আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

রংপুরের যতো বধ্যভূমি ( পর্ব ১১)

সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০১৪, সকাল ০৯:৫৪

মুক্তিযুদ্ধে নয় মাস সারাদেশে যখন পাকিস্তানি সৈন্যরা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তখন উত্তরের জেলা রংপুরের শান্তিপ্রিয় অথচ বিপ্লবী মানুষেরাও রক্ষা পায়নি। রংপুরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক বধ্যভূমি। সংস্কার ও সংরক্ষণে অবহেলার কারণে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে এই বধ্যভূমিগুলো। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে রংপুরের বধ্যভূমি নিয়ে উত্তরবাংলা ডটকম এর বিশেষ আয়োজন “রংপুরের যতো বধ্যভূমি” শিরোনামে আজকে প্রকাশিত হলো  ১১ তম পর্ব। লিখেছেন রিয়াদ আনোয়ার শুভ:

নব্দীগঞ্জ গণহত্যা :

১৩ এপ্রিল ১৯৭১ মঙ্গলবার, মধ্যরাতে রংপুর শহর থেকে ৭ কিমি দূরে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশে নব্দীগঞ্জ এলাকায় এসে দাঁড়ায় পাক হানাদার বাহিনীর কনভয়। আশপাশে তেমন বসতি ছিল না তখন। গভীর রাত, চারদিকে সুনসান। পাকিস্তানি বাহিনীর গাড়ির শব্দে আশে পাশের বাড়িগুলোর লোকজন জেগে উঠলেও কারো মুখে কোনো কথা ছিল না সেদিন। সবাই ছিল ভীত সন্ত্রস্ত। হটাৎ করেই একটানা গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠে পুরো অঞ্চল। এক সময় গর্জন তুলে ফিরে যায় মিলিটারি কনভয়। অজানা শঙ্কায় এলাকাবাসী অপেক্ষা করতে থাকেন দিনের আলো ফোটার। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে একজন একজন করে ঘটনাস্থলে আসেন আশেপাশের লোকজন। দেখতে পান, পিছমোড়া করে হাত এবং চোখ বেঁধে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের ১১ জন বাঙ্গালী সদস্যকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে পাক হানাদার বাহিনী। কাল বিলম্ব না করে স্থানীয় লোকজন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগী এই সব বীর শহীদদের নামাজে শেষে একই স্থানে ১১ জনকে দাফন করে। প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীর মতে সেদিন নব্দীগঞ্জ বধ্যভূমিতে সেদিন যাদের হত্যা করা হয়েছিল, তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা। ঠাকুরগাঁও থেকে এই সব বাঙ্গালী ইপিআর সদস্যদের ধরে এনে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অমানুষিক নির্যাতন শেষে নব্দীগঞ্জে এনে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর পরই কিছু উৎসাহী এলাকাবাসীর উদ্যোগে নব্দীগঞ্জের এই গণকবরকে দেয়াল দিয়ে চিহ্নিত করে রাখে। তবে সরকারীভাবে দীর্ঘ দিন এই বধ্যভূমি সংরক্ষণের কোন উদ্যোগই গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয়দের মধ্যে যারা বয়োজ্যেষ্ঠ তাঁরাই শুধু জানেন একাত্তরে কি নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনে প্রাণদানকারী ১১ জন বাঙালি ইপিআর সদস্য। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কজনই বা জানেন এই বধ্যভূমি সম্পর্কে? তবে আশার কথা যে, দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অতি সম্প্রতি নব্দীগঞ্জ বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। যা তরুণ প্রজন্মকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে সাহায্য করবে বলেই মনে করেন স্থানীয় লোকজন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied