আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা গ্রেপ্তার       পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ       

 width=
 

এরশাদের মৃত্যুর এক বছর: দ্বন্দ্ব-বিবাদ বেড়েছে জাপায়

মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০২০, সকাল ০৯:৩৪

জাপা নেতারা বলছেন, এরশাদের মৃত্যুর পর পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে টানাপড়েন সৃষ্টি হয় জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের মধ্যে। তবে রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সাদ এরশাদকে দলীয় প্রার্থী করার মাধ্যমে জি এম কাদের আর রওশন এরশাদের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দলের নবম কাউন্সিলে নতুন পদ সৃষ্টি করে রওশন এরশাদকে ‘চিফ প্যাট্রন’ করা হয়। রওশনপন্থীরা বলছেন, মূলত ‘ক্ষমতাহীন’ এই পদটি দিয়ে তাকে দলের মধ্যে কোণঠাসা করে ফেলেন জি এম কাদের। এদিকে দলের মধ্যে রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, এস এম ফয়সল চিশতী, রুহুল আমিন হাওলাদারকে কো-চেয়ারম্যান করে নিজের পক্ষে টেনে নেন জি এম কাদের। ফলে গত সম্মেলনের পর থেকে জি এম কাদেরের সঙ্গে কথা বলেন না রওশন এরশাদ। বর্তমানে পার্টিতে রওশনের তেমন কোনও প্রভাব নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার একজন কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘দলের নবম সম্মেলনের পর থেকে জি এম কাদের ও রওশন এরশাদ কেউ কারও সঙ্গে কথা বলেন না। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি নিজের ছেলে সাদ এরশাদকে কো-চেয়ারম্যান করে ১৬ জনকে দলের বিভিন্ন পদে পদায়ন করেছিলেন দলের ‘চিফ প্যাট্রন’ রওশন এরশাদ। কিন্তু জি এম কাদের রওশনের সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি। তিনি দলের চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে পার্টির বিভিন্ন পদে একের পর এক নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহেও দুই জন উপদেষ্টা ও তিন জন সদস্য নিয়োগ দিয়েছেন জি এম কাদের।

রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা না বলার বিষয়ে জানতে চাইলে জি এম কাদের কোনও মন্তব্য করেননি। আর এসব নিয়ে রওশন এরশাদেরও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে রওশন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ বলেন, ‘কেন তারা কথা বলেন না, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ নিয়ে আমি একটা বললে হয়ে যাবে আরেকটা। আপনি বরং এই বিষয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করেন।’ সাদ এরশাদ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়েছেন আমি যেন ভালো কাজ করি, তাই এমপি হয়েছি। এখন কতটুকু করতে পারবো আল্লাহ ভালো জানেন। আমি চেষ্টা করছি।’

জাপা সূত্রে জানা গেছে, এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জি এম কাদের, রওশন এরশাদ ও বিদিশা সিদ্দিকী আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তারা কেউ কারও কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না। জাপা সূত্র জানায়, দলের ব্যানারে গৃহীত কর্মসূচিগুলোতে জি এম কাদের অংশগ্রহণ করবেন। দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে রংপুরে এরশাদের কবর জিয়ারত করতে যাবেন জি এম কাদের এবং সেখান থেকে ফিরে বিকালে বনানীতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলে অংশ নেবেন তিনি। এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না এরশাদের দুই ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ ও এরিক এরশাদ। একই দিন সকাল ১১টায় গুলশানে রওশন এরশাদ নিজের বাসভবনে এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন। মায়ের নেওয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন সাদ এরশাদ। আর বাদ আছর সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে ও এরশাদ ট্রাস্টের আয়োজনে বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কে এরশাদের প্রতীকী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, স্মরণ সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

সাদ এরশাদ বলেন, ‘আমি একা মানুষ, চাইলেই তো সব কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারি না। আমি সকালে মায়ের আয়োজনে অনুষ্ঠেয় মিলাদ মাহফিলে যাবো।’

বিদিশা সিদ্দিকী বলেন, ‘এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিন বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে ট্রাস্টের আয়োজনে। মূল অনুষ্ঠান কালকে (মঙ্গলবার) বিকালে হবে। সেখানে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।’

জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যে যার মতো করে কর্মসূচি পালন করছেন। রওশন এরশাদ তার মতো কর্মসূচি পালন করছেন এবং ট্রাস্ট আলাদা আয়োজন করেছে। এতে করে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে—বিষয়টি এমন না। আমি দলের কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিচ্ছি। তারা তাদের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এখানে বিভক্তির কিছু নেই।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied