কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ৪৫ শতক জমিসহ পুরোবাড়ি বন্যার জলে ভেসে গেছে এরশাদুল হকের। বাড়ির জায়গাটিতে এখন সমুদ্রসম গর্ত। ওই জমিতে ছিলএকটি পাবলিক স্কুল, ভাড়াবাড়ি, এরশাদের পাকাবাড়ি, গোয়ালে একাধিক দুধালগাভী, হাঁস-মুরগি, ধানচালসহ একটি আদর্শ পরিবারের যাবতীয় সরঞ্জামাদি। তিলতিল করে গড়ে তোলা তার সাজানো সংসারমাত্র ৩ ঘণ্টায় গায়েব হয়ে যায়। এজন্য এরশাদ দায়ী করেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীকে। তারাকর্তিমারী বাজারের নয়ন জলিতে (প্রবাহমানপানির পথ) বিশাল মার্কেট স্থাপনের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এরশাদুলের বাড়ি রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী মাস্টারপাড়া গ্রামে। গত ১৫জুলাই রাত ৩টার দিকে হঠাৎ করেই পানির তোড়ে বাড়ির পাশের রাস্তা ভেঙে যায়।
তার গোটা পরিবার তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ঘর ভাঙার শব্দে জেগে ওঠেন সবাই। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। কোন রকমে জীবন নিয়ে ছুটে আসেন রাস্তায়। চোখের সামনে সাজানো সাধের বাড়িটি সবকিছু নিয়ে ভেসে যায় ছুটন্ত জলরাশিতে। করার কিছুই ছিল না তার। এরশাদুল হক জানান, কৃষিব্যাংক, পল্লীউন্নয়নব্যাংক, গ্রামীণব্যাংক, গণউন্নয়ন, ব্র্যাক ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা ঋণ নেয়া আছে তার। প্রতিমাসে স্কুল ও বাড়িভাড়া থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় হতো। এ টাকায় ঋণের কিস্তি দিতেন তিনি। এখন সব শেষ। কিস্তিবা দিবেন কিকরে, আর সংসারইবা চলবে কিসে। ছোট ছোট ৩ ছেলে মেয়েনিয়ে পথে বসেছেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এরশাদুল হক। তার সর্বস্ব জলে ভেসে গেছে।রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবদুল্লাহ জানান, বন্যায় পানিবন্দি মানুষ গুলোর মাঝে কিছুটা স্বস্তিফিরে এলেইএরশাদের বিষয়টি দেখাহবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর রায় বলেন, আমরা এরশাদের কথা জেনেছি। ঋণের বোঝা কমানো সহতার ক্ষতি কিছুটাপুষিয়ে নিতে যথাসাধ্য ব্যবস্থা নেবো।