আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসিডদগ্ধ শিক্ষক বনাম উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাব

বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারী ২০১৩, রাত ১০:৪৩

সজিব তৌহিদ।। ২০০৮ সালে ১২ অক্টোবর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ভিসি অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের নেতৃতে ভালোই চলছিল ক্যাম্পাসটি। উত্তরবঙ্গের শির্ক্ষাথী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা নতুনরূপে  পেয়েছিল শিক্ষার পরিবেশ। তারপর বর্তমান সরকারের ইচ্ছায় হোক আর ব্যক্তির যোগ্যতায় হোক ভিসি পদে নিয়োগ পান বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুল জলিল মিয়া। যার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। বলা হয়ে থাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এলাকা প্রীতির কারণেই জলিল মিয়া নিয়োগ পেয়েছেন। যাহোক, প্রশ্ন সেখানে না । প্রশ্ন হচ্ছে কেন তিনি স্বজন প্রীতি, এলাকা প্রীতি, দুর্নীতির অরাজকাতা তৈরি করে দুজন শিক্ষককে এসিডদগ্ধ করালেন..? ইতোমধ্যেই আপনারা অনেকেই জেনে গেছেন গেল ৬ দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভিসি অপসারণের দাবিতে শিক্ষক ও সাধারণ শির্ক্ষাথীরা আন্দোলন করে আসছিলেন। গত বৃহ:স্পতিবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর ভিসি পক্ষের ছাত্রলীগ ও দুর্বৃত্তরা হামলা করে এক পর্যায়ে মাইক ও ব্যাটারি ছুড়ে ফেলে দেয়। ছাত্রলীগ ও দুর্বৃত্ত সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া হামলায় ছুড়ে ফেলা ব্যাটারির নিক্ষিপ্ত এসিডে ঝলসে যায় আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক মতিউর রহমানের শরীর ও কপাল। এ সময় বেশ কিছু শিক্ষক ও শির্ক্ষাথীরও শরীর এসিডদগ্ধ হয়। যারা এখন হাসপাতালে বিদগ্ধ যন্ত্রনায় ছটপট করছেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ছুটাছুটি করতে গিয়ে আহত হন প্রায় ১০ জন। এই নৃশংস ঘটনার জন্য মাননীয় ভিসি কি দায় এড়াতে পারেন..? এই হলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, এই হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও সংস্কৃতি। অবশ্য তুলনামূলকভাবে বেরোবি অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। যেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চার তালা থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে শিক্ষার্থীদের হ্যাতা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রগকাটাসহ শিক্ষক ড. তাহের কে হত্যা করা হয়। সেই তুলনায় বেরোবির ঘটনা শিশুতোষ মাত্র। কিন্তু বাংলাদেশে প্রথম তো বটেই সম্ভবত বিশ্বেও এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের এসিডদগ্ধের ঘটনা। আমরা অবাক নির্বাক কিছু হবো না। সাহস হারাবো না। নতুনরূপে প্রতিবাদ করব ব্লগে, ফেসবুক, টুইটারে। মাঠে নামবো না । কারণ মাঠে নামার সাহস আমাদের নেই। নতুন করে বলতে চাই না ;“ শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতির বিবেক, মানুষ গড়ার কারিগর। ” এই গরিগরদের যেভাবে বিদগ্ধ লাঞ্চিত-বঞ্চিত, ধরপাকর করা হচ্ছে তা নিশ্চয়ই ছাত্রসন্ত্রাসীরে আনন্দের সংবাদ হলেও জাতীয়ভাবে তা লজ্জাজনক ও নিগৃহিত কাজ। সেই সঙ্গে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী নিজের এলাকার অযোগ্য মানুষদের অবাধে চাকরিদানকারী এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের উপাচার্যের অশনি সংকেত বটে। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও শিক্ষদের যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে ক্ষমতার দাপটে ভিসির আসনে আসীন থাকা বিশাল লজ্জা আর সাহসের কাজ। আমাদের সেই লজ্জা আর সাহসের তারিফ করা দরকার। বেরোবি তে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার হস্তক্ষেপ জরুরি দরকার। আপনি সময় থাকতে দয়া করে সেটি করুন। নতুবা আজ তুহিন ওয়াদুদ, মতিউর। আগামীকাল যে, নতুন কেউ এসিড কিংবা অন্য কোন সহিংসতার শিকার হবে না তার কী গ্যারান্টি..? তাই বাউল লালনের কথা ভুলে গেলে ভুল হয়, তার খেসারত তিলে তিলে দিতে হয়... ‘সময় গেলে সাধন হবে না।’ লেখক: ব্লগার ও সাংবাদিক।

মন্তব্য করুন


 

Link copied