নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয়রা। বাড়িঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় তাদের কোন যাওয়ার যায়গা নাই বলে জানিয়েছেন। ফলে বাধ্য হয়ে স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। কেউবা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, হঠাৎ করে এভাবে জলাবদ্ধতায় অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে তাদের। বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে মূল্যবান কাগজপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ব্যাবসায়ীক মালামাল, জিনিসপত্র ও ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও নষ্ট হওয়ার পথে।
বিশেষ করে যারা একতলা বাড়িতে থাকেন তাদের বিছানাপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আশেপাশের স্কুল কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। নগরীর সমাজকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়েও অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ভবন খুলে দিয়েছেন।
এখানে আশ্রয় নেওয়া কয়েকজনের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, এত বড় একটি দুর্যোগে আগে থেকে সিটি কর্পোরেশন অথবা আবহাওয়া অফিস কেউই কোন সতর্কবাণী বা পূর্বাভাস দেয়নাই। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েছেই।
আশ্রয় নেওয়া মুলাটোল থানা মোড় এলাকার গৃহিণী আছিয়া বেগম জানান, তার বাড়িতে বিছানার উপরে পানি উঠেছে। সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। এছাড়াও ব্যাবসায়ীক কয়েক লক্ষ টাকার বই নষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।
ক্ষুদ্রব্যাবসায়ী নুরজাহান বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি ছোট ব্যবসায়ী। ভাড়া বাড়িতে থাকি। হঠাৎ এই পানিতে মালামালসহ বাড়ির সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তিল তিল করে গড়ে তোলা সংসারের সবকিছু নষ্ট হয়ে গেলো। এ সময় দুপুর হলেও প্রশাসন বা সিটি কর্পোরেশনের কেউ খোজখবর না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে হঠাৎ এই জলাবদ্ধতায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। শুকনা খাবার ও নিরাপদ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই না খেয়ে আছেন। এতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় অনেক স্বেচ্ছাসেবী। নিজেদের উদ্যোগে খাবার রান্না করে সরবরাহ করছেন তারা।
এদিকে পানিবন্দীদের উদ্দ্বারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম। তারা নৌকায় করে মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গত ১০০ বছরের ইতিহাসে রংপুরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। এই ধারা আরও দুইদিন অব্যাহত থাকতে পারে।