আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা      

 width=
 

নীলফামারীতে অবৈধ যান কেড়ে নিল মেধাবীর স্কুল ছাত্রের প্রাণ

রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২০, রাত ০৮:০৮

নীলফামারী প্রতিনিধি ১২ জানুয়ারি॥ “বাবা আমি লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হবো। তখন তোমাদের সব অভাব পূরণ করবো”। কিন্তু বাবাকে দেওয়া সে কথা রাখতে পারলো না নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোরসালীন ইসলাম হাসিফ। স্কুল থেকে বাড়িতে ফেরার পথে অবৈধ যান নছিমন (স্যালো ইঞ্জিন চালিত) কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ। ঘটনাটি ঘটে আজ রবিবার(১২ জানুয়ারি/২০২০) বেলা ১১ দিকে নীলফামারী সদরের ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে শহর বাইপাস সড়কে। সে ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই ছাড়ারপাড় গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বাদশার ছেলে। এঘটনায় আহত ওই নছিমনের দুই আরোহীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, মেধাবী ওই শিক্ষার্থী মোরসালীন প্রতিদিন বাইসাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করতো। ঘটনার দিন আজ রবিবার স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে গরু বহনকারী একটি নছিমন পেছন থেকে তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় সে। এসময় ওই নছিমনের যাত্রি জেলার জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ পাঠানপাড়া গ্রামের গরু ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম (৪০) ও জাহিদ হোসেন (৫০) আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানন্তর করা হয়। ওই নছিমনের আরোহী গরু ব্যবসায়ী মশিয়ার রহমান (৪৫)বলেন, আমরা মীরগঞ্জ পাঠানপাড়া থেকে ওই নছিমনে ১০টি গরু নিয়ে বিক্রির জন্য নীলফামারীর হাটে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় পথে দূর্ঘটনা ঘটে। জলঢাকা উপজেলার মীরগঞ্জ ইউনিয়নের কালকেউট গ্রামে নছিমন চালক ময়নুল ইসলাম’এর নছিমনে হাটে যাচ্ছিলেন তারা। মোরসালীন ইসলাম হাসিফের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদশা জেলা সমাজসেবা দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকচারী। তার দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে মোরসালীন ইসলাম হাসিফ ছিল মেধাবী। কষ্ট হলেও ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করার ইচ্ছা ছিল তার। মোরসালিনের বড় বোন রাজিয়া আকতার রংপুর পুলিশ লাইন কলেজে এইচ এসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। ছোট বোন মিলি আকতার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। মোরসালিনের চাচাতো ভাই মোস্তাকিন ইসলাম নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। সে বলে, আমরা প্রভাতি শাখায় পড়ি। একসাথে স্কুলে গেছি। ১১টা ৫০ মিনিটে বিদ্যালয় ছুটি হলে আমি বাড়ি ফিরে আসি। সে ছুটির পর কোচিং করে বাড়ি ফেরার পথে ওই দুর্ঘটনার শিকার হয়। নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, মোরসালিন বিদ্যালয়ের আষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। প্রভাতি ‘গ’ শাখার তার রোল নম্বর ৫। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে আজকে আমার একটি মেধাবী ছাত্রকে হারাতে হলো। অবিলম্বে এসব যানবাহন বন্ধ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি দেব। নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু শফি মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগে পথেই মোরসালিনের মৃত্যু হয়। আহত দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। নীলফামারী সদর থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম বলেন, ১০টি গরুসহ ওই নসিমনটি আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। নসিমন চালক পলাতক রয়েছেন। শোকের মাতম পরিবারেরঃ- একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মোরসালীন ইসলাম হাসিফের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদশা পাগল প্রায়। জীবনের অনেক স্বপ্ন ছিল ওই ছেলেকে নিয়ে। ছেলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে মাধ্যমিকের পর পড়াবেন ভালো কোন কলেজে। সড়ক দূর্ঘটনায় ছেলেকে হারিয়ে সেসব স্বপ্ন ভঙ্গের পালায় তার আহাজারীতে ভারি হয়ে উঠে আশপাশ। তিনি প্রলাপে বার বার বলতে থাকেন “ও বাবা আমি এখন কিভাবে বাঁচবো। কাকে নিয়ে বাঁচবো। এতো ভালো বাবা আমার কোনঠে গেলরে। ছেলে বাড়িতে ফিরবে। তাই খাওয়া যোগার করে বাড়িতে বসে ছিলেন মোরসালিনের মা হাসিনা বেগম। কিন্তু যে ছেলেকে হাসি মুখে সকালে পাঠিয়ে ছিলেন স্কুলে, সে ফিরবে লাশ হয়ে এটি কি জানা ছিল তার। ছেলে হারানোর শোকে বার বার মূচ্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। মোরসালিনের দাদা আজিজুল হক (৬৫) বলেন, নাতি আমার ডাক্তার হতে চেয়েছিল। এজন্য কষ্ট হলেও তার লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমরা। কিন্তু ওই নছিমন সে স্বপ্ন পূরন হতে দিলনা।

মন্তব্য করুন


 

Link copied