আজ বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আগুনে পোড়া রোগীদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এই ‘সন্ত্রাস’ বন্ধে যতোটা কঠোর হওয়া প্রয়োজন, সরকার তা হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যারা হুকুম দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
রোববার বেলা ৩টার দিকে প্রাধনমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছান এবং চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজ খবর নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগুনে মানুষ পোড়ানোর মতো যাঁরা ঘৃণ্য অপরাধ করছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সহিংসতার মাধ্যমেই গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এটা সহিংসতা, এটা গণহত্যা। বিএনপি একাত্তরের দোসরদের দিয়ে গণহত্যা চালাচ্ছে। ঠিক যেমন একাত্তরে বাঙালি জাতির ওপর করা হয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে এসে দেখলাম একেকটা পরিবারের কী অবস্থা! এই যে সুমি (আগুনে পোড়া রোগী) সে আমাকে বলছে— যারা আমাকে পুড়িয়েছে তাঁদের হাত পুড়িয়ে দিন। কিন্তু আমরাতো তাঁদের মতো বর্বর না।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা এসি রুমে বসে থাকবেন, আর আগুনে মানুষ পোড়ানোর হুকুম দেবেন, এটা হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। দগ্ধ রাগীদের জন্য যেসব বিদেশি ওষুধ সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয় না, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সেসব ওষুধের খরচ মেটাবেন বলেও চিকিৎসকদের জানান।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তা বাতিল ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধে সারা দেশে ব্যাপক সহিসংতা ঘটছে। বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও বোমাবাজি হচ্ছে, যাতে আহত ও দগ্ধ মোট ৫১ জন এ পর্যন্ত বার্ন ইউনিটে এসেছেন চিকিৎসা নিতে।
এর মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন, আরো ৩৭ জন এখনো চিকিৎসাধীন বলে চিকিৎসকরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান।
অন্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলের উপাচার্য প্রাণ গোপাল দত্ত, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের পরিচালক সামন্ত লাল সেন, সাংসদ ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মেডকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক জুলফিকার আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বার্ন ইউনিটে এখন ৩৭ জন পোড়া রুগী আছেন। এদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগের কাছে বাসে প্রেট্রোল বোমা হামলায় আহত ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শ্বাসনালী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অবশিষ্টদের শরীরের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এরা সবাই গত ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া টানা ৭১ ঘণ্টা ও শনিবার থেকে শুরু হওয়া টানা ৭২ ঘণ্টা অবরোধের সহিংসতায় আহত হন।