আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

নেই পাকিস্তানী হানাদার, তবুও ঠাকুরগাঁওয়ে বীরাঙ্গনাদের হাহাকার

মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১২, রাত ১১:৩৭

তানভীর হাসান তানু,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ‘আজ নেই বর্গী, নেই ইংরেজ, নেই পাকিস্তানী হানাদার, আজও তবু আমার বুকে কেন শূন্যতা আর হাহাকার।’

‘হায়দার হোসেনের’ গানের এই কথাগুলোর মতো আজও শুধুই হাহাকার আর আতঙ্ক নিয়ে জীবনযাপন করছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বীরাঙ্গনারা। স্বাধীনতার একচল্লিশ বছর পরও জেলার অসীম সাহসী বীরাঙ্গনারা স্থানীয় প্রভাবশালী আর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের রোষের শিকার হচ্ছেন। সরকারি কোনো প্রকার সাহায্য বা নিরাপত্তা ছাড়াই স্বাধীনতা পরবর্তী ৪১ বছর ধরে চলছে তাদের অভাব অনটনের সংসার। শুধুই কি অভাব, ভিক্ষা করে জীবন চালাচ্ছে অনেকে। সেই সঙ্গে রয়েছে অপমান আর লাঞ্ছনা। জেলার রানীশংকৈল উপজেলার দুর গ্রামে পড়ে থাকা এই বীর নারীদের সহযোগিতায় আজও যেমনি এগিয়ে আসেনি কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান তেমনি এগিয়ে আসেনি বে-সরকারি কোনো সংগঠনও। একাত্তরের মার্চেই পাকিস্তানী সেনারা ঢুকে পড়েছিল জেলার রানীশংকৈল উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে। হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বিচারে করেছে হত্যা লুট আর ধর্ষণ। একচল্লিশ বছর আগে রানীশংকৈলে পাকবাহিনীর এ বর্বরতার ঘটনা স্থান করে নিয়েছিলো বিশ্ব গণমাধ্যমেও। সে সময় এলাকার রাজাকাররা বিভিন্নস্থান থেকে পাকবাহিনীকে নিয়ে এসে উপজেলার দোশিয়া নয়াবস্তি গ্রামের ৪ বোন বুধি, মোখলেছা, মালেকা ও আমেনাকে তুলে দিয়েছিল তাদের হাতে। একটানা ৯ মাস তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করেছে পাকবাহিনী। সেই সঙ্গে পাকবাহিনীর সঙ্গে গড়ে তাদের সামান্য সম্পর্ক। সেই সুবাদে কৌশলে অনেক বাঙ্গালীর জীবন এবং নারীর সম্ভ্রমও বাঁচিয়েছেন তারা। চার বোনের একজন মোখলেছা। ভিক্ষা করে চলছে তার সংসার। নিজের কোনো জমি জায়গা না থাকায় থাকছেন উপজেলার তৎকালীন জমিদার টংকনাথের পুরাতন ভাঙ্গাচোরা ভবনের এক কোনে। ৭১‘ এ যুদ্ধ চলাকালীন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পাকবাহিনীর হাতে আর আজ ৪১ বছর পরও একইভাবে নির্যাতন হচ্ছেন সমাজ স্বীকৃতির কাছে। জীবনের শেষ বেলায় তার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই তার। চান শুধু সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মান। মোখলেছা ও তার বোনদের জীবনের পতন ঘটিয়েছে যারা তারা আজও সমাজে দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন। বীরাঙ্গনা মোখলেছা ভয়াল সেই দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘দেশের জন্য ইজ্জত দিয়েছি, অনেকের জীবন বাঁচিয়েছি। কিন্তু তার বিনিময়ে সমাজ আজও দিয়ে যাচ্ছে কলঙ্কের গ্লানি।’ পাকসেনাদের হাতে বেঁচে যাওয়া সুনীল বর্মণ ওরফে টেপসু বর্মণ মোখলেছা ও বুধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বলেন, ‘তাদের দু‘বোনের কৌশলের কারণে আমি প্রাণে রক্ষা পেয়েছি।’ পাশের গ্রাম নিয়নপুর। বীরাঙ্গনা মোখলেছার বোন মালেকা। তার অবস্থা আরও করুন। উপজেলার গোগর গ্রামে রমেসার যুদ্ধের ডামাডোলের সময় বিয়ে হয়েছিল। বাপের বাড়িতে নাইওর খেতে এসে পাকসেনাদের লালসার শিকার হন তাকে। স্বামী-সংসার হারিয়ে নীড়হারা পাখির মতো আজ ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাদের মতো ফাড়াবাড়ি গ্রামের হাসিনা, পকুম্বা গ্রামের নুরজাহান, নিয়নপুরের হাসিনা, উত্তগাঁও গ্রামের হুলফুলি, রাউথনগর গ্রামের রেবেকা, বলবানু, নিহার রানী দাস, জবেদা, আশ্বির্না বেগম ও রায়পুর গ্রামের রাবেয়া বেগমসহ এই উপজেলার বহু নারী এখনও জীবন সংগ্রামে লড়ছেন। রানীশংকৈল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিট কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘এই এলাকায় অনেক বীরাঙ্গনা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৫ বীরাঙ্গনার তালিকা করা হয়েছে। এরা সমাজে অবহেলিত আর বঞ্চনার শিকার।’ ‘এদের মধ্যে ১১ নারীকে গেল বছর বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসে সম্মাননা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এনামুল হক বলেন, ‘তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পূনর্বাসনের জন্য যাচাই বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied