বিদিশা বলেন, এসব কারা করছে নির্দিষ্টভাবে আমি বলতে পারবো না। কিন্তু এর আগে আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আমি জানিয়েছি সবাইকে যে এরিকের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমি এরিকের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। গতকাল এরিক আমাকে ফোন করেছে, বলছে, মা আমি আর সহ্য করতে পারছি না, থাকতে পারছি না, মা তুমি আমাকে বাঁচাও, আমাকে এখান থেকে বের করো। তাড়াতাড়ি আসো। এবং বলছে, মা আমি খাই না অনেকদিন, খাবার নিয়ে আসো।
বিদিশা বলেন, গুলশানে থাকি, পাশেই থাকি, কিন্তু আমার ছেলে কেমন আছে, না আছে জানতে পারি না আমি। শুনেছি ছেলেকে স্কুলে যেতে দেয়া হয় না, বাইরে যেতে দেয়া হয় না। তারপর কালকে আমি নিজেই চলে এসেছি। ভিতরে এসে দেখি, করুণ একটা অবস্থা। ধুলাবালি ময়লার মধ্যে এরিক। ওর ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে। গায়ে দুর্গন্ধ, পাঁচ-ছয়দিন ধরে গোসল করে না।
বিদিশা জানান, তাকে সকালে নাস্তা দেয়া হয় না, রাতে ডিনার দেয়া হয় না। দিনে একবেলা তাকে খাবার দেয়া হয়। এরিক আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছে। আমি ওকে খাওয়ালাম, গোসল করালাম, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করলাম। বললাম কি হয়েছে তোমার? তখন ও বললো যে, আমাকে চাচা বলেছে তুমি তোমার মার সাথে যোগাযোগ করতে পারবা না, মার সাথে কথা বলতে পারবা না। তোমার মা ভালো না, তোমার মা খারাপ। তোমার মা তোমাকে ভালবাসে না। - এসব কথা বার্তা তাকে বোঝানো হয়েছে।
বিদিশা বলেন, আপনারা জানেন আমার সন্তানটা আসলে ‘স্পেশাল চাইল্ড’। প্রতিবন্দী বাচ্চা, এরা সেনসিটিভ হয় খুব।
বিদিশা জানান, আমার অফিসের স্টাফরাও আমাকে দেখতে এসেছিল, কিছু লাগবে কিনা। নিচে থেকে পুলিশ নাকি আটকে দিয়েছে। গণমাধ্যমকে নাকি বলেছে যে, জি এম কাদের সাহেবের অর্ডার নেই। উনি মানা করেছেন, কেউ যেন বাসার ভিতরে না যায়। বলতে গেলে আমি ও আমার সন্তান দুজনেই অবরুদ্ধ অবস্থায়। যারা পুলিশের চাকরি করছেন, তারা তো জি এম কাদেরের চাকরি করেন না, সরকারের চাকরি করেন। পুলিশ তো বলতে পারে না, কেউ ঢুকতে পারবে না। ঢুকতে না দেবার, অনুমতি না দেবার উনি কে? আমার অ্যাসিটেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি, তার কাছে আমার কাপড়-চোপড় আছে, ওষুধ আছে। এরিকের লোকাল গার্ডিয়ান তো তার মা। তার চাচা তো তার গার্ডিয়ান না।
এরশাদপুত্র এরিক ফোনে বলেন, আমরা বেরোতে চাচ্ছি। লোকজনকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য রাজি হননি জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের। জিএম কাদের ফোনে বলেন, আমি এখন এ বিষয়ে কথা বলবো না।