আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

বিদ্যালয়ে হামলা: প্রধান শিক্ষকের দেয়া ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকার ক্ষতির তালিকা নিয়ে প্রশ্ন

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০১৪, বিকাল ০৫:৪৪

সুত্র মতে ওই ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন ডিমলা উপজেলার ডালিয়া তিস্তা কলেজের প্রভাষক সুজন কুমার দাস। তিনি গত ১১ জানুয়ারী বাদী হয়ে ডিমলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ( মামলা নম্বর ১৫)। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন অজ্ঞাত ১শত থেকে দেড়শতাধিক ব্যাক্তি ৪ জানুয়ারী রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ৮টি ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দেয়। এই মামলার পাশাপাশি ওই ঘটনায় উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হকের দেয়া বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি তালিকা সংযুক্ত করে দিয়েছেন।

ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় ক্রমিক নম্বর ২৪ পর্যন্ত রয়েছে দুইটি ডেক্সটপ কম্পিউটার ১ লাখ, ১টি মালটিমিডিয়া প্রজেক্টর ১ লাখ ৫ হাজার, বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি ২লাখ ৫০ হাজার, ২টি স্টিল আলমিরা ২০ হাজার, ১টি কাঠের আলমিরা ৬ হাজার, ১টি কাঠের র‌্যাগ ১০ হাজার,১টি হাফ সেক্রেটারী টেবিল ৮ হাজার, ৪টি ছোট টেবিল ২০ হাজার, ৯টি কাঠের চেয়ার ২০ হাজার, ১৫টি প্ল্যাষ্টিকের চেয়ার ৮ হাজার, ৪টি গদির চেয়ার ২০ হাজার,২টি সিলিং ফ্যান ৬ হাজার,৮০টি ওয়ালচার্ট ১৫ হাজার, ১টি টিউবয়েল(নলকুপ) ৫ হাজার, বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের ১টি কক্ষ নির্মানের ব্যয় ৫ লাখ,১০টি ম্যাপ ৫ হাজার, ২টি দেয়ালঘড়ি ১ হাজার, বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর ছবি ১ হাজার, ১২শত লাইব্রেরীর বই ১ লাখ, ২৫০টি বিশ্ব সাহিত্য পরিষদের গল্পের বই ৪০ হাজার, ২টি কম্পিউটার টেবিল ৫ হাজার,১০ জোড়া বেঞ্চ ১৫ হাজার ও অন্যান্য ক্ষতি ৫০ হাজার। এই নিয়ে সর্বমোট ১২ লাখ ৯০ হাজার ক্ষয়ক্ষতি দেখান প্রধান শিক্ষক। তবে তিনি ক্ষতির তালিকায় নতুন বছরের সরকারের দেয়া পাঠ্য পুস্তক বইয়ের ক্ষতির কোন সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

এ ঘটনায় ওই ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ডালিয়া তিস্তা কলেজের প্রভাষক সুজন কুমার দাসের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলে সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক তার বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির যে ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকার তালিকা দিয়েছিলেন সেটি ওই মামলার সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে সোমবার দুপুরে সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হকের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন বিদ্যালয়ের কাজে তিনি দিনাজপুরে এসেছেন বোর্ড অফিসে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তার বিদ্যালয়ের বিএনপি জামায়াতের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। নতুন পাঠ্যপুস্তক বই বিষয়ে তিনি বলেন ওই বইগুলো আংশিক পুড়েছে। তবে তার তালিকা তিনি এখনও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেননি।

স্কুল পুড়ানোর সাথে কারা জড়িত ছিল এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন স্কুল থেকে আমার বাড়ি ১৩ কিলোমিটার দুরে ডিমলা সরের পচারহাটে। কারা করেছে তা জানিনা। তবে শুনেছি যারা হামলা করেছে তাদের মুখে নাকী কালো কাপড় বাধা ছিল। তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত নন এবং বিএনপির মিছিল মিটিং এ অংশ কোন দিন নেননি।

অপর দিকে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ্যাডঃ নুরুল হক মুঠোফোনে বলেন বিদ্যালয়ের ৪২ বছরের নথি থেকে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হামলাকারীরা সম্ভবত গান পাউডার বা পেট্রোল ঢেলে সব কিছু আগুনে পুড়ে ছাই করে দিয়েছে। ওই ছাই গুলো আলামত হিসাবে রয়েছে। তিনি বলেন বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা নিয়ে যারা অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়। কারন যা ক্ষতি হয়েছে তার তালিকার প্রতিটি সত্য। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ভোটের আগেই নতুন পাঠ্য পুস্তক বই অর্ধেক বিতরন করা হয় শিক্ষার্থীদের কাছে। বাকীটা ভোটের পরে বিতরনের কথা ছিল। কিন্তু ওই পাঠ্য পুস্তক বইও ওই হামলায় পুড়ে গেছে। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির তালিকার সাথে নতুন পাঠ্য পুস্তক বইয়ের ক্ষতির তালিকা ভুল বশত দেয়া হয়নি। আমরা দুই এক দিনের মধ্যে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রদান করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান জানায়, গত ২জানুয়ারী সারাদেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার কথা। আমি ১২জানুয়ারী ডিমলায় যোগদান করি। সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র পুড়ে দেয়ার ঘটনাটি ঘটেছে আমি ডিমলায় যোগদানের পূর্বে। প্রধান শিক্ষক কেন বই বিতরন করেনি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন যেহেতু থানায় মামলা হয়েছে পুলিশ তদন্তে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে মর্মে আশা প্রকাশ করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সলিমুল্লাহ বলেন, সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরনে পুর্বে ৪জানুয়ারী ভোটকেন্দ্র থাকায় অফিসটি পুড়ে যায়। তবে কি পরিমান বই পুড়ে গেছে প্রধান শিক্ষক হিসাবে দিতে পারেনি। তার কাছে তালিকা চাওয়া হলেও সোমবার পর্যন্ত তিনি তালিকা দেননি। সরকারী ভাবে ২জানুয়ারী নতুন বই বিতরনে কথা থাকলে কেন বিতরন করা হয়নি বিষয়টির সদউত্তর দিতে পারেনি তিনি।তবে ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতির ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকার তালিকার একটি কপি দিয়েছেন।

এদিকে ওই আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার অভিযোগ করে বলেন সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হক একজন বিএনপি নেতা। বিরোধীদলের অবরোধ ও হরতালের সময় ওই প্রধান শিক্ষককে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ১৮ দলের মিছিলে দেখা যায়। এ ছাড়া ওই প্রধান শিক্ষকের শ্যালক ডিমলা ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আফতাব উদ্দিন সরকার আরো বলেন ওই বিদ্যালয়ের হামলার ঘটনাটি ছিল ওই প্রধান শিক্ষক ও তার শ্যালকের পূর্বপরিকল্পনা। ফলে তারা বিদ্যালয়ে মুল্যবান যন্ত্রপাতি অনেক আগেই গোপনে সরিয়ে ফেলে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেন।

ডিমলা থানার ওসি আজিমুদ্দিন জানান সাতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের যে ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দেয়া হয়েছে । বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied