আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

চিলাহাটি-হলদীবাড়ি রেলপথ নির্মান কাজ পরিদর্শন করলেন রেলমন্ত্রী ও ভারতীয় প্রতিনিধি দল

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২০, বিকাল ০৭:১৭

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, চিলাহাটি থেকে ৩১ জানুয়ারি॥ ভারতের হলদীবাড়ির সঙ্গে বাংলাদেশের নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি সীমান্ত দিয়ে সরাসরি ব্রডগেজ রেল যোগাযোগ স্থাপনে বাংলাদেশে অংশের নির্মান কাজ পরিদর্শন করেছেন রেলপথ মন্ত্রী এ্যাডঃ নরুল ইসলাম সুজন এমপি। এসময় ভারতীয় প্রতিনিধি দলও পরিদর্শনে আসে। আজ শুক্রবার(৩১ জানুয়ারি/২০২০) বেলা সাড়ে ১১টায় ভারত-বাংলাদেশের ৭৮২/১ এস নম্বর পিলারের কাছে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথের নির্মান কাজে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সাথে পরিদর্শন করেন তিনি। ভারত বাংলাদেশের সরকার টু সরকার যেমন সম্পর্ক্য ঘনিষ্ঠ হয়েছে, এখন জনগন টু জনগন সর্ম্পক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রেলপথ মন্ত্রী এ্যাড. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি। তিনি বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে মংলা বন্দর থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত রেল সংযোগ তৈরী হবে এবং চলতি বছরের জুন মাসে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল পথের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এই রেল পথটি নির্মিত হলে উভয় দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে ও অনেক সময় বাচবে। এ ছাড়া এই রেলপথের সাথে ভারতের পাশাপাশি নেপাল,ভুটানও যুক্ত হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মন্ত্রী বলেন, চিলাহাটির এই রেল পথ দিয়ে দার্জিলিং মেইল, জলপাইগুড়ি মেইল সহ ভারতে অনেক ট্রেন চলাচল করতো। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটি লাইনগুলি তুলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ভারত বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ পথ। এমকি সেই সময় পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশের সাথে ভারতে যতগুলি রেললাইন ছিল সবকটি বন্ধ করে দেয় পাকিস্তানীরা। মন্ত্রী আরো বলেন, চিলাহাটী-হলদিবাড়ি রেলপথের নির্মান কাজে “নো ম্যানস ল্যান্ড ৭৮২/১-এস” পিলারের যে সমস্যাটি ছিল সেটি নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ এর সাথে সমন্বয় বৈঠক করে আজ তা সমাধান করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক ভাবে রেল যোগাযোগের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা বাংলাদেশে রেলপথের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিশ্বমানের করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে প্রথম যাত্রীসেবার মান বাড়ানোসহ রেলপথের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নীলফামারী বাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি ঢাকাগামী সকাল-রাতে ট্রেনের দেওয়ার প্রশ্নে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুতে মাত্র একটি রেল লাইন রয়েছে। তাই সিঙ্গেল লাইনগুলি ডাবল লাইনে পরিবর্তন করার বিষয়টি আমলে নিয়েছি। তবে যেহুতু নীলফামারী বাসীদের র্দীঘদিনের দাবি এটি তাই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস মাধ্যমে দিনে যাত্রীদের ঢাকা যেতে পারবে। সেক্ষেত্রে সকালে নীলফামারী থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত একটি ট্রেনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন রেলমন্ত্রী। এসময় ভারতীয় প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন ভারতের পূর্বাঞ্চল রেলের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার দে, প্রকল্প প্রকৌশলী তপন দাস, ভারতের ৬৫ ব্যাটালিয়ন বিএসএফ (রাধাবাড়ি জলপাইকুড়ি ক্যাম্প) এর সেকেন্ড ইন কমান্ড জগদিশ দাওয়াই। বাংলাদেশের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান বিপিএম,পিপিএম, নীলফামারী ব্যাটালিয়ন (৫৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মামুনুল হক, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মোহম্মদ মাসুদুর রহমান, বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (পাকশী) আসাদুল হক, প্রকল্প পরিচালক বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী (পাকশী) আব্দুর রহিম, ম্যাক্স সিনিয়ার প্রকল্প পরিচালক জাহেদুর রহমান আইজেল, প্রজেক্ট ম্যানেজার রোকনুজ্জামান শিহাব, ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মমর্তা শাহিনা শবনম, নীলফামারী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, ডোমার উপজেলার চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, ডোমার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খাইরুল আলম বাবুল প্রমুখ। উল্লেখ যে, চিলাহাটি-হলদিবড়ি রুটটি চালু হলে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে এটি হবে আন্তর্জাতিকভাবে তৃতীয় রেলপথ। বিগত সময়ে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে খানিকটা পথ অতিক্রম করার পরে আবার ভারতে প্রবেশ করত। এছাড়া নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ভারতের হলদিবাড়ি হয়ে নিউজলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করত পার্সপোট ট্রেন। কিন্তু ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তুলে ফেলা হয়েছিল রেলপথটি। ৫৫ বছর পরে সেই পথ আবার চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। বর্তমানে ঢাকা কলকাতা, খুলনা কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। চিলাহাটি-হলদিবড়ি রুটটি চালু হলে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে এটি হবে আন্তর্জাতিকভাবে তৃতীয় রেলপথ। বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে দ্বিপীয় উন্নয়ন সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরানো সীমান্ত রেলওয়ে সংযোগ পুনরায় চালুর উদ্যোগে ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ভারত সফরের সময় এই রেলপথের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়। গত বছরের (২০১৯) ২১ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রী এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, চিলাহাটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই রেলপথের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাস। জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই দেশের পরিত্যক্ত ওই রেলপথ নির্মান করে রেল যোগাযোগ পূর্ণস্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত সরকার ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের অংশে ৪ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রেলপথের নির্মানকাজ শেষ করে। ওই অংশে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর কাজ শুরু করে ও সমাপ্ত করে ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ। সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, এই কাজের প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। যা প্যাকেজ মূল্যে প্রকল্পটির কাজ চলছে ৬৮ কোটি ৮২ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। চিলাহাটি থেকে হলদীবাড়ী সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭২৪ কিলোমিটার এবং ২ দশমিক ৬৩৬ কিলোমিটার লুপ লাইনসহ মোট ৯ দশমিক ৩৬০ কিলোমিটার রেলপথ ও ৭টি ব্রিজ নির্মাণের কাজ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই শেষ করা হবে। এরপর বসানো হবে ব্রডগেজ লাইন। ইতোমধ্যে লাইনগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করে চিলাহাটিতে নিয়ে আসা হয়েছে। নির্মাণ কাজের প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ রোকনুজ্জামান শিহাব জানান, ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি করছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই এই কাজ সমাপ্ত করতে সক্ষম হবো। নীলফামারী রেলস্টেশন সুত্র জানায়, বর্তমানে চিলাহাটি থেকে খুলনা, ঢাকা ও রাজশাহী সরাসরি ট্রেন চলাচল করছে। এসব স্থানে পাঁচটি আন্তঃনগরসহ একটি মেইল ট্রেন চলাচল করছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied