আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ॥ চেয়ারম্যান পদে ১২ জনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৭ জন প্রার্থী       নীলফামারীতে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালন       নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু       কিশোরীগঞ্জে পাঁচতলা ভবন থেকে পড়ে এক ব্যাক্তির রহস্যজনক মৃত্যু       উপজেলা নির্বাচনে জাপার প্রার্থী হতে চান না কেউ      

 width=
 

মানুষ বুঝে কোনটা চাল, কোনটা কৌশল আর কোনটা অপকৌশল

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, দুপুর ০৩:১৯

ইদানিং উপজেলা আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একশ্রেণির মানুষ এক করে দেখছেন। তারা বুঝাতে যাচ্ছেন, সংসদের বাইরে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমানের সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অধীনে না করে যে ভুল করেছে তার প্রমাণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এমন উদ্ভট যুক্তির অবতারণা করে মূল সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দূর্বলতা এত প্রকট আকার আর কোনো দিন ধারণ করেছিল কি না জানি না। অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বর্তমানে টেলিভিশনের হেডলাইন নিউজ আর বক্তৃতা বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখে কোমায় পাঠানো পরিকল্পনা নিয়েছে। ৯৭টি উপজেলা নির্বাচনে শাসক দলের পরাজয় সরকারে হালে এতটুকু পানি ঝাপটা লাগবে না জানি কিন্তু এতে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনের পরিস্থিতি এক্স-রে হয়ে যাচ্ছে। এমন ফলাফলের কারণ কী?

এদেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে, সরকার বিরোধী দলের ওপর যে নির্যাতন চালাচ্ছে তারই ফল পাচ্ছে উপজেলা নির্বাচনে। জেল-জুলুম, হত্যা, নির্যাতনের মাত্রা যতই বাড়বে ততোই সরকারের জনপ্রিয়তায় ধস নামবে যা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার যে নির্বাচনই দিক না কেন সেই নির্বাচনে যে সরকারি দল সুবিধা করতে পারবে না তা সরকারি দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বুঝলেও প্রকাশ করেন না। এই প্রকাশ না করাটাই এক সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একমাত্র পুরানো দলটির অবস্থান যে কোথায় গিয়ে দাড়ায় তা হয়ত সামনে দেখা যাবে।

অন্যদিকে বিরোধীদলের পলাতক সেনাপতিগণ যখন রাজপথ থেকে উধাও ঠিক তখনও তৃণমূলে ঢাকার বাইরে কর্মীরা ছিল রাজপথে। জনগণ দেখেছে তাদের। একদিকে পুলিশী নির্যাতন অন্য দিকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের গুলি খাওয়ার ভয়তে গর্তে লুকানো দৃশ্য দেখে কর্মীরা হতাশ হলেও তৎকালীন ১৮ দলীয় জোটের সবচেয়ে বড় সাফল্য যে, তাদের জোটের মধ্যে কেউ ভাঙন ধরাতে পারেনি। কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক, বেগম জিয়া বাংলাদেশে গত ৫ জানুয়ারির যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল তা যে কোনো নির্বাচনই ছিল না, তা তিনি দেশ-বিদেশে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। পাশাপাশি পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারার জন্য দেশ-বিদেশে তিনি নিন্দিতও হয়েছেন। যদিও বিএনপির রাজনীতিতে এ ধরনের কালচারকে তারা কখনই সমর্থন করে না।

উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ কেন জানি বিগত দিনে সাধারণ মানুষকে হত্যা করার জন্য শুধু বিএনপি তথা জোটকে দায়ী করছেন না। তাদের সন্দেহের তালিকায় আরো অনেক বিখ্যাত দলও অর্ন্তভুক্ত আছে। এই মুহূর্তে ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়ার একটি মাত্রই পথ খোলা আছে আর তা হলো বিরোধী দলের ওপর থেকে দমন-পীড়ন, নির্যাতন বন্ধ করা এবং বিচার বর্হিভুত হত্যাকান্ড বন্ধ করা। এছাড়া বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। এই পুরো বিষয়গুলো এদেশের সাধারণ মানুষ খুব ভালো ভাবে পর্যাবেক্ষন করছেন। যার ফল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পড়তে শুরু করেছে। ক্ষমতাসীনরা যদি বিরোধী দলকে দমন-পীড়ন বন্ধ করেন তাহলে দেখা দ্রুতই যে কোনো নির্বাচনে বিরোধী দলের সিট পাওয়ার হার কমে আসবে। কারণ তখন তাদের এলাকার মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে বিভিন্ন কারণে। কিন্তু বর্তমানের বিরোধী দল নির্যাচিত হওয়ার খুব সহজেই সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই বড় কোনো আন্দোলন যে মাথাচারা দিয়ে ওঠবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সাধারণ মানুষ বুঝে কোনটা চাল, কোনটা কৌশল আর কোনটা অপকৌশল?

জাওয়াহেরির অডিও বার্তাটি যে আপলোড করেছিল অবশ্যই সে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে এজন্য তাকে আইনের সোপর্দ করা হয়েছে। কিন্তু যে সব টেলিভিশন এই বার্তাটি ছবিসহ প্রচার করলো তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো? টেলিভিশনের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষ এই বার্তাটি শুনতে পেয়েছে। অতএব একজন সাধারণ মানুষ অপরাধ করলে সেটা যেমন অপরাধ ঠিক তেমনি যেকোনো ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি সেই কাজটি করলে সেটাও অপরাধ। আইনের প্রয়োগ সবক্ষেত্রে নিশ্চিত করাটাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত।

রাশেদ আজাদ লেখক ও প্রাবন্ধিক

মন্তব্য করুন


 

Link copied