আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

যেভাবে নগ্নতা, চুম্বনদৃশ্যের শ্যুটিং

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৩, বিকাল ০৫:৪৩

নগ্নদৃশ্য শ্যুটিং-এর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হয়, সব কিছুর পরেও যেন দৃশ্যটি শৈল্পিক হয়৷ রুচিসম্মত হয়। অথচ যেন অবাস্তব না লাগে। শুধু নগ্ন দৃশ্য কেন, ধরা যাক একটা দৃশ্য, যেখানে নায়িকা পোশাক পাল্টানোর জন্য শাড়ি ছাড়ছে, আর হঠাত্‍ ঘরে কেউ ঢুকে এসে অপ্রস্তুত হয়ে যাবে। এই শাড়ি ছাড়ার মধ্যে থাকে একটা চাপা উত্তেজনা অথচ মিনিস্কার্ট বা হটপ্যান্ট পরে অবলীলায় নায়িকা যখন নাচের দৃশ্য করেন, তখন তেমন রাখঢাক ব্যাপারটা থাকে না। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘দহন’ ছবিতে দু’টি রোমাঞ্চক আর এক অর্থে কিছুটা নিষিদ্ধ এবং শক্ত দৃশ্য ছিল৷ একটা ছিল ইন্দ্রানী ও সঞ্জীব দাশগুপ্তর চুম্বন দৃশ্য, অন্যটি ঋতুপর্ণা ও অভিষেকের ‘রেপ ইন ম্যারেজ’ দৃশ্য৷ প্রথমটির জন্য সিনেম্যাটোগ্রাফার হরি নায়ার তৈরি করে ছিলেন আলো আঁধারি পরিবেশ। তা-ও অধিকাংশ কলাকুশলীকে ঋতুপর্ণ বাইরে বার করে দিয়েছিল৷ আমি, হরি আর ওঁর ফোকাস পুলার, রানা ও ঋতুপর্ণ ছিলাম এই দৃশ্য শ্যুটিং-এর সময়। বজবজের একটি বাড়িতে হয়েছিল এটি। এই দৃশ্য নিয়ে অনেক গুঞ্জন, গুজগুজ ফুসফুস হয়েছিল। এমনকী তা প্রযোজকের কানেও যায়। তিনি চিত্রনাট্য পড়ার সময় এই দৃশ্যের কথা অতটা বুঝতে পারেননি, কিন্ত্ত চুম্বনদৃশ্যের কথা পরে শুনে বেশ প্রসন্নই হয়েছিলেন। এর পর কলকাতায় মনোহর পুকুর রোডের এক বাড়িতে ওই ‘রেপ ইন ম্যারেজ’ সিন-এর শ্যুটিং-এর আয়োজন হয়। এই দৃশ্যে ঋতুপর্ণার জন্য আনা হয় নাইট ড্রেস। ফুরফুরে হালকা নাইট ড্রেস-এর তলায় অন্তর্বাস পরলে সেটা বাস্তব সম্মত হবে কি, হবে না, তা নিয়েও চলে আলোচনা গবেষণা। অবশেষে সব ঠিকঠাক৷ ঋতুপর্ণা ও অভিষেক মানসিক ভাবে প্রস্তুত। মাত্র ক’জন থাকবে ঘরটিতে। হরি, ঋতুপর্ণ, আমি (মেয়ে বলে) আর একজন সহকারি। এমনকী ফোকাস পুলারেরও জায়গা নেই, হরি নিজেই ফোকাস করবে। এমন সময় শ্যুটিং দেখতে চলে এলেন প্রযোজক মহাশয়। আমরা সবাই টেনসড। এমন একটি স্পর্শকাতর দৃশ্যর শ্যুটিং হবে, যেখানে কলাকুশলীরাই ঢুকতে পারছে না, সেখানে প্রযোজক ঢুকবেন কী করে! কী হবে… উনি তো তেমন আসেনও না শ্যুটিং-এ। আজ এলেন… অথচ ওঁকে অশ্রদ্ধা করাও যায় না। ঋতুপর্ণ কিন্ত্ত এ ব্যাপারে একেবারে খুব দৃঢ় মনস্ক ছিল। ওর কাছে ওর ছবির চেয়ে বড় কিছু ছিল না। আর ছবি ঠিক করে শ্যুট করতে হলে অভিনেতা-অভিনেত্রীর কমফর্ট লেভেল বা সোয়াস্তি দেখাটা পরিচালকের কাজ। তাই খুব সহজেই ঋতুপর্ণ নিজে গিয়ে প্রযোজককে বলল, ‘আজ তো আমি আর আমার গুটি কয়েক ক্রু সদস্য ছাড়া আর কেউ শ্যুটিং-এ থাকতে পারবে না, তাই আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি অন্য কোনও দিন আসুন। কিংবা যদি খুব দেখতে ইচ্ছে করে দৃশ্যটি, তা হলে এডিটিং-এর সময় চলে আসুন৷’ ঋতুপর্ণর কাছে সিনেমা তৈরিটাই ছিল মূল, তার জন্য কাউকে স্পষ্ট কথা বলতে ছাড়ত না। এমনকী প্রযোজককেও না। sexপরবর্তী সময়ে আমি ও অভিজিত্‍ যখন ‘তিন ইয়ারি কথা’ ছবিটা তৈরি করি, তখন ঋতুপর্ণর ওই অ্যাটিটিউড-এর স্মৃতিটা খুব কাজে লেগেছিল। বিশেষত জুন ও শাশ্বতর সজ্জা দৃশ্যের ক্ষেত্রে৷ যখন রুদ্র ও নীল (সুজন) ফুটো দিয়ে দেখার চেষ্টা করে। এই দৃশ্যটার শ্যুটিং করার সময় আমি ও আমাদের চিত্রগ্রাহক দেবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলাম ফ্লোরে, অন্যরা পিছনে। রানা মানে অভিজিত্‍ মনিটর-এ। সাধারণত আমাদের কাজের ক্ষেত্রে রানাই অগ্রণী ভূমিকা নেয় ফ্লোরে। কিন্তু এক্ষেত্রে ও ছিল মনিটার-এ। অভিনেতাদ্বয়ের সুবিধার্থে। যেহেতু দৃশ্যটায় ওরা ফুটো দিয়ে দেখছিল, তাই ক্যামেরার সামনে একটা মাস্কিং অর্থাত্‍ কার্ডবোর্ড ফুটো করে লাগানো হয়। ফলে স্ক্রিনে দৃশ্য দেখার এফেক্টটা ফুটোর ভিতর দিয়ে মনে হতে থাকে। এরই মধ্যে আমরা বলতে থাকি, ‘হ্যাঁ পিঠের দিকে মুখটা দে’, ইয়েস, এবার আঁচলটা…।’ বাকিটা না হয় উহ্যই থাক। অভিনেতাদের কতটা দর হওয়া প্রয়োজন ভাবুন তো! পুরো সিকোয়েন্সটা করতে হবে ক্যামেরার সামনে, শুনতে হবে পরিচালকের ইনস্ট্রাকশন, পুরো ব্যাপারটা হতে হবে পরিশীলিত, অথচ বাস্তবসম্মত… নাহ্, সহজ নয়, মোটেই সহজ নয়। এই সূত্রে মনে পড়ে যাচ্ছে, আমাদের একটি টেলিফিল্ম-এর কথা। তাতে অভিনয় করেছিল পল্লবী। খুবই বোল্ড একটি চরিত্র৷ একটি মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে ভাগ্যের ফেরে এক বস্তিতে এসে পড়ে। সেখানে এক গুন্ডার বিষনজরে পড়ে যায় সে। এক দুপুরে এই গুন্ডা তাকে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়। এই ধর্ষণের দৃশ্য শ্যুটিং-এ বেশ বেগ পাচ্ছিলাম আমি, অভিজিত্‍ আর শান্তিলাল। শান্তি হয়েছিল সেই গুন্ডা। চলছে জল্পনাকল্পনা, কী ভাবে দৃশ্যটি ঠিক করে শ্যুট করা যায়। কোথায় হাত দেবে, কী ভাবে মাটিতে শোয়াবে ইত্যাদি ইত্যাদি… হঠাত্‍ পল্লবী বলল, ‘ছাড়ো তো তোমাদের এত আলোচনা। এই শান্তি, আয় কোমরে হাত দে, অন্য হাতটা দিয়ে জড়িয়ে ধর, মুখটা আমার মুখের কাছে আন, একটু প্রেসার দে, আমি নীচে নেমে যাব তুইও নামার…’ পুরো ঘটনাটা কী সরল, সাবলীল ভাবে করে ফেলল, পল্লবী ও শান্তি৷ পল্লবীর  ইনস্ট্রাকশন শুনে সব জড়তা গেলে কেটে। তবে আজও এ ধরনের দৃশ্য শ্যুট করতে একটা উত্তেজনা, একটা চাপ, একটা অন্য অনুভূতি কাজ করে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied