আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরে ট্রাক্টর চাপায় পিষ্ট হয়ে ৪ বছরের শিশু নিহত       রংপুর বিভাগ থেকে ২০ বছরে ২ লাখ ২৭ হাজার কর্মী বিদেশ গেছেন       দিনাজপুরে ছিনতাইকৃত মালামাল উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার        জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার      

 width=
 

কমিটি সাজাচ্ছেন বাবলু: রওশন মাইনাস, এরশাদ চাপে

শুক্রবার, ২০ জুন ২০১৪, দুপুর ১০:১২

অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদকে পার্টি থেকে মাইনাস ও দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বাগে রাখার জন্য এ কাজ করছেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম, বিভিন্ন মহানগর ও জেলার নেতারা এ অভিযোগ করেছেন।

জাপা নেতাদের অভিযোগ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে জাপার মহাসচিব হয়েছেন। তিনি ঘরে বসেই নিজের কম্পিউটারে মনমতো বিভিন্ন জেলার কমিটি ভাঙছেন আবার নতুন কমিটি ঘোষণা করছেন। এ সব কমিটি আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য কাউন্সিলকে সামনে রেখে নিজ বলয়ের কাউন্সিলর তৈরি করতেই করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়মান শেঠ বলেন, ‘নতুন মহাসচিবের সারাদেশে কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। চট্টগ্রাম তার নিজের এলাকা হওয়া সত্বেও চট্টগ্রামবাসী ও জাপার নেতারা বাবলুকে মহাসচিব হিসেবে সাধুবাদ জানায়নি। তাই তিনি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি বাতিল করে নিজের মতো অচেনা, অজানা লোকদের দিয়ে নতুন কমিটি করেছেন।’

সোলায়মান শেঠ বলেন, ‘আমি বাবলুর পার্টি করি না। আমি সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু এরশাদের পার্টি করি। চট্টগ্রাম মহানগরে জাপার কোন অফিস ছিল না। আমি অফিস বানিয়েছি। কিন্তু বাবলু স্যার (এরশাদ) ও ম্যাডামের (রওশন) অগোচরে নতুন কমিটি করে জাপাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন।’

জাপা নেতাদের অভিযোগ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার ২ মাসের মাথায় বিভিন্ন জেলায় অচেনা, অজানা, অর্বাচীন লোকদের দিয়ে কমিটি করছেন। সম্প্রতি বাবলু নোয়াখালী জেলার সভাপতি এস এ গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন আজাদ, বরিশাল মহানগর কমিটির সভাপতি মীর জসিম, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, বরিশাল জেলার সভাপতি অধ্যাপক মুহসীনুল ইসলাম হাবুল, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান শেঠ, সাধারণ সম্পাদক তপন চক্রবর্তী, খুলনা মহানগর সভাপতি গাফফার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবুর রহমানের কমিটি এরশাদকে দিয়ে মহাসচিব নিয়োগের আগেই বাতিল করান, ঝালকাঠি জেলার কমিটি বাতিল করে নতুন করে জেলার সাবেক পিপি এ্যাডভোকেট ইউনূস আলীকে আহ্বায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়।

তবে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার দাবি, সারাদেশে নয়টি জেলা কমিটি ভাঙ্গা হয়নি। কমিটি ভাঙ্গা হয়েছে চারটি। বাকিগুলোতে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করা হয়েছে।

জানা গেছে, অনেক জাপা নেতা অপমান সহ্য করতে না পেরে বিএনপিতে চলে যাচ্ছেন। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও জেলা জাপা সভাপতি নম্র চৌধুরী বিএনপিতে চলে গেছেন।

জাপা নেতাদের অভিযোগ, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। পট পরিবর্তনের সময় জাপার ভূমিকা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় রয়েছে সরকার। এ জন্য রওশনের অজ্ঞাতসারে ও এরশাদকে বলির পাঠা বানাতেই ডিসেম্বরের কাউন্সিলকে সামনে রেখে এ সব কমিটি করা হচ্ছে।

নেতাদের অভিযোগ, রওশন এরশাদ যাতে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি বা এরশাদ যাতে আর ইউটার্ন নিতে না পারে এ জন্যই জেলাগুলোতে নিজের বিশ্বস্ত ও অনুগত লোকদের দিয়ে সাজাচ্ছেন বাবলু। আর এ সব কাজে বাবলুকে সহায়তা করছেন জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। রেজাউল ইসলামকে অতিরিক্ত মহাসচিব করা হবে এমন আশ্বাস বাবলু দিয়েছে বলেও জাপায় প্রচারণা রয়েছে।

সূত্র মতে, এ মাসেই জাপার দিনাজপুর, যশোর জেলা কমিটিও বাবলু ভেঙ্গে দিতে যাচ্ছেন। আর রাজশাহী মহানগর ও জেলার কমিটি করতে বাবলু রাজশাহী যাচ্ছেন ২১ জুন।

এ বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বাবলু সাহেব কোন জেলা কমিটি ভাঙ্গা বা গঠনে ম্যাডামের কোন মতামত নেননি।’

রওশন এরশাদের সঙ্গে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর সম্পর্কের বিষয়ে গোলাম মসীহ বলেন, ‘পার্টির মহাসচিব হিসেবে যতটুকু সম্পর্ক থাকা দরকার ম্যাডামের সঙ্গে বাবলু সাহেবের ঠিক ততটুকু সম্পর্কই রয়েছে।’

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, জেলা নেতারা কে কি বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে পার্টি পুনর্গঠন করতে বলেছেন, আমি তাই করছি।

অভিযোগের বিষয়ে যুব সংহতির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি পার্টির যুগ্ম মহাসচিব। আমার কাজই মহাসচিবকে সহযোগিতা করা। আমি আরও বেশি করে সহযোগিতা করবো। ’

তিনি বলেন, ‘যখন যে মহাসচিব ছিল আমি সহযোগিতা করেছি। আবারও যদি পার্টির চেয়ারম্যান নতুন মহাসচিব নিয়োগ দেন উনাকেও সহযোগিতা করবো।’

প্রসঙ্গত, ১০ এপ্রিল জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট

মন্তব্য করুন


 

Link copied