আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

বাণিজ্যমন্ত্রী কাঁদিলেন, হাসিলাম আমরা

শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৪, রাত ০৮:১০

মাহবুব মিঠু:

রানাপ্লাজার বর্ষপূর্তির ঠিক দু’দিন আগে আরেকটি মশকরা মঞ্চস্থ হোল সাভারে। গত বিতর্কিত নির্বাচনে একতরফাভাবে ভোটে জিতে সাভারের আওয়ামিলীগ থেকে নির্বাচিত এমপি ডাঃ এনামুর রহমানের হাতে ফুলের মালা দিয়ে দলে যোগ দেন রানাপ্লাজা হত্যাকান্ডের মূলহোতা, সাভার পৌর যুবলীগের যুগ্ন-আহবাহক, সোহেল রানার বাবা আবদুল খালেক ওরফে কুলু খালেক। বর্ষপূর্তির ঠিক দু’দিন আগে এই নাটক ভুক্তভোগীসহ সারা জাতির সাথে এক ধরনের রসিকতাই বলতে হয়। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের কেউ এখনো শাস্তি না পেলেও অভিযুক্ত পরিবারের একজন পুরস্কৃত হলেন।

যার কাছে কুলু মুরিদান গ্রহণ করল, উনি আর কেউ নন, স্বয়ং ডাঃ এনাম। যিনি রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় আহত নিহতদের সেবা প্রদান করে অনেকের কাছে ফেরেশতা হয়ে গিয়েছিলেন। পরের কলংকিত ইতিহাস সবার জানা। সেই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে অবৈধ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি সংসদ সদস্য হন। তখনো মানুষ ভাবেনি যে, বিস্ময়ের আরো বাকী আছে। তার হাতে কুলু খালেকের শিষ্যত্ব গ্রহণ বিস্ময়ের ষোলকলা পূর্ণ করে। রানা প্লাজার ব্যবসা থেকে ফেরেশতারূপী এনাম সাহেব এতোটা মুনাফা নিবেন তা হয়তো কেউ ভাবেনি। ডাঃ সাহেব রানা প্লাজায় আহত নিহতদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে নমিনেশন বাগিয়ে নিলেন। এক তরফা নির্বাচনে জিতেও আসলেন। আবার সেই গণহত্যার সাথে জড়িতদের হাত থেকে ফুলের মালা নিয়ে প্রমাণ করলেন, তিনি আসলে ব্যাতিক্রম কেউ নন। ’মানবতা’ তার কাছে নিছক উপরে ওঠার পুঁজিবাট্টা।

ডাঃ এনাম বেনামে রানা প্লাজার ট্রাজেডি নিয়ে আর কতো ব্যবসা (ব্যবসা শুধু অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, নমিনেশন বাগানোটাও একটা ব্যবসা) করেছেন তা কি আমরা কখনো জানতে পারব? জেনেই বা লাভ কি?

আমাদের আবেগ এতো বেশী লোক দেখানো আদিখ্যেতায় পূর্ণ যে গিনিজ বুকে নাম ওঠাতে অনেক কিছুই লাখে লাখে মানুষ দল বেঁধে করি। কিন্তু সত্যিকার জাতি হিসেবে গর্ববোধ করার মতো কোন কাজে তেমন উৎসাহ নেই।

কিছুদিন আগে খবরে দেখলাম রানাপ্লাজার দূর্ঘটনায় যারা নানাভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করে কাজ করতে পারছে না সে রকম কিছু মানুষ সাহায্যের জন্য সংশ্লিষ্ট স্থানে গেলে তাদের বলা হয়, সাহায্য পেতে হলে হাত, পা কিম্বা শরীরের কোন অঙ্গহানি দেখাতে হবে। সমালোচকরা বলে, রানাপ্লাজার দূর্ঘটনাকে দেখিয়ে যে কোটি কোটি টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হয় তার অতি ক্ষুদ্র অংশই ভুক্তভোগীদের হাতে পৌঁছে।

আরেকটি খবর আজকে (২৪শে এপ্রিল, ১৪)বেশ নজর কেড়েছে। রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে রানাপ্লাজার ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ক্ষতিগ্রস্তদের কথা স্মরণ করে কেঁদেছেন।

উপরে বর্ণিথ এতো সব রসিকতা হয়েছে সবগুলো তার দলের পক্ষ থেকেই। নাড়াচাড়া তত্ত্বের জনক তার দলেরই একজন বর্ষীয়ান নেতা, যার কাছে কুলু খালেক শিষ্যত্ব গ্রহণ করলেন তিনিও আওেয়ামিলীগের লোক, রানাপ্লাজার রানা সেও তাদের ঘরের লোক, যাদের বিরুদ্ধে রানাপ্লাজার টাকা মেরে দেবার অভিযোগ উঠেছে তারাও বাণিজ্যমন্ত্রীর দলের লোক।

তারপরেও আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী রানাপ্লাজার দূর্ঘটনায় আহত নিহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কার্যকর কিছু না করে কাঁদতে পারলেন, তা দেখে আমজনতা আমরা হেসেই গড়াগড়ি।

লেখার সঙ্গে দেয়া ছবিতে যে পা টা দেখতে পাচ্ছেন,সেটা রানাপ্লাজা দূর্ঘটনায় মারা যাওয়া কোন এক হতভাগ্য পোশাক শ্রমিকের লাশ। আজ মনে হয় এটা কোন মৃত মানুষের নিথর পা নয়। ক্ষমতাসীনদের দুর্নিতি, দলপ্রীতি, অনিয়ম এবং জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার বিরুদ্ধে এটা একটা নিরব প্রতিবাদ। মরে গিয়েও ঐ নারী এই অসভ্য এবং পঁচে যাওয়া সমাজকে লাথি দেখাতে ভুল করেননি।

আর আমরা? যারা বেঁচে আছি, নির্বোধ আর বেহায়ার মতো দায়িত্ব এড়িয়ে কেঁদেই যাচ্ছি। এই কান্না নাটকের শেষ কোথায়?

মন্তব্য করুন


 

Link copied