তৈয়বুর রহমান,কুড়িগ্রাম: এক মাস আগে বদলীর আদেশ, এরপর তিন দফা চার্জ হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেয়ার পরও দায়িত্ব বুঝে দিচ্ছেন না কুড়িগ্রামের উলিপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মনোয়ারুল ইসলাম। অভিযোগ আছে, একটি খাদ্য ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের সাথে অনৈতিক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায়, তাদের খুঁটির জোড়ে কর্তৃপক্ষের বদলীর আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন ঐ কর্মকর্তা।
খাদ্য ব্যবসায়ীদের একটি অংশের অভিযোগে জানা যায় , গত ২০১৮ সালের মার্চ মাসে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মনোয়ারুল ইসলাম উলিপুর খাদ্য গুদামে যোগদান করেন। এর পর থেকে তিনি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ না করে একটি রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও মিল মালিকদের কাছ থেকে ছাটাইকৃত চাল না কিনে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দকৃত চাল কাগজে কলমে ক্রয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
তার এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পেয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের নির্দেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ঐ কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিলে, তাকে বদলীর নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৬ অক্টোবর রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রায়হানুল কবির তাকে বদলী করে কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অফিসে যোগদানের নির্দেশ দেন। এই আদেশ পাওয়ার পর তিনি ঐ রাজনৈতিক সিন্ডকেট কে সাথে নিয়ে, বদলী আদেশ বাতিলের জন্য ঢাকায় যান। এরপর গত ৫ নভেম্বর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাদের আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তার বদলী আদেশ কার্যকর করার জন্য মনোয়ারুল ইসলাম কে চিঠি দেন। এরপরও ঐ অসাদু কর্মকর্তা দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে, গত ১১ নভেম্বর আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় সীমা বেধে দিয়ে পূণরায় চিঠি দেন।
এদিকে, মনোয়ারুল ইসলামের স্থলে দায়িত্ব নিতে আসা আমজাদ জানান, তিনি এক মাস থেকে দায়িত্ব নেয়ার জন্য উলিপুরে এসে বসে আছেন।তিনি বদলী হওয়া মনোয়ারুল ইসলাম কে একমাস ধরে বিভিন্ন সময় ফোন করেই যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করছেন না এবং দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না।
এ ব্যাপারে মনোয়ারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গুদামে কিছু কাজ বাকি থাকায় তিনি আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তার বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে দায়িত¦ হস্তান্তর করবেন না। দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ অমান্য করা হবে কিনা- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভায়োলেশন হবে না’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অঃদা) আব্দুল কাদের জানান, মনোয়ারুল ইসলাম কে চিঠি দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি।
আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা রায়হানুল কবীরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বদলী আদেশ কার্যকর না হলে, ‘বদলী নীতিমালা ২০১৯’ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
