আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

পাল্টে গেছে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের সার্বিক চিত্র

বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৪, সকাল ০৭:৪৪

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে শপথ গ্রহণ করে। বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানীও ছিল মুজিবনগর। এরপর বিখ্যাত হয়ে পড়ে এ গ্রামটি। মুজিবনগর থেকে পরিচালিত নয় মাসের যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। মুজিবনগরবাসী বঙ্গবন্ধুর নামে ১৯৭১ সালে তৎকালীন বৈদ্যনাথ তলা গ্রামকে মুজিবনগর নামকরণ করে। এই মুজিবনগরের সাথে জড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুজিবনগরকে মূল্যায়ন করার লিখিত নির্দেশ দেন। সেই থেকে শুরু গ্রামটির সামগ্রিক চিত্র বদলে যাবার। এখানে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ।

এখন গ্রামটি দেশী বিদেশী পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত। মুজিবনগরবাসির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুজিবনগর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে পাকা সড়ক হয়েছে। বদলে গেছে গ্রামের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থা। বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে সেদিন গার্ড অব অনার দিয়ে ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়ে যাওয়া সেই ১২ আনসার সদস্য পেয়েছেন রাষ্ট্রিয় মর্যাদা, পেয়েছে বসবাসের জমি ও পাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ভাতা। মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান উল¬াহ জানান, শতকোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে মুজিবনগরে।

৪২ একর জমির উপর নির্মিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র প্রকল্প। মুজিবনগরকে করা হয়েছে উপজেলা। জনগনের যানমালের নিরাপত্তার জন্য ২০১০ সালে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মডেল ও একটি পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। এছাড়া ২০১১ সালে মুজিবনগর ডিগ্রী কলেজকে জাতীয়করণ করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মুজিবনগর উপজেলার গোপালনগর, রতনপুর ও মোনাখালী গ্রামে ভৈরব নদের ওপর ব্রিজ হয়েছে।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন জানান, মুজিবনগর উপজেলার উন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর। এপর্যন্ত থানা ভবন, উপজেলা ভবন, সড়কের উন্নয়ন, হাসপাতাল, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। শত কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে নানা অবকাঠামো উন্নয়নসহ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্মৃতি মানচিত্র ও জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে কিছু স্থাপনা যেমন-পর্যটন মটেল ও শপিং মল, শিশু পল¬ী, মসজিদ, পোস্ট অফিস ও টেলিফোন অফিস, আভ্যন্তরীণ রাস্তা ও হেলিপ্যাড এবং কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ দফা ভিত্তিক গোলাপ বাগান নির্মাণ করা হয়েছে।

এখানে নির্মিত সবুজ বুকের উপর উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বাংলাদেশের স্মৃতি মানচিত্র। মানচিত্রের বুকে মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরকে দেখানো হয়েছে। তারমধ্যে তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন দেশের বেনাপোল, বনগাঁও, বিরল, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে শরণার্থী গমন, হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ধ্বংস, আ স ম আব্দুর রবের পতাকা উত্তোলন, শাহজাহান সিরাজের ইশতেহার পাঠ, শালদাহ নদীতে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মুখ যুদ্ধ, কাদেরীয়া বাহিনীর জাহাজ দখল ও যুদ্ধ, পাক বাহিনীর সাথে কামালপুর, কুষ্টিয়া ও মীরপুরের সন্মুখ যুদ্ধ, শুভপুর ব্রীজের দুপাড়ের মুখোমুখি যুদ্ধ, চালনা ও চট্টগ্রাম বন্দর ধ্বংস, পাহাড়তলী ও রাজশাহীতে পাক হানাদার বাহিনীর হত্যাযঞ্জ, জাতীয় শহীদ মিনার ধ্বংস, জাতীয় প্রেস ক্লাবে হামলা, সচিবালয়ে আক্রমন, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও জগন্নাথ হলের ধ্বংসযজ্ঞ, তৎকালীন ইপিআর পিলখানায় আক্রমন, রায়ের বাজার বধ্যভূমি, বুদ্ধিজীবী হত্যা।

মানচিত্রের চর্তুদিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যাক্তিদের সাহসী ভূমিকার ছবিসহ ৪০ টি ভাস্কর্য্য শিল্প কর্ম নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মধ্যে তৎকালীন সেনাপ্রধান, উপপ্রধান, বীর উত্তমদের, জাতীয় চার নেতা, তারামন বিবি, সেতারা বেগমের মূর্তমান ছবিসহ ব্রঞ্চের তৈরী ২৯টি আবক্ষ ভাস্কর, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ৩০ নেতার তৈলচিত্র রয়েছে। যা থেকে জানা যাবে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী অবদান ও জীবনবাজি এবং মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন নেতাদের দেশপ্রেম।

মানচিত্রের বাইরে বড় ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, ২৫ মার্চের কালো রাত্রির হত্যাযজ্ঞ, পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নারী নির্যাতন ও সম্ভ্রমহানী, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ৭১ এর ১৭ এপ্রিল এই মুজিব নগরে দেশের প্রথম সরকারের শপথ ও সালাম গ্রহণ, মেহেরপুরের স্থানীয় ১২ আনসার সদস্য কর্তৃক প্রথম সরকার প্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ সরকার প্রধানদের গার্ড অব অনার প্রদান, সিলেটের তেলিয়াপাড়ায় ১১ জন সেক্টর কমান্ডারদের গোপন বৈঠক, মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারদের সেক্টর বন্টন সভা ছাড়াও অরোরা নিয়াজী ও একে খন্দকারের উপস্থিতিতে পাক হানাদার বাহিনীর আত্বসমর্পনের চিত্র নির্মিত ভাস্কর্য্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মুজিবনগর প্রকল্পের আওতায় স্থল বন্দর চালুর দাবি জানিয়েছে জেলাবাসী। যা হলে মেহেরপুরকে বানিজ্যিক জেলাতে রূপান্তর করা যাবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied