আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৯ মার্চ ২০২৪ ● ৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন       রংপুরে মিস্টি ও সেমাই কারখানায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা       হিলিতে কেজিতে ২০ টাকা কমল পেঁয়াজের দাম       ‘অবন্তিকা’ই যেন শেষ হয়... প্লিজ       রংপুরে দিনে গরম রাতে শীত, ভাইরাসজনিত জ্বর-সার্দির প্রকোপ বৃদ্ধি      

 width=
 

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশে অনিয়মের অভিযোগ

বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০২০, বিকাল ০৫:০২

জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আবেদনের শর্তাবলীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১. কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেনীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কমপক্ষে সাত বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে অন্যূন চার বছরের শিক্ষতার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। স্বীকৃত জার্নালে চারটি প্রকাশনা থাকতে হবে।

অথবা,  ২. কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেনীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে এমফিল বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কমপক্ষে দশ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে অন্যূন পাঁচ বছরের শিক্ষকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। স্বীকৃত জার্নালে চারটি প্রকাশনা থাকতে হবে। বিজ্ঞপ্তির শর্ত কোন প্রার্থী পূরণ না করলেও প্লানিং কমিটি কেন তিন প্রার্থীকে বাছাইবোর্ডে অংশ গ্রহনের সুপারিশ করেছেন তা খতিয়ে দেখে প্লানিং কমিটির সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি মাসের ১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত বাছাইবোর্ডে অংশগ্রহনের সুপারিশকৃত তিন প্রার্থী হলেন, মো: হারুন, যার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষতার অভিজ্ঞতা ৮ বছর ১০ মাস, মো: জামাল হোসেন, যার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকায় শিক্ষতার অভিজ্ঞতা ৭ বছর ৯ মাস, সেই সাথে বর্তমানে একটি প্রকাশনী সংস্থায় কর্মরতসহ মোট অভিজ্ঞতা ১০ বছর ৬ মাস এবং মোহাম্মদ শওকত আলী তার আবেদনে হার্মদদ, দারুল ইহসান, এশিয়ান ও বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি এবং শেখ বোরহান উদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ এ শিক্ষকতার ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা দেখালেও প্রকৃতপক্ষে সেগুলো খন্ডকালীন চাকুরীর অভিজ্ঞতা। কেননা, তিনি একই সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা দেখিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত শর্ত লঙ্ঘন করে তিন প্রার্থীকে নিয়োগ বাছাই বোর্ডে অংশ গ্রহনের সুপারিশ করাকে পছন্দের অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার কৌশল হিসেবে মনে করেন বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের একাংশ অভিযোগ করেন, পছন্দের অযোগ্য একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার কৌশল হিসেবে অযোগ্য আরও দুইজনকে নিয়োগ বাছাইবোর্ডে অংশ গ্রহনের সুপারিশ করে নিয়োগ বোর্ডকে শুদ্ধ করার অপচেষ্টা করে প্লানিং কমিটি। এদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে এবং আসন্ন সিন্ডিকেটে সুপারিশকৃত অযোগ্য প্রাথীর নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে বলেও গোপন সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য সেপ্টেম্বর মাসের ৩ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পাঁচজন প্রার্থী আবেদন করলেও কেউই বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করলেও দুইজনকে বাদ দিয়ে পছন্দের প্রার্থীসহ তিনজনকে নিয়োগ বাছাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুপারিশ করে প্লানিং কমিটি। পরে চলতি মাসের ১৪ তারিখে আলোচ্য তিন প্রার্থীর নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

নিয়মানুযায়ী বিজ্ঞাপিত পদের বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল পূর্বক পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবার কথা। কিন্তু প্লানিং কমিটি অযোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগ বাছাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুপারিশ করে তন্মধ্যে একজনকে নিয়োগ বাছাই বোর্ড কর্তৃক নিয়োগের সুপারিশকে পারস্পরিক যোগসাজগ বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা।

আবেদনকারীদের প্রাথমিক যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও প্লানিং কমিটির সুপারিশ এবং সেইসব প্রার্থীদের মধ্য থেকে নিয়োগে সুপারিশকে গুরুতর অনিয়ম ও নৈরাজ্য হিসাবে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষকগণ। অনতিবিলম্বে এই নিয়োগ সুপারিশ বাতিলের দাবি জানান তাঁরা।

এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবু কালাম মো: ফরিদ উল ইসলাম বলেন- ‘যদি এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে এটি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বহির্ভূত কাজ এবং এটি এক প্রকার দুর্নীতি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

আবেদনকারীদের প্রাথমিক যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও প্লানিং কমিটির সুপারিশের বিষয়ে প্লানিং কমিটির চেয়ারম্যান ও ইংরেজী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহসিনা আহসান বলেন- ‘এটি একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত আমার একার না। প্লানিং কমিটির সকল সদস্য মিলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

এদিকে, নিয়োগ সংক্রান্ত পূর্বের সকল বিজ্ঞপ্তি ও শর্তাবলী বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে পাওয়া গেলেও উল্লেখিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও শর্তাবলী পাওয়া যায়নি। অভিযোগ উঠেছে, প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির শর্তের সাথে প্লানিং কমিটির সুপারিশের সামঞ্জস্য না থাকায় বিজ্ঞপ্তিটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

এবিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটিসেলের দায়িত্বে থাকা চীফ ইঞ্জিনিয়ার বেলাল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত শর্তাবলী পূরণ না করেও প্লানিং কমিটির সুপারিশ করা প্রার্থীদের নিয়োগ বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তিনি বলেন- ‘প্লানিং কমিটি সুপারিশ করেছে, প্লানিং কমিটিকে জিজ্ঞাসা করেন।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও, তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

মন্তব্য করুন


 

Link copied