আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

যে আশায় বেঁচে আছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহিদ শঙ্কুর মা

মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০২০, সকাল ০৯:৪৭

রতন সরকার: ৭মার্চ রেসকোর্স ময়দান। জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে যে শহিদের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে অ্যাসেম্বলিতে না যাবার ঘোষণা দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যে মায়ের শূন্য বুকের হাহাকার তাঁকে শক্তি দিলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা ঘোষণার, সেই শহীদের খোঁজ কেউ রাখেনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ‘প্রথম শহিদ’ হিসেবে সন্তানের স্বীকৃতিটুকুর আশায় আজও বেঁচে আছেন সেই মা। বয়ে চলেছেন শতবর্ষী জীবনের ভার। এক দিনে সৃষ্টি হয়নি সেই ৭ মার্চের প্রেক্ষাপট। ৫২'র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান আর ৭০-এর নির্বাচনসহ শত-সংগ্রাম ভিত্তি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের। কিন্তু কিছু ঘটনা তো ছিলো যা বঙ্গবন্ধুকে দাঁড় করিয়ে দেয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হবার। ঐতিহাসিক সেই ভাষণের পরতে পরতে প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ভাষণটি শুরু করেছিলেন ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হাজির হবার কথা দিয়ে। আজ আর কেউ প্রশ্ন কী করে কোন ঘটনায় সেদিন মন খারাপ ছিলো স্বাধীনতার মহানায়কের? বিশ্বের ইতিহাসে স্থান করে নেয়া ভাষণটি বিশ্লেষণ করলে অন্য কয়েকটি শহরের সঙ্গে রংপুরের নামটি পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে ২৫ তারিখে অ্যাসেম্বলি কল করার কথা বললেন পাকিস্তানের মেজরিটি পার্টির নেতা শেখ মুজিব। বললেন, রক্তের দাগ শুকায় নাই, ওই শহিদদের রক্তের উপর পাড়া দিয়ে অ্যাসেম্বলিতে যোগ দিতে পারেনা মুজিবর রহমান। কোন শহিদের রক্তের কথা বলেছিলেন তিনি? ইয়াহিয়া সাহেবকে পূর্ববাংলায় এসে দেখে যেতে বললেন। বললেন, অআসুন, দেখুন কী ভাবে আমার গরীবের উপর, আমার বাংলার মানুষের উপর গুলি করা হয়েছে, আমার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে …। বুক খালি হওয়া সেই মা কী দীপালি সমজদার নন? ইতিহাসের সত্য হলো, ৩ মার্চ ডাকা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন হঠাৎ বন্ধ করেন ইয়াহিয়া খান। ২ মার্চ ঢাকায় এবং ৩ মার্চ সারাদেশে হরতাল পালিত হয় বঙ্গবন্ধুর ডাকে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের হয় রংপুরে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। ঘটনাস্থল জাহাজ কোম্পানি মোড়ে বুকে গুলি লেগে শহিদ হন শঙ্কু সমজদার। সে সময় শঙ্কু স্থানীয় কৈলাশরঞ্জন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। শম্ভুর সঙ্গে গুলিবিদ্ধ রংপুরের আরও দু’জনের মৃত্যু হয় ৩ মার্চ বিকালে। একই দিন বিকেলে রাজধানীর মৌচাক মোড়ে শহিদ হন কলেজ ছাত্র ফারুক ইকবাল।

কিশোর শঙ্কুর মৃত্যু শহীদী স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু প্রথম শহিদের স্বীকৃতিটুকু মেলেনি। তার স্মরণে কিছু করার বা গড়ার অবকাশ মেলেনি কারও। সারাটা জীবন দীপালি সমজদার তাঁর সন্তানের স্মৃতির স্মারক হিসাবে একটা স্মৃতিস্তম্ভের দাবি করে আসলেও এখন সে শক্তি কেড়ে নিয়েছে বয়স। শতবর্ষী জীবনের ভার বইতে গিয়ে এখন নিজের চিকিৎসা আর ভাত-কাপড়ের আকুতিটাই জানাকে পারেন দীপালি।

৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই দেশটা দিতে অকাতরে প্রাণ বিলানো কিশোর ছেলেটার প্রতিদান হিসাবে ৩ শতকের একটি বাড়ি দিয়েছে রাষ্ট্র। কিন্তু সেই বাড়ি পাইয়ে দেয়ার মাসুল হিসাবে বাড়ির অর্ধেক দাবি করেছেন এক সাংবাদিক। সরকারের দেয়া বাড়িটা নিয়ে শঙ্কিত তিনি।

তবে তার জন্য কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।

মন্তব্য করুন


 

Link copied