বিশেষ প্রতিনিধি ৯ সেপ্টেম্বর॥ বাবলুর লাশ ফেরত চান স্বজনরা। লাশ এনে দাফন কাফন করার জন্য বাবা মা ও স্ত্রী বিভিন্ন স্থানে ধর্না দিচ্ছেন। কিন্তু আজ সোমবার ঘটনার ৭ দিন হতে চললেও তারা এখন লাশ ফেরত পাওয়ার কোন আশার আলো দেখতে পায়নি। স্বজনের আহাজারী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ বাবলুকে গুলি করে মেরেছে। তাই বলে কি আমরা তার লাশটাও ফেরত পাবো না। আমরা আমাদের ছেলের লাশ ফেরত চাই- আমাদেরকে লাশ এনে দেওয়ার ব্যবস্থা চাই।”
আজ সোমবার(৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই বলছিলেন, বিএসএফের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ বাবলু মিয়ার বাবা নুর মোহাম্মদ ও মা আছিয়া খাতুন। তাদের অভিযোগ বাংলাদেশের ৫১ বিজিবির কাছে আমরা এ নিয়ে কথা বলার জন্য বার বার ধর্না দিয়ে কোন সুযোগ পাইনি। তাই তারা গতকাল রবিবার(৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে ছেলের লাশ ভারত থেকে এনে দেওয়ার দাবিতে ৫১ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার(সিও) স্যারের কাছে লিখিত আবেদনটি নীলফামারীর ডিমলা ইউএনও মাধ্যমে প্রেরন করেছেন। বাবলুর বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন গ্রামে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা ও লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম তিস্তা নদীর চর সীমানায় গরু চড়াতে ও ঘাস কাটতে গেলে সীমান্তের ৭৭২ প্রধান পিলালের কাছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মোহাম্মদ বাবলুর মিয়া(২৪) নিহত হয়। এ সময় বাবলুর সঙ্গে থাকা চৌদ্দ বছরের বালক সাইফুল ইসলাম আহত হয়। বাবলুর লাশ সহ আহত বালককে বিএসএফ ভারতে নিয়ে যায়। আহত বালক ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর গ্রামের গোলজার রহমানের ছেলে। এই বালকেও ফেরত পেতে তার স্বজনরা একই ভাবে ধর্না দিচ্ছে।
এদিকে নিহত বাবলুর স্ত্রী রজিফা স্বামীর জন্য আহাজারী করছে। ৮ মাস আগে বিয়ে হওয়া এই নারী ঠিকমতো সংসার জীবন শুরুই করতে পারেনি। স্বামীর হঠাৎ এ ভাবে মৃত্যু সে মেনে নিতে পারছেনা। অল্প বয়সে আজ তাকে বিধবা হতে হলো। ভারত থেকে বাবলুর লাশ নিয়ে আসার দাবিতে বাবা, মা, স্ত্রী ভাই বোন আজ পাগলের মতো ছেড়ে জনপ্রতিনিধি, বিজিবি, প্রশাসনের বিভিন্ন লোকজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান বাবলুর মরদেহ ও আটক সাইফুল ইসলামকে ফেরত আনার জন্য ৫১ বিজিবি কাছে বাবলুর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। তবে ৫১ বিজিবির কাছে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায় ভারতীয় বিএসএফে বাবলুর মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে কুচবিহার হাসপাতালের মরচ্যুয়ারীতে সংরক্ষন করে রেখেছেন। অপর দিকে আহক বালক সাইফুল ইসলামের চিকিৎসা শেষে তাকে জলপাইগুড়ির কিশোর সু-রক্ষা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। #