রাবি প্রতিনিধি : সংবর্ধনা দেওয়ার নামে ব্যক্তিগত পরিচয় নিয়ে কোচিংয়ের প্রসপেক্টাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে ইউসিসি কোচিং সেন্টার। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১৯ জন শিক্ষার্থী এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা ঢালী বলেন, ‘এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউসিসি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনা দেয়ার নামে রাবিতে চান্সপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তথা আমাদের কাছ থেকে ছবি ও বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য যেমন মোবাইল নাম্বার, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রাপ্ত জিপিত্রসহ ফরম পূরণ করিয়ে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘উক্ত ফরমের তথ্য ব্যবহার করে ইউসিসি ২০১৯ সালে তাদের রাজশাহী শাখা থেকে প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে আমাদের ইউসিসি কোচিংয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা কেউই কখনো ইউসিসিতে কোচিং করিনি। ইউসিসি কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে যেভাবে তাদের শিক্ষার্থী হিসেবে উল্লেখ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও প্রতারণা।’ সংবাদ সম্মেলন থেকে ইউসিসি কর্তৃপক্ষের এহেন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষার্থীরা বলেন, ইউসিসি শুধু আমাদের সাথেই নয়, ভবিষ্যতে যারা ভর্তি কোচিং করবে তাদের সাথেও প্রতারণা করছে। কোচিং সেন্টারগুলোর এ ধরণের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয় সেদিকে সজাগ থাকার আহবান জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করেন, শুধু আইন বিভাগের নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও ছবি ব্যবহার করেছে ইউসিসি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইউসিসি কোচিং সেন্টার থেকে আগামী ১১ মে সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে এক ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছে।
ক্ষুদে বার্তা পাঠানো নাম্বারে (০১৭৯৮৬১২৬৩৪) যোগাযোগ করা হলে ওই নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আইন বিভাগের লামিয়া তাসনিম তিতলী, সানজিদা ঢালী, রেহনুমা রাবাব এষা, মার্রুফ মোর্শেদ, তাবাসুম তন্বী, আছিয়া খাতুন, হুমায়ুন কবির, সাজেদুল হক, খালিদ সাইফুল্লাহ, হোমায়রা জান্নাত স্মরণী, আলপনা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে ইউসিসি রাজশাহী শাখার পরিচালক দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, প্রসপেস্টাসে যেসব ছবি দেওয়া আছে সব শিক্ষার্থী তাদের কোচিংয়ের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেন তিনি।
সংবর্ধনা দেওয়ার নামে শিক্ষার্থীদের থেকে তথ্য নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সেটাও অস্বীকার করেন।
জানতে চাইলে ইউসিসির ঢাকা হেড অফিসের ম্যানেজার সেলিম বলেন, ‘কেউ যদি ইউসিসিতে কোচিং না করে তাহলে তাদের ছবি ছাপানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। রাজশাহী ব্রাঞ্চ এমনটা করেছে কিনা জানিনা। ওদের সাথে কথা বলে দেখবো। আর এসব বিষয়ে আপনার-আমার মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।’