আর্কাইভ  বুধবার ● ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ● ৪ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বুধবার ● ১৭ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: আজকের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর –রংপুরে স্পীকার       রংপুরে বৃষ্টি নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার       কুড়িগ্রামে অষ্টমীর স্নান করতে এসে মারা গেলেন পুরোহিত       বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ১১ জন নিহত       উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: রংপুরে ৩০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল       

 width=
 

মাদক দিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে ফাঁসাতে গিয়ে স্বামী নিজেই এখন আসামী

সোমবার, ৬ মে ২০১৯, রাত ০৮:১৫

স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী ৬ মে॥ দ্বিতীয় স্ত্রীকে মাদক দিয়ে ডিবি পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে পালিয়ে গেছে স্বামী। ফলে মাদক মামলার আসামী হতে হলো পাষন্ড স্বামীকেই। এ ঘটনায় আজ সোমবার (৬ মে) নীলফামারী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগে জানা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতরা মালিপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে জামিনুর রহমান জীবন (৩৫)। সে এলাকার আগুন খাওয়া নামের একটি সন্ত্রাসী দলের সদস্য ও চোরাই গরুর ব্যবসায়ী। তার গড ফাদারদের হাত ধরে সে তিনটি বিয়ে করে। প্রথম স্ত্রী শোভা বেগমের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে ডোমার উপজেলার মেলা পাঙ্গা গ্রামের আব্দুল কাদেরের মেয়ে সাবরিনা আক্তার রুমাকে। বিয়ের চার বছরের মাথায় দুটি সন্তান রয়েছে তাদের। হঠাৎ করে জামিনুর রহমান জীবন তৃতীয় বিয়ের জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী রুমার উপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে রুমা বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। এ অবস্থায় রুমার স্বামী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিন খড়িবাড়ী গ্রামের রশিদুল ইসলামের মেয়ে অষ্টম শ্রেনীর মাদ্রাসার ছাত্রী রোকসানা পারভীনের সঙ্গে। তাকে পালিয়ে নিয়ে এসে গত বছরের ২৫ অক্টোবর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে। স্বামীর নির্যাতন ও তৃতীয় বিয়ের ঘটনা নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা স্বামীর বিরুদ্ধে নীলফামারী আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলায় আদালত রুমার স্বামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। রুমা অভিযোগ করে জানায়, সে মামলা দায়েরের পর তার স্বামী জীবন আপোষ মিমাংসা করার জন্য তাকে মোবাইলে তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে (রুমা) ঘরে তুলবে বলে বার বার অনুরোধ জানিয়ে আসছিল। এ অবস্থায় স্বামীর ডাকে সারা দিয়ে ও স্বামীর কথামতো এক বছর বয়সের অসুস্থ সন্তান নিয়ে রুমা গতকাল রবিবার (৫ মে) সকাল ১১টায় নীলফামারী আসে। এ সময় তার স্বামী ও স্বামীর বন্ধু মারিফুল ইসলাম আদালত চত্বরের অদুরে রুমাকে নিয়ে একটি হোটেলে বসিয়ে নাস্তা খাওয়ায়। নাস্তা খাওয়ানোর ফাকে অসুস্থ সন্তানের জন্য ঔষধ কিনতে যায় রুমার স্বামী। ২০ মিনিট পর ফিরে এসে ঔষধের প্যাকেটটি রুমার ব্যাগে রেখে দিয়ে রুমাকে হোটেলে বসিয়ে রেখে মামলা মিমাংসার জন্য উকিল ডাকার নাম করে তারা হোটেল হতে বের হয়ে যায়। বেলা ১২টার দিকে ওই হোটেলে ডিবি পুলিশ এসে মাদক ব্যবসার অভিযোগে রুমাকে আটক করে। রুমার ব্যাগ তল্লাশী চালালে স্বামীর দেয়া ঔষধের প্যাকেট হতে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু ইয়াবা ট্যাবলেট। চারিদিকে পড়ে যায় হৈ-চৈ। রুমা ডিবি পুলিশের কাছ ঘটনা খুলে বললে ডিবি পুলিশ কৌশলে রুমাকে দিয়ে তার স্বামীর মোবাইলে কল করতে গিয়ে দেখে তা বন্ধ। এমনকি ডিবি পুলিশকে যে মোবাইল নম্বর দিয়ে রুমার কাছে মাদক আছে জানানো হয় সেটিও পুলিশ বন্ধ পায়। এরপর রুমার স্বামীকে ধরতে পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। এক পর্যায় রুমার স্বামী ভিন্ন নম্বর থেকে মোবাইল করে রুমাকে হুমকী দেয় আমার বিরুদ্ধে মামলা করার শাস্তি পাবি। এবার তুই মাদক মামলায় জেলে যাবি। এতে ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে। দিনভর পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে এর সত্যতা খুঁজে পায়। পরে আজ সোমবার সকালে রুমা নিজে বাদী হয়ে স্বামী ও স্বামীর বন্ধু মারিফুল ইসলামকে আসামী করে নীলফামারী সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬ (১) টেবিলের ১০ (ক)/ ৪১ ধারায় মামলা দায়ের করে। নীলফামারীর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন (পিপিএম) বলেন, জীবন তার দ্বিতীয় স্ত্রী রুমাকে মাদক দিয়ে কৌশলে ফাঁসানো চেষ্টা ঘটনাটি তদন্তে সত্যতা না পাওয়া যায়। এ জন্য স্ত্রীকে বাদী করে থানায় একটি মামলা থানায় দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেস্টা চলছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied