আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

গরু চালানের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা

বৃহস্পতিবার, ৮ আগস্ট ২০১৯, বিকাল ০৭:৫৮

সীমান্তবর্তী ভূরুঙ্গামারী উপজেলার হাটে দেশীয় গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরুর বিচরণ চোখে পড়ার মতো। ঈদ ঘনিয়ে আসলেও এখন পর্যন্ত কোরবানীর জন্য পছন্দের গরু কিনতে আসছে না ক্রেতারা। দেশী এবং বাইরের পাইকারদের কারণে বেড়ে গেছে কোরবাণীর পশুর দাম। বেশির ভাগ খামারীদের কাছ থেকে গরু কিনে নিচ্ছে পাইকাররা। এছাড়াও হাটগুলোতে এক পাইকার থেকে আরেক পাইকারের কাছে হাতবদল হচ্ছে গরু। ফলে মূল্য হয়ে যাচ্ছে চড়া। অপরদিকে অনেকেই কোরবানীর পশু ক্রয় করলেও ক্রেতা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে অনেকটাই বাধ্যতামূলক কিংবা জোড়পূর্বক চালান আদায় করছে হাট ইজারাদাররা। একদিকে চড়া দাম অপরদিকে চালানের খরচ নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের। স্থানীয় গরু বিক্রেতাদের অভিযোগ ভারতীয় গরু এবং বন্যার কারণে বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। হাট গুলোতে প্রশাসনের নজরদারীর অভাবে স্থানীয় দালাল চক্রের উৎপাতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হরহামেশাই। ফলে এবারের গরু বিক্রি লোকসানের মুখে পড়ার আশংকায় দেশীয় খামারীরা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতা-বিক্রেতা মিলে গরু/মহিষ প্রতি ১৮০টাকা এবং ছাগল-ভেড়া ৮০ টাকা নেবার কথা থাকলেও এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না মনগড়া চালান ফি আদায় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল গুলো। খামারী ছামাদ ও তাইজুল জানান, প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকা খরচ করে হাটে গরু নিয়ে আসছি। গরুর পিছনে অনেক খরচ হয়েছে। ফলে দামও একটু বেশি হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় দাম হাঁকছে না। আমাদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। তবে ভারতীয় গরু না আসায় সন্তুষ্ট দেশীয় খামারিরা।

ভিতরবন্দ হাইস্কুল মাঠে গরু বিক্রেতা আমজাদ, কাশেম ব্যাপারী জানান, গরু বিক্রি করতে এসেছি। কিন্তু হাটে ঢুকেই গরুর খুঁটি বাঁধতে ১০০ টাকা এবং চালান দিতে হয়েছে ৩০০ টাকা। সরকারি ফি কত এটা আমাদের জানা নেই। কোনো চার্ট নেই তাই বলতেও পারিনা। ছাগল বিক্রেতা মফিজ উদ্দিন বলেন, আমি একটা ছাগল বিক্রি করেছি ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। এর চালান দিতে হয়েছে ২০০ টাকা।

ভিতরবন্দ হাটে কোরবানী পশু কিনতে আসা ক্রেতা আসাদুল, মজিবর, সালাম, আকবর অভিযোগ করে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে পশুর দাম কিছুটা বেশি। এছাড়াও হাটে প্রতি গরুর জন্য ৪০০ টাকা আর ছাগলের জন্য ২৫০/৩০০ টাকা করে চালান নিচ্ছে হাট ইজারাদাররা। এখানে প্রশাসনের নজরদারী তেমন না থাকায় সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

ভিতরবন্দ হাটে ইজারাদারের প্রতিনিধি রিপন জানান, পশু চালানের সরকারি ফি কত আমার জানা নেই। তবে এখানে হাজারে ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। যাত্রাপুর হাটে টাকা উত্তোলনকারী আব্দুর রহিম জানান, বন্যার প্রভাব গরুর হাটেও পড়েছে। এখানে ভারতীয় গরু না থাকলেও দেশীয় গরুর আমদানী অনেক বেশি। কিন্তু সে তুলনায় ক্রেতা কম। চালান বেশি নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন মানুষ খুশি হয়ে যা দেয় তাই নেয়া হচ্ছে।

জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা, ডা: আব্দুল হাই সরকার ভারতীয় গরু আসার কথা অস্বীকার করে বলেন, এবার জেলায় চাহিদার তুলনায় বেশী দেশী গরুর মজুদ আছে। এতে করে দেশীয় খামারীরা লাভবান হবেন। জেলায় এবার কোরবানীর জন্য দেড়লক্ষ দেশীয় গরু মজুদ আছে। গরু গুলোতে স্ট্রয়েট বা ক্ষতিকর কিছু ব্যবহার না হওয়ায় কোরবানীর উৎপাদিত মাংস স্বাস্থ্যকর হবে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ২৮টি পশুর হাটে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। খামারীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। এছাড়াও ৪২ হাজার পশু পালনকারী বাজারে গরু নিয়ে আসছে। দেশীয় গরুর কোন ঘাটতি নেই। বাজারও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied