‘তিস্তা নিয়ে মমতাকে বোঝান, আর্জি হাসিনার’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আনন্দবাজার জানায়, বৃহস্পতিবার সুষমা স্বরাজের সঙ্গে এক অন্তরঙ্গ বৈঠকে এই আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সাদর অভ্যর্থনা জানান হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠিটি হাসিনার হাতে তুলে দেন সুষমা। এই চিঠিতে হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মোদি। চিঠি পড়ার পর হাসিনা বলেন, তিনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিল্লি সফরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
বৈঠকে সুষমা বলেন, উত্তর-পূর্বের জঙ্গি সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ভারতকে যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ, এই আমলেও তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। হাসিনা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকটে বাংলাদেশের চাষাবাদ ভীষণভাবে মার খাচ্ছে। এই জন্যই বাংলাদেশের মানুষ তিস্তা চুক্তিটির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। জবাবে সুষমা বলেন, তিস্তা ও স্থলসীমা চুক্তি নিয়ে ঐকমত্য তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে নতুন সরকার। এ জন্য একটু সময় চান তাঁরা।
মুখোমুখি আলোচনার পরে সুষমা বিদায় চাইলে হাত ধরে তাঁকে বাইরে নিয়ে আসেন হাসিনা। আলিঙ্গন করে বলেন, ‘জানি আপনারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। তবু বলব, মমতাকে একটু বোঝান। তিনি যেন আপত্তি তুলে নেন।’ হেসে ঘাড় নাড়েন সুষমা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে প্রথমে প্রতিনিধি পর্যায়ের ও পরে মুখোমুখি বৈঠকে বসেন সুষমা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান বৈঠকের পরে জানান, দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক ও আদানপ্রদান আরও সহজ করার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছে। এ জন্য ভিসানীতি সহজ করার ঘোষণা করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন থেকে ৬৫ বছরের বেশি ও ১৩ বছরের কম বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকদের সহজেই মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দেবে ভারত। বাংলাদেশও তাদের ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য ত্রিপুরায় পাঠানোর ছাড়পত্র দিচ্ছে ভারতকে।
আলী বলেন, বাংলাদেশে সাত খুনের আসামি কলকাতায় ধরা পড়া নুর হোসেনকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন সুষমা। সীমান্তে পাহারা আরও জোরদার করা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা বন্ধেও সহমত হয়েছে দুই দেশ। তবে ভারত থেকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরানো নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি।