স্টাফ রিপোর্টার: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরের বসতি এলাকায় আবাদী জমিতে আবাসন নির্মাণ না করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চরবাসি। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আবাদী ওই জমিতে দাঁড়িয়ে নারী, পুরুষ, শিশুসহ মর্ণেয়া ইউনিয়নের নিলারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা এই মানববন্ধন করে।
এলাকার কৃষি জমিতে আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান। যদিও আবাসন নির্মাণের প্রস্তাবিত প্রকল্প বাতিলের দাবি করেছে স্থানীয় কৃষকগণ। তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আবাসন প্রস্তাব বাতিল চেয়ে আবেদনও করেছে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে গত তিন বছরে মর্ণেয়া ইউনিয়নে আরও চারটি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, মর্ণেয়া ইউনিয়নের নিলারপাড়া এলাকায় ২৩ একর খাস জমি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ একর জমি আবাসন প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। যার সাবেক দাগ নং ৫৩৬, হাল দাগ নং ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৪১। দাগভুক্ত জমিগুলো রয়েছে একই প্লটে। তিন ফসলী ওই জমিগুলো স্থানীয় ভূমিহীন, দিনজমুর ও ক্ষুদ্র-প্রান্তিক চাষী পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদসহ ভোগদখল করে আসছেন। এছাড়া পবিারগুলোর সুবিধার্থে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। কিস্তু নিজ স্বার্থ হাসিলের লক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান ওই জমিতে আবাসন প্রকল্প নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন।
মানববন্ধন চলাকালে স্থানীয় আব্দুল ওয়াহেদ আলী, মফিজ শেখ, সাইয়েদ আলী, শাহীনুর রহমান, হযরত আলীসহ অনেকে জানান, তিন ফসলী জমিগুলোতে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করা হলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত পরিবাগুলোকে এলাকা ছেড়ে যেতে হবে এবং আবাদী জমি হারিয়ে তাদের পথে বসতে হবে। ওই এলাকা বাদ দিয়ে পাশ্ববর্তী এলাকায় খাস জমিতে (যেখানে বসতবাড়ি নেই এবং চাষাবাদও হয়না) আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করলে নিরাশ্রয় পরিবারগুলো উপকৃত হবে এবং সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য সফল হবে বলে জানান তারা। কৃষি জমিতে কোনো স্থাপনা নয়, প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণার কথা উল্লেখ করে স্থানীয়রা আবাসন প্রকল্পের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মর্ণেয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী জানান, ওই জমিগুলো খাস হওয়ায় আবাসন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব দাখিল করা হয়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আবাসন প্রকল্পের প্রস্তাবিত জমিগুলো তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।