ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে এখনো পুরোপুরি পানি নেমে যায়নি। ফলে এসব এলাকার বন্যা দুর্গত বেশিরভাগ পরিবার ঘরে ফিরতে পারেনি। ঘর-বাড়ি ছাড়া মানুষজন পরিবার পরিজন ও তাদের গবাদি পশু নিয়ে পাকা সড়ক, উঁচু বাঁধ ও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
তবে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর অববাহিকার বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে যাওয়ায় বানভাসী মানুষজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু রাস্তা-ঘাট এখনো পানির নীচে তলিয়ে থাকায় যাতায়াতের দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর মানুষজন দীর্ঘদিন পানিবন্দি জীবন যাপন করায় এসব এলাকায় বন্যা দুর্গত মানুষজন খাদ্য সংকটে ভুগছেন। চারনভুমি তলিয়ে গো-খাদ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষেরা তাদের গবাদি পশুর খাদ্যের জোগানও দিতে পারছেন না। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া, চর্মসহ নানা পানি বাহিত আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন। সরকারী ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে তা বিপুল সংখ্যক বন্যা কবলিত মানুষের জন্য অপ্রতুল।
সদর উপজেলার পাঁছগাছী ইউনিয়নের মিলপাড়া গ্রামের মৃত আফজাল হোসেনের স্ত্রী জাহানুর বেওয়া জানান, চলতি বন্যায় বাড়ি-ঘরে পানি উঠায় রাস্তায় ১২ দিন পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন বাড়ি থেকে পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে ফিরে এসেছি। কিন্তু বাড়ির চারিদিকে পানি থাকায় যাতায়াত করতে পারছি না। শুনতেছি অনেক রিলিফ দিচ্ছে কিন্তু আমিও এখনও কিছুই পাইনি। মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাবো তার উপায়ও নাই। আমার বিধবা ভাতাও নাই।
পাঁছগাছী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বন্যা দুর্গত। আমি ১৭ মেট্রিক টন ত্রাণের চাল পেয়েছি যা ১০ কেজি করে ১ হাজার ৭শ পরিবারকে দিয়েছি। সবাইকে দেয়া সম্ভব হয়নি। ভিজিএফ’র চাল পেলে যারা পায়নি তাদের দেয়া হবে।
সরকারী ভাবে এ পর্যন্ত বন্যা দুর্গতদের জন্য ১ হাজার মেট্রিক টন জিআর চাল, ১০ হাজার ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শিশু ও গো-খাদ্যের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।