ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৭ জুন॥মঙ্গলবার সৈয়দপুরে কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন কর্মসূচি করেছেন। তুচ্ছ ঘটনায় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি’র অভিভাবক সদস্য কর্তৃক এক সিনিয়র শিক্ষককে প্রকাশে কামারপুকুর বাজারে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে এবং ওই অভিভাবক সদস্যের সদস্য পদ বাতিলের দাবিতে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চলতি ষান্মাষিক পরীক্ষার গতকালের পরীক্ষা বর্জন করেন। ফলে গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
বেলা ১১ টায় কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সৈয়দপুর - রংপুর মহাসড়কে ওই মানববন্ধন করা হয়। এতে ওই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকরা অংশ নেন। এ মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকরা শিক্ষক প্রতীম চন্দ্র দাসকে লাঞ্ছিতকারী অভিভাবক সদস্য আতিউর রহমানের সদস্য পদ বাতিলের দাবি করেন। সেই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে ওই অভিভাবক সদস্যের বিচারের দাবি জানান। অন্যথায় আগামীতে তারা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলার কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বোডের্র নাম রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। গত ১৫ জুন ওই বিদ্যালয়ের নাম রেজিস্ট্রেশন উপ-কমিটির সদস্য ও বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রতীম চন্দ্র দাস শ্রেণীতে শ্রেণীতে গিয়ে বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন ফি জমা করার জন্য শিক্ষার্থীদের বলেন। এ সময় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আতিউর রহমানের মেয়ে কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মানবিক শাখার ছাত্রী আজমিরা আক্তারকে একই কথা বলেন ওই শিক্ষক। আর এতেই অভিভাবক সদস্য আতিউর রহমান ওই শিক্ষককের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। ঘটনার দিন গত সোমবার বেলা ১টার দিকে শিক্ষক প্রতীম চন্দ্র দাস টিফিনের সময়ে বিদ্যালয়ের পাশের কামারপুকুর বাজারে চা-নাস্তা খেতে যান। এ সময় বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আতিউর রহমান শিক্ষক প্রতীম চন্দ্র দাসকে সামনে পেয়ে শ্রেণী কক্ষে কেন তাঁর মেয়ের কাছে বোডর্র ফিয়ের টাকা চাওয়া হয়েছে তার কৈফিয়ৎ চান। এ সময় তাদের মধ্যে কথাবার্তার এক পর্যায়ে অভিভাবক সদস্য আতিউর রহমান বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক প্রতীম চন্দ্র দাসকে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এ ঘটনায় তারা তাৎক্ষণিকভাবে বৈঠকে বসে শিক্ষককে লাঞ্ছিতকারী অভিভাবক সদস্যের সদস্য পদ বাতিল ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মঙ্গলবারের সকল ষান্মাষিক পরীক্ষা বর্জন এবং মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী,শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায় মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষার্থীরা বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শিক্ষক-শিক্ষকা ও সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীনের ০১৭১৬-১৭৭২৩৩ নম্বর মুঠোফোনে কয়েক দফা কল করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাছিমা খাতুন জানান,তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষকের মধ্যে কিছুটা ভূল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ওই দিন বিকেলেই আমরা সকলেই বসে ঘটনাটি মীমাংসা করে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা মানববন্ধন করবেন বিষয়টি আমার জানা ছিল না।