আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: দিনাজপুরে ছিনতাইকৃত মালামাল উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার        জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে      

 width=
 

এই অরাজকতার দায় কার?

বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০১৪, দুপুর ০১:৫০

দীর্ঘ সময় ধরেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ‘অপারেশনের’ নামে চালিয়ে আসছিল গুম-খুন-নির্যাতনের কৌশল প্রদর্শনী। আর পুলিশের এই কৌশল কাজে লাগিয়েই অপরাধীরা সারাদেশে ভয়ঙ্করভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে অপহরণ-গুম-খুনের পরিমাণ। এখন গুম-অপহরণ-খুন আতঙ্কে কাঁপছে বাংলাদেশ।

‘সাদা পোশাকে’ কাউকে তুলে নিয়ে গেলেই হলো। পুলিশ ভেবে বাধা দেওয়ারও কেউ থাকে না। দুর্গতিগ্রস্ত ব্যক্তিটিকে অপরাধীরা নাকি পুলিশ ধরে নিয়ে গেল, তার কোন নিশ্চয়তা নাই। এমনকি উধাও হওয়া ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হলেও কারা খুন করেছে তার কোন হদিস থাকে না।

অবশেষে, সাদা পোশাকে অপারেশনের নামে গুম-অপহরণের কৌশল প্রদর্শনীর দায় প্রকাশ্যে না নিলেও পরোক্ষভাবে স্বীকার করতে বাধ্য হলো পুলিশ। সর্বশেষ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে গত রোববার দিনদুপুরে গাড়িসহ অপহরণ করা হয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় নারায়ণগঞ্জের ডিসি, এসপি, র‌্যাবের সিইওসহ মোট পাঁচজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর অপহৃত কাউন্সিলরসহ ৬জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পুলিশের দায় স্বীকারের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্তটি হলো, নারায়ণগঞ্জে গত বুধবার থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ যেকোনো কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দেয় পুলিশ।

সাদা পোশাকে পুলিশের গুম-অপহরণের কৌশল প্রদর্শনী কেবল নারায়ণগঞ্জেই নয়, সারাদেশেই চলেছে। তাই, কেবল নারায়ণগঞ্জে নয়, সারাদেশেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। কেননা, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বাড়ি কিংবা গাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অজ্ঞাতস্থানে। অধিকাংশক্ষেত্রেই, গুমের এই সকল ঘটনার দায় পড়েছে পুলিশের উপর। উল্লেখ্য, গুম হওয়া ব্যক্তিরা উদ্ধার হওয়ার পর অপরাধীদের ঠিকমতো চিহ্নিত করতে না পারলেও, তাদের বিবরণেও উঠে আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে ঈঙ্গিত।

এ প্রসঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিককে র‌্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান র‌্যাবের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, অপহরণ সংক্রান্ত মামলায় গত ১০ বছরে প্রায় ২ হাজার জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর মধ্যে সাদা পোশাকে র‌্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণসহ নানা ধরনের অভিযোগে র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ের ভুয়া ৫ শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এইভাবে সাদা পোশাকে অপারেশনের নামে পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সর্বোচ্চ যতটুকু ক্ষতি করা সম্ভব ছিল; তার সবটাই করেছে। একারণেই দেশের নানান স্থানে ‘সাদা পোশাকে’ অপারেশন চালাতে গিয়ে প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে র‌্যাব-পুলিশ। ২০১৪ সালের শুরুতেই সাদা পোশাকে দায়িত্বরত পুলিশকে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ার মতো ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়।

কেবল সাদা পোশাকেই নয়, যখন-তখন রাতের আধারে পুলিশ যেভাবে নানান স্থানে অপারেশন, তল্লাসি চালায় তা একটি পেশাদার বাহিনীর পরিচয় হতে পারে না। পুলিশের এই পেশাদারিত্বহীনতার কারণেই, পুলিশের মতো করে অপরাধীরা ডাকাতি করে, ইচ্ছেমত মানুষকে ধরে নিয়ে যায়। আর, দেশের নাগরিকরা বুঝতে পারে না, কে পুলিশ আর কে অপরাধী।

তাই, পুলিশের উচিত সাদা পোশাকে অপারেশনসহ ইচ্ছেমত অপারেশনের নামে মানুষকে হেনস্ত করা, হামলা করাসহ অন্যান্য পেশাদারিত্ববহির্ভূত কার্যক্রম থেকে দূরে সরে আসা। নতুনদিন

মন্তব্য করুন


 

Link copied