আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

নীলার অন্ধকার জগতের অজানা কাহিনী

শুক্রবার, ৩০ মে ২০১৪, দুপুর ১০:৫৫

সিদ্ধিরগঞ্জের জুয়েল হত্যা মামলায় সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর নেয়া হয় রিমান্ডে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে অজানা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তিন দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার নীলাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, জনপ্রতিনিধি পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে নীলার সখ্যতা ছিল। তবে তিনি মূলত খালার হাত ধরেই মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। তার খালার নাম পিয়ারী বেগম। তিনি নরসিংদীর কাউয়ারী পাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাজ্ঞী। এছাড়া নব্বইর দশকে শহরের টানবাজারে উচ্ছেদকৃত পতিতা পল্লীতে নীলার বাবা আব্দুল মোতালেবের মদের দোকান ছিল। তিনি এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নীলা আব্দুল মোতালেবের  দ্বিতীয় ঘরের সন্তান। ১৯৯৮ সালে টানবাজার পতিতা পল্লী উচ্ছেদ করা হয়। ওই সময় মোতালেব আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ পান নীলার বাবা আব্দুল মোতালেব। এছাড়া নীলা নিজেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। মোতালেব একাধিক বিয়ে করেছেন বলেও লোকের মুখে শোনা গেছে

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার আগে নীলার সম্পর্কে কারোরই তেমন কোনো বিরূপ ধারণা ছিল না। তবে ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিক নির্বাচনের পর ‘চাচা’ সম্বোধনকারী নূর হোসেনের সঙ্গে নীলার সখ্যতা বাড়ে। এর মাধ্যমেই নীলার অপরাধ জগতে প্রবেশ। নূর হোসেনের দেয়া আলিশান বাড়ি ও ৩৫ লাখ টাকা দামের গাড়ি উপহার পেয়ে বদলে যায় নীলা। জনপ্রতিনিধি পরিচয়ে বিভিন্ন মহল দাবড়ে বেড়াতে গিয়ে সে জড়িয়ে পড়ে অপরাধ জগতে। বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়া নীলা। মাত্র আড়াই বছরে গড়ে তোলেন অঢেল সম্পদ

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আগের স্বামী সাদেক বাসস্ট্যান্ডের ইজারাদার ছিলেন। কিন্তু তার তেমন প্রাচুর্য ছিল না। তবে বাবা কিংবা প্রাক্তন স্বামী না পারলেও নীলা মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে গড়েছেন অঢেল সম্পদ। নীলার খালা পিয়ারী বেগম নরসিংদীর কাউয়ারী পাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাজ্ঞী। কাউয়ারীপাড়া মাদক অধ্যুষিত এলাকা।

পিয়ারীর বিরুদ্ধে অন্তত ১০/১৫টি মাদকের মামলা রয়েছে বলে নরসিংদীর পুলিশ প্রশাসন নিশ্চিত করেছে। সম্প্রতি পিয়ারী বেগমকে ৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। বর্তমানে পিয়ারী বেগম জেলহাজতে। ওই পিয়ারী বেগমের নিয়মিত যাতায়াত ছিল নীলার বাড়িতে। তার মাধ্যমেই নীলা মাদকের চালান আনতেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নূর হোসেনের বান্ধবী আলোচিত নারী কাউন্সিলর জান্নাতুল nilaফেরদৌস নীলার নির্দেশে এক লাখ টাকা চুক্তিতে খুন করা হয়েছিল নীলার মাদক ব্যবসার সহযোগী জুয়েলকে। ৭০ লাখ টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জের ধরেই নীলার নির্দেশে জুয়েলকে খুন করে কিলার মনা, সোহাগ ও সোহেল।

গত ২৯ এপ্রিল নীলার বিরুদ্ধে কিলার মনা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বদলি করেছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

বিলাসী জীবন যাপনকারী নীলা হাজত ঘরের মেঝেতে চিত হয়ে পড়ে থাকেন। যখন তখন প্রলাপ বকতে থাকেন। পুলিশকে অভিশাপও দেন। উচ্চস্বরে বলতে থাকেন তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৩ দিনের রিমান্ড শেষে নীলাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট যাবিদ হোসেনের আদালত।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, নীলাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জুয়েলকে হত্যা করার সময় নীলা নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তার মামাতো ভাই শাহআলমও উপস্থিত ছিলেন। শুধু জুয়েল হত্যাকান্ডেই নয় আলোচিত সাত খুনের ঘটনার মামলার মূল আসামি নূর হোসেন সম্পর্কেও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার কাছে দেশের বাইরে থেকে যে কল এসেছিল সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মুনসুর আলী আরিফ জানান, ‘ডেয়ারিং মহিলা’ নীলা সুকৌশলে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সে এসব টেকনিক ভাল জানে। টকশো এর বক্তাদের মতো সে অনর্গল কথা বলতে থাকে।

আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া কিলার মনার সঙ্গে নীলার মুখোমুখি করানো হতে পারে বলে তিনি জানান। এছাড়া নীলার পরিবারের অপর কেউ মাদক ব্যবসায় জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের আজিবপুর এলাকায় খুন হন জুয়েল।

ওই ঘটনায় পুলিশ সোহাগ ও মনা নামের দুই জনকে আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে নীলার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া যায় বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান।

মন্তব্য করুন


 

Link copied