আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

২ মাস ধরে হিমঘরে তরুণীর মরদেহ

বুধবার, ১১ জুন ২০১৪, রাত ১০:২২

একপক্ষ বলছে, ওই প্রেমিকার নাম লিপা রানী রায়। অন্যপক্ষের দাবি, হোসনে আরা বেগম। নামের এই জটিলতা নিরসনে বিষয়টি আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তা নিষ্পত্তি হয়নি।

এ ব্যাপারে ডোমার থানার এসআই শাহীনুর রহমান জানান, ওই তরুণীর মৃতদেহের দাবিদার হয়ে আদালতে দুটি রিট মামলা হয়েছে। এখনও মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। তাই আদালতের নির্দেশে তরুণীর মৃতদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

লিপার বাবা অক্ষয় কুমার রায় জানান, ১০ মার্চ দুপুরে তার মেয়ে সবার অগোচরে কীটনাশক পান করে। এ সময় তাকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে মারা যায় তার মেয়ে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর মৃতদেহ ইসলাম ধর্মের নিয়মে দাফন করার দাবি তুলে মঙ্গলবার সকালে নিলফামারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ডোমার) আদালতে রিট করেন তার শ্বশুর হিসেবে দাবিদার জহুরুল ইসলাম।

 এ ব্যাপারে জহুরুল ইসলাম জানান, তিনি তার পুত্রবধূর মৃতদেহ ইসলাম ধর্মের নিয়মে দাফনের অনুমতি চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন।

অপরদিকে হিন্দু ধর্মের নিয়মে ওই তরুণীর মৃতদেহ দাহ করার অনুমতি চেয়ে একই আদালতে পাল্টা রিট করেন তার বাবা অক্ষয় কুমার রায়।

এ ব্যাপারে অক্ষয় কুমার রায় জানান, মারা যাওয়ার পর একটি পক্ষ তার মেয়েটি ইসলাম ধর্মের দাবি করে আদালতে রিট করলে তিনিও পাল্টা রিট করতে বাধ্য হন।

তিনি দাবি করেন, একটি মহল এ ঘটনাটিকে পুঁজি করে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলা দুটি নিষ্পত্তির জন্য নথি অগ্রগামী করে দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামলার রিট দুটি পুনরায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠান। সেখানে বলা হয়, অধিকার প্রশ্নে রিটকারীরা দেওয়ানি মামলার আশ্রয় নিতে পারে।

এদিকে ৪ মে জজকোর্ট ওই তরুণীর শ্বশুর দাবিদার জহুরুল ইসলামকে মৃতদেহ হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়।

লিপার বাবা নীলফামারী দায়রা জজ আদালতে আপিল করলে দায়রা জজ যুগ্ম-দায়রা জজ আদালতে মামলাটি পাঠিয়ে দেন। মামলার শুনানি ২৮ মে ধার্য করা হয়। কিন্তু লিপার বাবা সময় প্রার্থনা করলে আদালত ১০ জুন মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করে। মঙ্গলবার লিপার বাবা আবার সময় প্রার্থনা করলে আদালত ১৬ জুলাই মামলার তারিখ ধার্য করে।

এলাকাবাসী জানান, ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের খামার বমুনিয়া গ্রামের অক্ষয় কুমার রায়ের মেয়ে লিপা রানী রায়। একই উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব বোড়াগাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে হুমাউন ফরিদ লাইজু ইসলাম (২২)। একপর্যায়ে লিপি ও লাইজুর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

জহুরুল ইসলাম জানান, প্রেমের সম্পর্কের জেরে গেল বছরের ২৫ অক্টোবর তার ছেলে লাইজুর সঙ্গে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অক্ষয় কুমারের মেয়ে লিপা রানী রায়ের বিয়ে হয়। এ সময় নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে লিপা রানী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এফিডেভিট করে তার নাম রাখা হয় হোসনে আরা ইসলাম। বিয়ের দেনমোহর করা হয় ২ লাখ ১ হাজার ৫০১ টাকা। এর পর তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিল।

তিনি জানান, এ ঘটনার পর মেয়ের বাবা বাদী হয়ে নীলফামারী আদালতে অপহরণ মামলা করেন। এ সময় তাদের (লাইজু-লিপা) স্বামী-স্ত্রীর সকল কাগজপত্র দাখিল করা হয় এবং তারা আদালতে হাজির হয়ে জবানবন্দি প্রদান করে। ফলে আদালত অপহরণ মামলা খারিজ করে দেয়। কিন্তু মামলা খারিজ আপিলে লিপার বাবা তার মেয়েকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও মস্তিস্ক বিকৃতি (পাগল) দাবি করে আদালতে কাগজপত্র দাখিল করেন। এ সময় আদালত সেটি পরীক্ষার জন্য লিপাকে রাজশাহী সেফহোমে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।

মামলা চলাকালে তার ছেলে ১৫ জানুয়ারি বিষপানে আত্মহত্যা করে।

জহুরুল ইসলাম জানান, এর পর পুত্রবধূর আবেদনে আদালত তার নিজ জিম্মায় জামিন দেন। কিন্তু তার পুত্রবধূকে আদালত চত্বর থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে তার বাবা বাড়িতে আটকে রাখেন। সেখানে তার বৌমা বিষপানে আত্মহত্যা করে।

এ ব্যাপারে ডোমার থানার ওসি (তদন্ত) আইউব আলী জানান, ১০ মার্চ লিপা রানী আত্মহত্যার পর তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ১১ মার্চ মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মামলা নং ৭।

এ ব্যাপারে লিপার বাবা অক্ষয় কুমার রায় জানান, তার মেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনি। ছেলেপক্ষের সব কাগজপত্র ভুয়া। আদালতে এ ঘটনার মামলায় তার মেয়ে নিজেকে লিপা রানী রায় পরিচয় নিয়ে জবানবন্দি দিয়েছিল।

মন্তব্য করুন


 

Link copied