আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

ওরা জানেনা মে দিবস কি॥ এদিনেও কাজ করতে হয়

বুধবার, ১ মে ২০১৯, বিকাল ০৬:৫৫

বিশেষ প্রতিনিধি॥ দেশের অষ্টম ব্যবসা বানিজ্য শহর হিসাবে পরিচিত নীলফামারীর সৈয়দপুর। এখানে ঘরে ঘরে মিনি কারখানা। সেসব কারখানার ঠকঠক, টুং টাং শব্দ কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই শব্দ। ট্রাঙ্ক, বালতি, মোমবাতি, আগরবাতি, শোকেস, ফাইল কেবিনেট, সাবান, গুল, জর্দা, প্লাষ্টিকের কৌটা, বাইসাইকেল, রিক্সা, ভটভটি তৈরী করছে তারা। সবই হয় এখানে। খাদ্য তালিকায় বিস্কুট, চানাচুর, চকলেট,চিপস, পাঁপর তৈরি হচ্ছে। রেডিমেড ফার্নিচার, ফাউন্ড্রি কারখানাও রয়েছে। বেনারসী শাড়ি তৈরি, পোশাকে কারচুপি, চুমকি ও পাথর বসানোর কাজ চলে। আছে তৈরি পোষাকের ছোট ছোট কারখানাও। লেদ মেশিনে এমন সব ডাইস তৈরি হচ্ছে যা দেশের অন্য স্থানে করা সম্ভব নয়। এখানকার উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান অন্যান্য স্থানের চেয়ে অনেক ভাল বলে সুনাম রয়েছে। এ কারণে সৈয়দপুরকে অনেকে চীনের সাংহাই বা ধুলাবাড়ির সঙ্গে তুলনা করেন। সৈয়দপুরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে রয়েছে এসব কারখানা। এতে দিনে-রাতে কাজ করছেন হাজার হাজার শ্রমিক। এদের সাথে রয়েছে আবার ১০ হাজার শিশু শ্রমিক! এখানে তৈরি ট্রাঙ্ক উন্নতমানের হওয়ায় সেনাবাহিনীর জোয়ানরা শান্তি মিশনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় বিদেশের মাটিতে নিয়ে যাচ্ছেন বলেও দাবি এর কারিগরদের। সৈয়দপুর শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভাল। বেকার যুবক যুবতীরা খারাপ কোন কাজে না থেকে সকলে এসব কাজে দিনরাত পরিশ্রম করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে হয়েছে স্বাবলম্বী। কিন্তু এসব শ্রমিকরা জানেনা, মে দিবসও কাজ করে। কারন একটাই কাজ না করলে মজুরী মেলেনা। বসে থাকলে আয় হবেনা। আজ পহেলা মে বুধবার দুপুরে কথা বলা হলে এই শ্রমিকরা জানায়, মে দিবসের মিছিল, রং খেলা, আলোচনা অনুষ্ঠান বা গানের অনুষ্ঠানের চেয়ে কাজ করে মজুরী বুজিয়ে নেয়া ঢের ভাল। বালতি ফ্যাক্টরিতে কাজ করে আসিফ। তার বাড়ি উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে। পিতা ইটভাঁটিতে কাজ করেন। আসিফকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। বিনিময়ে তাকে প্রতিদিন তিনবেলা খাবার এবং সপ্তাহে মজুরি দেয়া হয় এক হাজার টাকা। এই বালতি ফ্যাক্টরির পাশের একটি বাক্স তৈরি কারখানায় কাজ করে গুড্ডু। সারাদিন কাজ করে তিনবেলা খাওয়ার পর তাকে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি দেয়া হয়। সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে বাজারের বিভিন্ন হোটেলে কাজ করে মজিদ, হাবিব, জয়নাল, কাশেম ও মিঠু। এদের গড় বয়স ১৫ থেকে ১৮ বছর। এরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে মজুরি পায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এদের মধ্যে কারও বাবা, আবার কারও মা নেই। ফলে বাঁচার অবলম্বন হিসেবে এই শিশুরাই হাল ধরেছে সংসারের। এই শহরের নিয়াতমপুরে হালকা প্রকৌশল শিল্পে কাজ করে আরমান। ভোর থেকে রাত অবধি সে লোহা লক্করের কাজ করে। অথচ কাজ শেষে তার মজুরি মেলে মাত্র ৩০০ টাকা। একটি গুল ফ্যাক্টরীতে কাজ করে ওয়াসিম। সকালে মায়ের সঙ্গে সে গুল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে আসে। এখানে সে ডিব্বায় গুল ভরা ও লেবেল লাগানোর কাজ করে। কাজ শেষে তার মায়ের হাতে ৩৫০ টাকা দেয়া হয়। এ কাজে গুলের গুঁড়া নাকে চোখে লেগে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কষ্ট হলেও সহ্য করেই তাকে কাজ করতে হয়। তামাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা জানে না তাদের ভবিষ্যৎ কী? প্রতিদিন যে তারা একটু একটু করে মৃত্যুর মুখে ধাবিত হচ্ছে তাদের ন্যূনতম ধারণা। একই অবস্থা অন্য গুল ফ্যাক্টরিগুলোতেও। সৈয়দপুর শহরে ছোট-বড় মিলে ৫০টির বেশি গুল ফ্যাক্টরি রয়েছে। তবে বড় গুল ফ্যাক্টরি রয়েছে ৫টি। এগুলো হলো- তারেক, খালেদ, শাকিব, ওয়ান স্টার ও নিউ স্টার গুল ফ্যাক্টরি। কিন্তু শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে মালিকদের নেই কোনো চিন্তা-ভাবনা বা পরিকল্পনা। অল্প আয়ের মানুষ বসবাস করে এমন আবাসিক এলাকায় গুল ফ্যাক্টরিগুলো গড়ে তোলা হয়েছে।বেসরকারী জরিপে জানা যায়, সৈয়দপুরে বিভিন্ন মিল, শিল্প, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে জড়িত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১০ হাজার। তবে অভাব-অনটনে এর সংখ্যা প্রতিবছর ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, বহু নারী-পুরুষ ও শিশু শ্রমিক চুক্তিভিত্তিতে বা দৈনিক হাজিরায় কাজ করছে। ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিও একটি বড় অগ্রগতি। ঝুট কাপড়ে তৈরি পোষাকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব পোশাক এখন যাচ্ছে ভারত, নেপাল ও ভুটানে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied