আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

রহস্যেই থেকে গেল জাপা

শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৪, দুপুর ০৪:২১

জাপার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ পাঠ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলে পরিস্থিতি কী হতে পারে- সে বিষয়ে দলটির প্রেসিডিয়ামের একাধিক নেতা জানান, যদি এরশাদ শেষ পর্যন্ত শপথ না নেন এবং দলের কোনো কোনো এমপি তাকে অনুসরণ করেন, তাহলে সেক্ষেত্রে দলটি আরেক টুকরা হতে পারে। একটি অংশ শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দিয়ে সরকারের সঙ্গে থাকতে পারে, আরেকাংশ এমপি পদত্যাগ করে এরশাদের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। জাপার এই নেতারা জানান, এরশাদ, তার ভাই জিএম কাদের এবং আরও দুই-তিনজন ছাড়া নতুন এমপিদের সবাই শপথ নেবেন। তারা প্রয়োজনে জাপা ভেঙ্গে সংসদে থাকবেন। এই নেতারা একইসঙ্গে এই ধারণাও দেন যে, নির্বাচন শেষে সরকার গঠন এবং নতুন সংসদের অধিবেশন বসাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বর্তমান অবস্থান থেকে ফের ইউটার্ন নিয়ে সরকার ও সংসদমুখী হতে পারেন এরশাদ।

এদিকে আওয়ামী লীগসূত্রে জানা গেছে, এরশাদের ভূমিকা নিয়ে তাদের মধ্যেও প্রচণ্ড অস্বস্তি রয়েছে। ‘সব দল না এলে জাপাও নির্বাচনে যাবে না’-এরশাদ দীর্ঘদিন এমন বক্তব্য দিয়ে আসলেও তিনিই হঠাত্ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এমনকি তার স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ভাই জিএম কাদেরসহ দলের নেতারা নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। আকস্মিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে এরশাদ আবার সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলেন। এখন সামনে এমপিদের শপথ গ্রহণ এবং সরকার গঠনের সময় এরশাদ যদি সাড়া না দেন তাহলে নতুন ঝামেলা দেখা দেবে। কোনো কারণে তখন তাকে ম্যানেজ করা গেলেও এভাবে পদে পদে নানা শর্ত জুড়ে দিতে পারেন। তাছাড়া কিছুদিন পর এরশাদ যে আবার বেঁকে বসবেন না, এরও কোনো নিশ্চয়তা নেই।

অন্যদিকে এরশাদ ও জাপার রহস্যজনক আচরণে দলটির কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকরা সবাই বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। একদিকে এরশাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- তিনি নির্বাচনে নেই। আবার তার স্ত্রী রওশন এরশাদসহ বেশিরভাগ নেতাই নির্বাচনে পুরোদমে সক্রিয়। এরশাদ বলছেন, তার দলের নেতারা মন্ত্রিসভায় নেই। আবার দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নিজেও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় দপ্তরে গেছেন।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, তারা সবাই এখনও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপদেষ্টা হিসাবে বহাল রয়েছেন। দলের কেউ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে তার জানা নেই। দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলছেন, এরশাদের সিদ্ধান্তই দলের সিদ্ধান্ত, তারা কেউ এরশাদের সিদ্ধান্তের বাইরে নেই। সূত্রমতে, রুহুল আমিন হাওলাদার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী হিসাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজ বাসায় তিনি নিয়মিত মন্ত্রণালয়ের ফাইলে স্বাক্ষর করছেন। মন্ত্রিসভায় থাকা জাপার এক নেতা জানিয়েছেন, রুহুল আমিন হাওলাদার কয়েকদিন আগে মন্ত্রী হিসাবে বিমান কেনার চুক্তিও করেছেন। জানা গেছে, একমাত্র জিএম কাদের বাণিজ্য মন্ত্রী হিসাবে কোনো কাজ করছেন না। এছাড়া জাপার অন্য সকল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টা নিজ নিজ দপ্তরে না গেলেও বাসা থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

নির্বাচনের মাত্র তিনদিন আগে দলের ইশতেহার ঘোষণা নিয়েও রহস্যজনক আচরণ করছে জাপা। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ইশতেহার উপস্থাপন করেন। তিনি দাবি করেছেন, এই ইশতেহার এরশাদের অনুমোদিত, দলের পক্ষেই তিনি ইশতেহার দিয়েছেন। এছাড়া জাপা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলেও পরিষ্কার করেন তিনি। জিএম কাদের ও রুহুল আমিন হাওলাদার এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানালেও তারা কিংবা এরশাদের পক্ষ থেকে এর আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি। জিএম কাদের ও রুহুল আমিন হাওলাদার বিষয়টিকে চেপে গেছেন। জিএম কাদের বলেন, সিএমএইচে থাকা এরশাদের সঙ্গে গত এক সপ্তাহ ধরে তার কোনো যোগাযোগ নেই।

তবে এরশাদপন্থী হিসাবে পরিচিত, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বলেছেন, এরশাদ কাউকে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার দায়িত্ব দেননি। যারা ইশতেহার দিয়েছেন তারা সেটি নিজ দায়িত্বে করেছেন। যেই নির্বাচন বর্জন করার অপরাধে এরশাদকে আটকে রাখা হয়েছে, সেই নির্বাচনের জন্য এরশাদ তফসিল ঘোষণার অনুমোদন দিতে পারেন না। যারা জাপাকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করছে, একদিন দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। এরশাদকে আটকে রাখার প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে থানা জাপা আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied