মমিনুল ইসলাম রিপন : রংপুরের ঐতিহ্যবাহী মন্থনা পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি তারিকুল হাকিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দির সম্বনয়ে গঠিত বেঞ্চ ঐতিহ্যবাহী মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানী শেষে এই নির্দেশ দেন। রিট আবেদনের শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার আদালত কেন ঐতিহ্যবাহী মন্থনা পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ কার্যক্রম অবৈধ নয় মর্মে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালকসহ ১০ দপ্তরের প্রধানকে কারণ দর্শানোর জন্য রুল জারি করেন। সেই সাথে রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। যাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিব, পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সচিব, ভূমি সংস্কার বোর্ডের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পানিউন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফায়ার সার্ফিস, রংপুর জেলা প্রশাসক ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র। রিট আবেদন-৯৩২৪/১৯ এর ফাইলিং করেন এডভোকেট লিটন আহম্মেদ। রিট আবেদনটির শুনানী করেন ব্যারিস্টার খুররম শাহ্ মুরাদ এবং ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এদিকেহাইকোর্টের এই আদেশে রংপুরের বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, রংপুর নগরীর ঐতিহ্যবাহী মন্থনা পুকুর ভরাট করে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স রংপুর অফিস কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩ মাস পূর্বে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রথম থেকেই রংপুরের বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল,সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী সংগঠন পরিবেশবান্ধব প্রাচীণ ও ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি রক্ষায় মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল। তার মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরটি সংরক্ষণ ও দৃষ্টিনন্দন করে তোলার দাবিতে সর্বস্তরের মানুষ ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে। সর্বস্তরের মানুষের আপত্তি ও প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে রংপুর ফায়ার সার্ভিস অফিস অনড় মনোভাব নিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। এরফলে ঐতিহ্যবাহী মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি হাইকোর্টে রিট আবেদন করতে বাধ্য হয়।