খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে পরিদর্শনে যান লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম। সেখানে গিয়ে দেখতে পায় এক যুবক একাই কোঁদাল দিয়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( এডিসি সার্বিক) রফিকুল ইসলাম কোদাঁল হাতে নিয়ে সেই ছেলেকে পানি বন্ধ করতে সহযোগীতা করেন।
স্থানীয়রা জানান, বিকেল ৪টার দিকে খবর পেয়েলালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি সার্বিক) রফিকুল ইসলাম দেখতে আসেন। পরে তিনি দেথে পান ওই এলাকার ছেলে একাই কোঁদাল হাতে নিয়ে রাস্তার উপড়ে পানি মাঠি দিয়ে বন্ধ করছে। সেখানে কেউ এগিয়ে আসছে না। এমন দৃশ্য দেখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম নিজেই কোঁদাল হাতে নিয়ে পানিতে নেমে পড়েছেন। পরে এলাকাবাসীরা এগিয়ে এসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলামকে পানি বন্ধ করতে সহযোগীতা করেন। পরে আবারও রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট জেলা প্রসাশক অাবু জাফরসহ সেখানে পরির্দশন করেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত চারদিনের ভারী বৃষ্টি। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নৌকা বা ভেলা ছাড়া চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। এতে বড় সমস্যায় পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। চার দিকে অথৈ পানির কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়ে অনেকটা বিপাকে চরাঞ্চলের খামারি ও চাষিরা।
জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ১০/১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা। চরাঞ্চলের পানিবন্দি খেটে খাওয়া মানুষগুলো শিশুখাদ্য ও নিরাপদ পানির সমস্যায় পড়েছেন।
সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে এ ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ খবর পেয়ে স্যার এসে দেখতে পায় রাস্তার উপড় দিয়ে পানি ভেসে যাচ্ছে। পরে তিনি কোঁদাল হাতে নেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, তিস্তায় সামান্য পানি বাড়লেই কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে তালিকা করে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি প্রবাহ রাত ৯ টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রন করতে ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।