আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

অর্ধ-পর্নো, অর্ধ-ভুতুড়ে

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০১৪, বিকাল ০৭:১২

শহরের কিছু জীর্ণ-পুরনো, উড়শকীটদষ্ট আসন বিশিষ্ট সিনেমা হলে ‘সেই সব’ সিনেমা লাগত। ‘সেই সব’ সিনেমা অপাপবিদ্ধ সুবোধ বালকদের জন্য নয়। সেই সব সিনেমা ছিল আটের দশকের স্কুল-কাট মারা, বিড়ি ফোঁকা, ডেঁপো বখাটে ছোঁড়াদের। পানের পিকমাখা প্রস্রাবাগারে স্কুলের পোশাকটি বদলে হলে ঢুকে পড়া আর বাড়ি ফিরে সিঞ্চিত অন্তর্বাসটি সযত্নে লুকিয়ে ফেলার নিষিদ্ধ আনন্দ উদ্যাপন। সিনেমার পোস্টারে নায়িকার অঢেল শরীর-সম্পদে সমাজরক্ষকেরা চক্ষুলজ্জার দায়ে আলকাতরা মাখিয়ে রাখতেন। সেই আলকাতরার কালিতে কালিমালিপ্ত হবার উদ্দামে যে সব সদ্য গোঁফ-গজানো ছেলেপিলের দল সেই সময় প্রচুর বীর্যপাত করেছিলেন, আজ তাঁরা বাবা হয়েছেন। রামসে ভাইদের তৈরি ‘সেই সব’ ‘A’ মার্কা ‘C’ গ্রেডেড সিনেমা আশি থেকে নব্বই সাল অবধি ভালই করে খেয়েছিল। পুরানা মন্দির, ভিরানা, দো গজ জমিন কে নিচে, ঠিকানা, বন্ধ দরবাজা- শরীর এবং বীভৎসতার নিম্ন মানের পরিবেশনাই ছিল এ সব ছবির মূলধন। ঠিক সেভাবেই লাস্যময়ী পিশাচিনীর ঘাড়ে চেপে পুরনো বাজারকে আজকের মাল্টিপ্লেক্সে ফের ধরতে এসেছেন একতা কপূর গোষ্ঠী তাঁদের নতুন ছবি রাগিনী এমএমএস ২ নিয়ে। কিন্তু মুশকিল হল, আজকের যৌনতার বাজারে সুলভ হয়েছে পর্নোগ্রাফি। না চাইলেও মিলছে এমএমএস ক্লিপিং-এ চাবির গর্তে উঁকি মেরে অপরের যৌন মিলন দেখে নিজের অদম্য স্পৃহা নিবারণের বিবিধ উপায়। আজকের উনিশ-কুড়ির কাছে ভয়ারিজম প্রায় এক জন্মগত অধিকারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই উন্মুক্ত প্রজন্মের কাছে রাগিণী এমএমএস ২-এর পরিচালক গল্প ফাঁদলেন সেই হানাবাড়ি, সেই অর্ধ-পর্নো অর্ধ-ভুতুড়ে জগাখিচুড়ির। এই ধারাবাহিকের প্রথম ছবিটি বরং অনেক বেশি আধুনিক ছিল। কিন্তু রাগিণী এমএমএস ২-তে না আছে রাগিণী, না আছে এমএমএস। পুরোটাই আশির সেই চেনা ছক। হরেক রকম নির্বোধ কামাতুর চরিত্র, পিশাচিনীর অতৃপ্ত আত্মা এবং হঠাৎ আচমকা কিছু 'নাইতে যাব, চুল ভেজাব না' গোছের মৈথুন দৃশ্য। শুধু 'হরেক্স' (হরর্+সেক্স) নামকরণটাই ‘জেন-এক্স’ গোছের, বাকিটা সেই রামসে ভাইদের অনুব্রজন বই আর কিছু নয়। তাই ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে, 'হরেক্স'-এর সঠিক যোগফল অন্তত এক্ষেত্রে হওয়া উচিৎ 'হরিবল+সেক্স'! আসলে ভারতীয় সিনেমায় ভূতের ছবির দুরবস্থা এবং যৌন দৃশ্য নির্মাণে শিশুসুলভ অপারগতা বড় বিরক্তিকর। যদি সেন্সর-বোর্ড ইত্যাদির নিষেধাজ্ঞায় উন্মুক্ত স্তনযুগল দেখানো না যায়, তবে অন্তত তা আবছা করে দেবার, হাস্যকর আলকাতরা লেপার সমান বালখিল্যতা বন্ধ করা উচিৎ। ভারতীয় সিনেমায় ভূতের সঙ্গে যৌনতা মিলিয়ে দেওয়াটটাই তো আসলে এক ভণ্ড মূল্যবোধের রাজনীতি। ভারতীয় ‘সংস্কৃতি-মনা’ নারীরা কী করে একাধিক পুরুষসঙ্গে লিপ্ত হতে পারে! কিন্তু নারীদেহকে একাধিক পুং-দণ্ডে আত্মসমর্পণ না করালে যে প্রেক্ষাগৃহ ভরানোও মুশকিল! আবার, যৌন বুভুক্ষু ‘রুচিশীল’ পুরুষের ঔরসে সিনেমা হল প্লাবিত হওয়াও সম্ভব নয়। অতএব দুই দিক বজায় রাখার একমাত্র উপায় এই নারীকে মানবীর স্থান থেকে নামিয়ে অশুভ পিশাচিনীতে পরিণত করা। দুশ্চরিত্র পুরুষদের বীভৎস মৃত্যু দেখিয়ে যৌনতার গুপ্ত-সুখানুভুতির সঙ্গে সংযত যৌন জীবন সম্পর্কে যথেষ্ট ভীতি সঞ্চার করার এ এক চতুর বলিউডি কৌশল। এই আনন্দ এবং ভীতি, প্লেজার এবং অ্যাভারশনের দারুণ মিশেলে বলিউড অনেকদিন আগে থেকেই রপ্ত। তাহলে রাগিণী এমএমএস ২ সম্পর্কে নতুন কী বলার থাকতে পারে? সিনেমা তৈরির কারসাজি? নাহ্, সেটাও আহামরি কিছু নয়। গান এবং আবহ সঙ্গীতে বড্ড বাজার-লভ্য ‘ডিজে মিক্স’ ডিভিডি-র উগ্র ছোঁওয়াচ। ভৌতিক দৃশ্য বড় বেশি প্রকট। না বলা রহস্যের গোপনীয়তায় যে গা ছমছমে ব্যাপার আছে, অহেতুক পাউডার মাখা ভূতের চলাচল তা নষ্ট করে দেয়। কিছুটা ‘দ্য রিং’, কিছুটা ‘দ্য কনজুরিং’ থেকে নকলনবিশি দর্শকের বড় একঘেয়ে লাগে। কষ্ট হয় সন্ধ্যা মৃদুল, দিব্যা দত্তের মতো দাপুটে অভিনেতাকে দুটি ব্যর্থ চরিত্রকে সফল করার জন্য লড়ে যেতে দেখতে। বাকিদের অভিনয় তো কহতব্য নয়। আর বাকি রইলেন সানি লিওন। তাঁকে অভিনয়ের আড়ষ্টতা কাটাতে, মুখের প্লাস্টিক অভিব্যক্তিকে জীবন্ত করে তুলতে আরও পরিশ্রম করতে হবে। আর শরীর? স্বল্পবাস, অন্তর্বাস, বসনহীনা বাহু-পিঠ-ঊরুর লাস্য সবই আছে। পর্নো-বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য লেসবিয়ান চুম্বনের অবান্তর অবতারণা, দুই নারীর ওষ্ঠ আলিঙ্গনকে পুরুষের চোখের পণ্য করে তোলার বিকট দাবি- তাও আছে। কিন্তু এসব দেখতে হলে আপনার রাগিণী এমএমএস ২ দেখার প্রয়োজন কি! এক্ষুণি নতুন একটা ট্যাব উইন্ডো খুলে আপনার সার্চ ইঞ্জিনে টাইপ করুন ‘Sunny Leone’। পেয়ে যাবেন আপনি যা চান তার অফুরন্ত ভাণ্ডার। শুধু ‘সেফটি সার্চ’ বন্ধ করতে ভুলবেন না কিন্তু!

মন্তব্য করুন


 

Link copied