খায়রুল ইসলাম গাইবান্ধা থেকেঃ গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানানো হয়েছে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৩৫ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৯১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ব্রহ্মপুত্রের রেকর্ড পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের ১নং, ৭ নং, ৮ নং এবং ৯ নং ওয়ার্ডে পানি ঢুকে পড়ায় চরম দূর্ভোগে মুখে পড়েছে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা। এলাকাগুলোতে এখন কোমর পর্যন্ত পানি। ফলে চলাচলের ক্ষেত্রের তারা সমস্যার মুখে পড়েছে। এদিকে চরাঞ্চলে প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ গত কয়েকদিন ধরে পানি বন্দি হয়ে দুঃসহ দিন কাটাচ্ছে। রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়া যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার নলক‚পসহ অন্যান্য পানির উৎস বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডাঃ আবু হানিফ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা বন্যা কবলিত এলাকাতে পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট দিচ্ছেন। এতে বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বন্যা উপদ্রুত এলাকার জানায়,ওই সব ট্যাবলেটের পরিমাণ খুবই কম। তারা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য জানান।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ২২৪টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬৬ জন লোক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৯ হাজার ২৩০টি।
এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ওই ৪ উপজেলায় জেলা ত্রাণ ভান্ডার থেকে ৪শ’ মে. টন চাল ও ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা উপদ্রত এলাকার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা বিতরণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নতুন করে আরও তিন লাক্ষ টাকা তিনশত টন চাউল বরাদ্দ পাওয়া গেছে এ নিয়ে ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১০লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৭শ ৫০ মে.টন চাল। তবে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনায় বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী খুবই কম বলে জানিয়েছেন জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মিহির ঘোষ। তিনি জানান, এবারের বন্যা অতীতের রেকর্ডের চেয়ে অনেক বেশী। ফলে কয়েকলক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে দুঃসহ দিন কাটাচেছ। সুতরাং সরকারি বরাদ্দ সে তুলনা খুবই সীমিত। তিনি বলেন পর্যাপ্ত রিলিফ সামগ্রী প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে পৌছানো দরকার। ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া গ্রামের বন্যাকবলিত মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান সবাই রিলিফ পাচ্ছে না। ফলে অনেকে খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে দিনমজুর যারা তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে কঠিন দিন কাটছে তাদের।