আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা গ্রেপ্তার       পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ       

 width=
 

সমাবেশে আসা ওয়াজিব; সুযোগ নেবে জামায়াত- শিবির

শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩, সকাল ০৯:৪৬

জানা গেছে, নিজেদের দাবি অদায়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকার ও প্রশাসনকে সর্বশক্তি দিয়ে মরণ থাবা দিয়েও কোনো ফলাফল পায়নি জামায়াতে ইসলাম। নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও বিএনপিকে পাশে পায়নি। তাই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জোটের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে ‘সহিংস’ অবস্থান করেছে দলটি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার-নির্যাতনসহ নানা ইস্যুতে কোণঠাসা জামায়াত-শিবির। সংগঠনিক কর্মকাণ্ড কর্মপরিষদের বৈঠক, বর্ধিত সভা, কর্মীসভা ও প্রচার, মিছিলসহ কোনো কর্মসূচিতেই তাদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না সরকার। এরমধ্যেই জোটের ২৯ তারিখের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতের ‘কর্মী’ ও ‘রোকন’ এবং শিবিরের ‘সাথী’ ও ‘সদস্য’ শ্রেণীর নেতাদেরকে সমাবেশে আসা ‘ওয়াজিব’ করে দেয়া হয়েছে বলে একাধিক দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এ নির্দেশ পালনে সদা প্রস্তুত কর্মীরাও।

১৮ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এ দলটি জনসভাকে কেন্দ্র করে চাঙা হওয়ার চেষ্টা করছে। সমাবেশে কমপক্ষে ৩ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগমের টার্গেট নিয়েছে জামায়াত-শিবির। এ লক্ষ্যে দলের কর্মীরা ইতোমধ্যে রাজধানীতে আসা শুরু করেছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মেস ও আত্মীয়-স্বজন ও ঢাকার আশপাশের মদরাসাগুলোতে অবস্থান নিচ্ছে। এমন তথ্যও রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে।

এদিকে ২৯ ডিসেম্বরের সমাবেশে জোটের প্রধান খালেদা জিয়া অসহযোগ আন্দোলনসহ কঠোর কোনো কর্মসূচির ডাক না দিলে সেখান থেকেই সহিংস হয়ে তাণ্ডব চালাবে জামায়াত-শিবির। যে কোনো মূল্যে সরকারের পতন দেখতে চায় তারা। দলের একাধিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, সকারের দমন-নিপীড়নে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই তারাও সরকারের এমন কঠোর অবস্থান মোকাবেলা করতে মাঠে নেমেছে। প্রয়োজনে ‘শাহাদাৎ’ বরণ করতেও প্রস্তুত!

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি জোটের সমাবেশ। জোটের যে কোনো কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে আসছে জামায়াতে ইসলামী। এ কর্মসূচিতেও জামায়াত তার সাধ্যমতো সহযোগিতা করবে। সমাবেশে সর্বাধিক সংখ্যক লোক উপস্থিতির টার্গেট রয়েছে আমাদের।’

তিনি বলেন, ‘ওইদিন যে কোনো মূল্যে সরকার পতনের ঘণ্টা বাজানো হবে। আমরা আশা করছি ওইদিন জোটের পক্ষ থেকে সেই কর্মসূচির ঘোষণাই দেয়া হবে। কারণ জালিম এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার আর কোনো অধিকার নেই। তারা দেশ, সংবিধান, গণতন্ত্র ও ইসলামে চরম শত্রু।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোয়াখালী জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশ রয়েছে। যেহেতু নেতার আনুগত্য করা ফরজ। তাই আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন।’

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের লড়াকু সৈনিক হচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির। ইসলামসম্মত যে কোনো দাবি আদায়ে আমাদের কর্মীবাহিনী সদাজাগ্রত। জালিম সরকার আমাদের ওপর যতোই নির্যাতন করুক না কেন বাংলার জমিনে ইসলামী আন্দোলন থামিয়ে রাখা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে গত পাঁচ বছরে আমাদের শতাধিক কর্মীভাই শাহাদাৎবরণ করেছে। প্রয়োজনে আমরা সাবাই শাহাদাৎবরণ করবো। এরপরও ইসলামের বিজয় বাংলার মাটিতে প্রতিষ্ঠা করবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘জোটের প্রতিটি সমাবেশে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের সর্বাধিক সংখ্যক উপস্থিতি থাকে। এবারের সমাবেশেও আমাদের সর্বাধিক সংখ্যক লোকের সমাগম থাকবে। ছাত্রশিবির সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।’ তবে শাস্তিপূর্ণ এ সমাবেশে কোনো বাধা কিংবা দাবি মেনে না নিলে সেদিনই সরকারের বিদায়ের ঘণ্টা বাজবে বলেও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন শিবিরের এই নেতা।

তবে এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠে রাখার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সতর্ক থাকার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এমনকি আত্মরক্ষার্থে যে কোনো সিদ্ধান্তের নির্দেশও রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সব ধরনেরই প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চালাচ্ছে যৌথবাহিনী।’

এদিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘১৮ দলীয় জোটের কর্মসূচিতে নাশকতার আভাস পাওয়া গেছে। বিগত দিনে যারা যানবাহনে আগুন, বোমা নিক্ষেপ, পুলিশের উপর হামলাসহ বিভিন্নভাবে নাশকতা করেছে তারা এই কর্মসূচিতে জড়ো হচ্ছে এমন তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে। এদের মোকাবেলায় পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক অবস্থানে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied