আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা      

 width=
 

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুগর্ভে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে

মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০১৪, দুপুর ১২:২৬

কৃষক সামশুল হক জানান, গত বছর জমির আইলে ৫ শতাধিক ইউক্যালিপ্টাস রোপন করেছি। তারপর থেকে ক্ষেতে আর পানি থাকে না। গত বারের থেকে দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

আর এক কৃষক নিতাই চন্দ্র বলেন, এই গাছ কম সময়ে অনেক বড় হয়। তাই বাড়ির আশে পাশে কয়েক শতাধিক গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু পুকুর ও টিউবয়েলের পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর আব্দুল গাফফার বলেন, ইউক্যালিপ্টাস গাছ আশেপাশে প্রায় ৫০ ফুট এলাকার পানি শোষন করে এবং আকাশে উঠিয়ে দেয়। এই গাছ রাত দিন ২৪ ঘন্টা পানি শোষন এবং বাতাসে ছেড়ে দেয়। জমির আইল, কৃষি জমি ও পতিত জমিতে এই গাছ লাগানোর কোন মানে নেই। বরং ক্ষতিকর। এই গাছের আশেপাশে কোন গাছ জন্মাতে পারে না।

ইউক্যালিপ্টাস গাছ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামিয়ে দেয়। যা পানির সামান্য উৎসকে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। ইউক্যালিপ্টাস গাছের শ্বসনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড তাপের মাত্রা বেশী। যার ফলে এই গাছে নিচে অন্য কোন গাছ জন্মায় না। এই গাছে কোন পাখি বাসা বাধে না। পানির স্তর কমানোর কারণে ইউক্যালিপ্টাস জমি উর্বরতার শক্তি নষ্ট করছে। ইউক্যালিপ্টাস গাছের ফলের রেনু নিঃশ্বাসের সাথে দেহে প্রবেশ করলে এ্যাজমা হয়। ইউক্যালিপ্টাস গাছের পাতা মাটির জন্য ক্ষতিকর। মাটিতে পাতা পড়ার পর পচনেও অপেক্ষাকৃত বেশী সময় লাগে, যা মাটি ভেদ করে পানির ভূগর্ভে যেতে বাঁধার সৃষ্টি করে। এটি খুব দ্রুত বাড়ে ও অন্য গাছের চেয়ে বেশী খাবার খায়।

তিনি আরো বলেন, ইউক্যালিপ্টাস গাছ মাটি শুকিয়ে ফেলে এবং জমির উবর্রতা কমিয়ে দেন। ইউক্যালিপ্টাস গাছ অতি দ্রুত বর্ধনশীল বিদেশী প্রজাতীর বৃক্ষ। এটি মাটির ৫০ ফুট নিজ পর্যন্ত পানি শোষন করে বাতাসে ছেড়ে দেয়। যেখানে মাটিতে পানির শুন্যতার সৃষ্টি করে। ইউক্যালিপ্টাস গাছের শিকড় এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে এই গাছের পাশে ধান গাছ থেকে শুরু করে অন্য কোন প্রজাতির টিকতে পারে না। এই গাছের গুনাগুণ ভাল হয় না। এটি মাটির গুণাগুণ এবং উবর্রতা নষ্ট করে। মাটি শুকিয়ে চুনামাটি হয়ে যায়।

ইউক্যালিপ্টাস গাছ কেটে ফেলে মাটির উবর্রতা ফিরে আসতে দীর্ঘ সময় লাগে। ইউক্যালিপ্টাস বেশী পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করার কারণে অধিক পরিমাণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিগর্মন করে। কৃষি জমি ও বাড়ির আঙ্গিনায় ইউক্যালিপ্টাস গাছ বর্জন করা উচিত। কৃষি জমি রক্ষা করতে হলে ইউক্যালিপ্টাস গাছ বর্জন করতে হবে এবং এর পরির্বতে অধিক পরিমাণে ফলদ ও বনজ বৃক্ষ রোপন করা উচিত।

অভিযোগ রয়েছে, কিছু নার্সারী চাষী ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ গ্রামাঞ্চলে এগুলো বিক্রি করছে। দেখতে খুবেই সতেজ এই চারাগুলো। কৃষকরা কেনা বেচা শেষে বাড়ি ফেরার পথে এই গাছের চারা নিয়ে জমির আইলে ও কৃষি ক্ষেতের পাশে এবং পতিত জমিতে রোপন করছেন।

শিক্ষাবিদ প্রফেসর মনতোষ কুমার দে জানান, কৃষি জমি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য পানির খেকো গাছের চারা উৎপাদন ও লাগানো বন্ধে সরকারী ভাগে উদ্যোগ নিয়ে রোপন বন্ধে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ফলদ ও ঔষুধি গাছ রোপনের পাশাপাশি ইউক্যালিপ্টাস গাছের ক্ষতির দিক গুলো চাষিসহ আপামর জনগণকে জানাতে হবে। অন্যথায় অদূর ভবিষ্যতে পরিবেশের ভারসাম্য উপর প্রাণ ঘাতী আঘাত আনবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কমল কুমার সরকার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য বহন করে যে বন, সেখানে ইউক্যালিপ্টাসের মতো বিদেশি প্রজাতির গাছ রোপণের ভাবনাটাই সম্পূর্ণরূপে অনৈতিক। এটি ম্যানগ্রোভের পরিবেশের সঙ্গে বৈরী স্বভাব প্রদর্শন করে। ইউক্যালিপ্টাস অন্যান্য গাছে চেয়ে বেশি খাবার খায় ও অক্সিজেন শোষণ করে এবং কার্বন-ডাই অক্সইড ত্যাগ করে, পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় কোনো পাখিও বাসা বাঁধে না। ইউক্যালিপ্টাস গাছ তিকর, এটি বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত কমিয়ে ফেলছে। ইতোমধ্যে কৃষি ও বন বিভাগ যৌথ ভাবে কৃষক যেন ইউক্যালিপ্টাস গাছ রোপন রোধ করে সেজন্য প্রচারণা উদ্যোগ নিয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied