আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

বদলে গেল মানুষমারা, নামকরণ হলো “মানুষগড়া”

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, বিকাল ০৭:১৯

নীলফামারী প্রতিনিধি ৫ ফেব্রুয়ারি॥ নীলফামারী সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের “মানুষমারা” সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম বদলে দেয়া হলো। নামটি বদলিয়ে এখন নাম করন করা হলো “মানুষগড়া”। জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিভিন্নজন। এ নিয়ে চলে নানা আলোচনাও। আজ বুধবার(৫ জানুয়ারি/২০২০) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অফিস সুত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানানো হয় এখন থেকে পঞ্চপুকুর ইউনিয়নে অবস্থিত ৩৪ নম্বর বিদ্যালয়টি “'মানুষগড়া” সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়' নামে পরিচিতি পাবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তাজুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক পাঠ্যবই এর মলাটের পেছনে সংযোজিত নতুন দুই লাইনের একটি শ্লোগান রয়েছে“ শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ- শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। সেখানে কমলমতি শিশুদের স্কুলের নাম যদি হয় মানুষমারা সেখানে শিশুরা খুঁজে পাবেনা কোন নান্দনিক ভারসাম্য। বিষয়টি আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নুর ও জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সহযোগীতায় স্কুলটির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাঠাই। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, নীলফামারীতে আমি যোগদানের পর স্কুলটির নাম নজরে আসে আমার। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় নাম পরিবর্তন নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উপ সচিব জাহানারা রহমান একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এ প্রেক্ষিতে নতুন নাম পেলো বিদ্যালয়টি। তিনি বলেন, এখন আর 'মানুষমারা' নয়, 'মানুষগড়া' হিসেবে পরিচিতি পাবে স্কুলটি। ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায় স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১২০ জন। প্রধান শিক্ষক সহ চারজন শিক্ষক রয়েছে। স্কুলের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী মেঘা(রোল ১),চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী তারামনি(রোল ১) ও পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী অনুরাধা(রোল ৫) সহ সকল শিক্ষার্থীরা জানায় মানুষমারা নাম পরিবর্তনে তারা অনেক খুশী। তারা এ সময় এক সঙ্গে শ্লোগান দেয় “ শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ- শেখ হাসিনার বাংলাদেশ”। বদলেছে মানুষমারা- হলাম এখন মানুষ গড়া। আজ বুধবার ওই স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নাম পরিবর্তনে স্থানীয় মানুষজন অনেক খুশী। গ্রামের প্রবীন ব্যাক্তি মোজারুল হক (৮০) সহ এলাকার মানুষজন জানায় স্কুলের নাম পরিবর্তন হয়েছে। আমরা অনেক খুশী। এখন আমরা গ্রামের ও মৌজার নাম পরিবর্তন করতে চাই। কারন বিভিন্ন এলাকার মানুষজন এসে যখন শোনে মানুষমারা। তখন ভয় পেয়ে যায় এই নাম শুনে। প্রবীন ব্যাক্তি জানায়, এ অঞ্চলের নীল চাষ হতো। সে কারণেই ব্রিটিশরা এই এলাকায় বিপুলসংখ্যক নীলকুঠি বা নীলখামার গড়ে তোলে। অষ্টাদশ শতাব্দির প্রথমদিকে এ অঞ্চলের বড় বড় জমিদারিগুলো ভেঙে নতুন নতুন জমিদারি সৃষ্টি হয়। এ সময় ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীরা সুযোগ মতো নিজেদের নীল চাষের ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে থাকে ও গড়ে তোলে একের পর এক নীলকুঠির শাসন। সে সময় ওই গ্রামের কৃষকরা ইংরেজ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তারা নীল চাষে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। এতে গ্রামের কৃষকদের ধরে নিয়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী টেঙ্গনমারী এলাকায় নির্যাতন চালাতো ইংরেজ বেনিয়া ও তাদের এ দেশীয় দালালরা। এমন কি ওই দালালদের সঙ্গে গ্রামে বিবাদ ও সংঘর্ষ হতো। তারা গ্রামের মানুষদের মারতো। এমন মারতো যে কারো কারো হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছিল। সেই থেকে গ্রামটির নাম হয় মানুষমারা। এলাকাবাসী জানায়, আমরা এখন আর গ্রামের নামটিও মানুষমারা আর রাখতে চাইনা,শসিতে চাইনা। গ্রামের মানুষজন জানায় আমরা এখন ভুলে যেতে যাই নীল কর ইংরেজ বেনিয়াদের মানুষমারার সেই ঘটনাগুলো। আমরা গ্রামবাসী স্কুলটির মতো গ্রামটিতেও মানুষ গড়তে চাই। প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান মিলন জানান, স্কুলটির মানুষমারা নাম পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য,ডিসি স্যার ও আমাদের শিক্ষা কর্মকর্তারা এক সঙ্গে কাজ করায় আজ আমরা মানুষগড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরন পেলাম। তিনি স্কুলটিকে একটি মডেল স্কুলের রূপ দিতে চান। অচিরেই স্কুলের মানুষমারা নামের লিখা পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষগড়া লিখা হবে বলে জানান তিনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্র মতে, গ্রামের মানুষজন ১৯৩৫ সালে মানুষমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিল। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে স্কুলটি সরকারী করন হয়। স্কুলটির সরকারীভাবে পাকা ভবন হয় ১৯৯৬/৯৭ অর্থ বছরে। যা মানুষমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিতি পায়। এখন এটি মানুষগড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।

মন্তব্য করুন


 

Link copied