির ঢেকুর ফেলে, ঠিক যতটা চান। ছবি আঁকা পাপ,গান গাওয়া পাপ, নৃত্য,নাটক করা পাপ,,,,, এসব মাহফিলে চিৎকার করে শ্রেষ্ঠ জীব নর নারীর প্রতিভা গলা টিপে মেরে ফেলছে মৌলবাদরা - কেন করে এমন? একটা ঘটনার রূপ- নাটকে বা কবিতায় প্রকাশ করলে কোথায় পাপ দেখতে পায় উনারা আমরা বুঝিনা-! সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন নিজেকে আবিষ্কার করার জন্য, আবাদ ও এবাদতের জন্য। হাত পা গুটিয়ে বড় জুব্বা আর বোরকা পরে শুধু ইয়া নফসি ইয়া নফসি করার জন্য নয়। হাত পা মাথা দিয়েছে বুদ্ধি খাটিয়ে সৎ কর্ম করে খাওয়ার জন্য। কোরআন হাদিস ধর্মকে নিয়ে ব্যবসা করার জন্য নয়। সব ওয়াজ মাহফিলে শুধু নারীদের নিয়ে যত আলোচনা সমালোচনা, পোষাক, চলাফেরা নিয়ে। আপনারাই বলুন ইসলাম ধর্ম নিয়ে যে আমরা গর্ব করি,বড় ধর্ম বলে, ক'জনের ঘরে নামাজ কক্ষ আছে? যে ঘরে খাওয়াদাওয়া হাঁটাচলা সহবাস -সেই ঘরে নামাজ আদায় - এতে কতটুকু নিজ ধর্মকে সম্মান দিই? বাড়ি করার সময় রান্নাঘর, ওয়াসরুম, ড্রইং রুম ডাইনিং প্লেস সব মনোমত হচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল রাখি, প্রার্থনার রুমের যে বিশেষ প্রয়োজন তা ভাবি কী? আমাদের কথা বাদেই দিলাম যারা ওয়াজ মাহফিল করে তাদের বাড়িতে ক'জনার নামাজ কক্ষ আছে? অথচ এক গরীব হিন্দুর ঘরে কিছু না থাকলেও ঠাকুরঘর কিন্তু ঠিক আছে-! তারা বোরকা পরেনা আর পাড়ায় পাড়ায় মাহফিলও করেনা। তারা গোসল করেই পবিত্রতায় ঠাকুর ঘরে উলু দেয় পূজা করে। আর আমরা যেই কাপড় পরে টয়লেট থেকে বের হই সেই কাপড় পরেই নামাজ আদায় করি। কজন হুজুর বা নামাজি ড্রেস বদল করে নামাজ আদায় করেন? অনেকের কাছে শুনেছি পাদু করলে নাকি অযু নষ্ট হয়,পুনরায় অযু করতে হয়। দুর্গন্ধ বাতাস বের হয় পাছা দিয়ে, নাকি চোখ মুখ কান দিয়ে? প্রশ্ন রইল। পাছা না ধুয়ে অযু করে পবিত্রভাব দেখায় - আসলে পবিত্রতা কী , পাপ কী ? আমরা জানিইনা, তা না হলে এক ড্রেস পরা অবস্থায় দিনের পর দিন যেকোনো স্থানে নামাজ আদায় করতাম না। আজ শুধু পুঁথিঘর না, কসমেটিক্স দোকান থেকে ফুটপাতেও আল-কোরআন বিক্রি করে পাক পবিত্র ছাড়াই খেয়াল খুশিমত! জানিনা হুজুরদের এসবে চোখ পড়ে কি না, ভাবে কী- না। হুজুরেরা কী ওয়াজ করে, পর্দানশীন হও মা বোনেরা, এই চিৎকার ছাড়া-কি করেন তারা? পর্দা জড়িয়ে যে এতো অঘটন তা ভুলেও প্রকাশ করেন না। যা হোক সামনে নববর্ষ চোখ রাখুন চারপাশে কত বোরকা পরা মেয়ে গাছ তলা আর বাঁশ তলা বা উদ্দান বা পার্কে ইটিসপিটিস পুরুষের সাথে। আর যাদের আঁটসাঁট পোষাক নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যাথা। আর যাদের আঁটসাঁট পোষাক নিয়ে আপনাদের মাথা ব্যথা তাদের দেখেন কোনো এক অনুষ্ঠানে -"এসো হে বৈশাখ গান গাচ্ছে বা গানের তালে নাচছে, শিল্প সাহিত্যের মাঝে ডুবে থাকা পাপ না। বরং সত্যিকার মানুষের পরিচয়, মানুষেই সম্ভাবনাময়, শিল্প সাহিত্য,সংস্কৃতি, সৃষ্টি,- পৃথিবীর আলোকময় পরিবর্তন,সুষমা। আসুন বোরকা থেকে বিরত থাকি, সত্য ন্যায়ে স্বপ্ন আঁকি নিজেকে বিকাশ করি।

জুঁই জেসমিন, কবি ও লেখক

মন্তব্য করুন


 

Link copied